ভারতের ত্রিপুরার সাবরুম থেকে পুশ ইন করার পর রামগড় সীমান্তবর্তী নো-মেনস ল্যান্ডে আটকেপড়া এক নারীকে ১০দিনেও ফেরত নেয়নি বিএসএফ।
তাকে ফেরত পাঠাতে বিজিবি-বিএসএফের সেক্টর ও ব্যাটালিয়ন কমান্ডার পর্যায়ে কয়েক দফা পতাকা বৈঠক হলেও নাগরিকত্বের বিষয়টি নিশ্চিত না হওয়ায় ভারতীয় কর্তৃপক্ষ ওই নারীকে গ্রহণ করতে অস্বীকৃতি জানান।
ওই নারী দশদিন ধরে অর্ধাহারে-অনাহারে সীমান্তের ফেনীর নদীর রামগড়ের শূন্যরেখার বালু চরে মুক্তির প্রহর গুণছেন।
জানা গেছে, সর্বশেষ ৭ এপ্রিল বিজিবি ও ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বিএসএফের মধ্যে সেক্টর কমান্ডার পর্যায়ে অনুষ্ঠিত পতাকা বৈঠকেও ঐকমত্যে পৌঁছানো যায়নি। খাগড়াছড়ির গুইমারা বিজিবি সেক্টর কমান্ডার কর্নেল জিএইচএম সেলিম হাসান ও বিএসএফের উদয়পুর ডিআইজি জামিল আহমেদ নিজ নিজ দেশের পক্ষে নেতৃত্ব দেন।
এসময় তাঁদের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন বিজিবি অধিনায়ক লে. কর্নেল তারিকুল হাকিম ও সাবরুম বিএসএফ কমান্ডার রাজীব কুমার সিং।
উভয় পক্ষই তার নাগরিকত্বের বিষয়ে বাংলাদেশ বলছেন ভারতীয় অন্যদিকে ভারতীয়দের দাবি সে বাংলাদেশী।
বিজিবি কমান্ডার লে. কর্নেল তারিকুল হাকিম জয়নিউজকে জানান, ২ এপ্রিল থেকে ওই নারীকে বাংলাদেশ-ভারতের সীমান্তবর্তী ফেনী নদীর নো-মেনস ল্যান্ডে দেখা যায়। মহামারি করোনায় উভয় দেশের সীমান্তরক্ষীরা ভয়ের মধ্যে আছেন। এরই প্রেক্ষাপটে ওই নারী বাংলাদেশে প্রবেশ করতে চাইলে বিজিবি সদস্যরা তাকে বাধা দেয়।
অন্যদিকে, ভারতে প্রবেশে বাধা দিচ্ছে বিএসএফ। বিএসএফের দাবি তিনি বাংলাদেশী। কিন্তু বাংলাদেশী কি-না বিষয়টি নিশ্চিত না হওয়ায় তাকে বাংলাদেশের ভেতরে প্রবেশে বাধা দেওয়া হচ্ছে বলে জানান রামগড় বিজিবি।
এদিকে স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শী মো. আবদুল মান্নান ও হারাধন দে জয়নিউজকে বলেন, বিএসএফ ও সাবরুমের স্থানীয় কতিপয় যুবক ওই নারীকে বাংলাদেশে পুশ ইন করে। সে সম্ভবত পাগল (মানসিক ভারসাম্যহীন)। পুশ ইন করা ওই নারী নিজের নাম ঠিকানা কোনো কিছুই বলতে পারছে না। তাই নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে না সে কী বাংলাদেশী না ভারতীয়? ওই নারী বর্তমানে ফেনী নদীর রামগড় বরাবর বালু চরে অবস্থান করছে।
সরেজমিন শনিবার (১১ এপ্রিল) দুপুর তিনটায় বালুচরে তাকে অবস্থান করতে দেখা যায়। স্থানীয়রা তাকে পানি ও খাবার দিয়ে প্রাণে বাঁচিয়ে রেখেছেন।
রামগড় উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বিশ্বপ্রদীপ কুমার কারবারি জয়নিউজকে বলেন, বিষয়টি যেহেতু দ্বিপাক্ষিক তাই উভয় পক্ষের ঐকমত্যে আসা জরুরি। মানবিক কারণেই বিষয়টি দ্রুত সমাধান হওয়া দরকার।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আ হ ম বদরুদ্দোজা জয়নিউজকে বলেন, সীমান্ত এলাকার যেকোন ঘটনা বিজিবি দেখভাল করেন।
বিজিবি অধিনায়ক লে. কর্নেল তারিকুল হাকিম বলেন, ইতোমধ্যে অনুষ্ঠিত পতাকা বৈঠকে পুশ ইন করা নারীর প্রসঙ্গ উঠে আসলে নাম-ঠিকানা বলতে না পারায় বিএসএফ তাকে গ্রহণ করতে অস্বীকৃতি জানান।
উল্লেখ্য, বিজিবি ও বিএসএফ উভয় পক্ষই ওই নারীর বিষয়ে জানতে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছেন।