‘শ্যাওড়া’। ছোট আকারের চিরসবুজ একটি গাছ। চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষায় এ গাছটি ‘খসখইস্যা বা অর্বা গাছ’ নামে পরিচিত।
তবে দুঃখজনক হলেও সত্য যে, এ গাছের বিচি নাকি ভিজিয়ে পানি পান করলে করোনা থেকে মুক্তি মিলবে। হঠাৎ এমন গুজব সর্বত্র ছড়িয়ে পড়লে বৈশ্বিক প্রাণঘাতী মহামারি করোনাভাইরাসের ওষুধ কুড়ানোর হিড়িক পড়ে হাটহাজারীর বিভিন্ন ইউনিয়নের প্রত্যন্ত অঞ্চলে।
মঙ্গলবার (১৪ এপ্রিল) দিবাগত রাতে ‘স্বপ্নেপ্রাপ্ত’ এমনটা দাবি করে উপজেলার বিভিন্ন স্থান থেকে খবর আসে লোকজন বিচি কুড়িয়েছেন এবং অনেকে বিচি ভিজিয়ে পানি পান করার ঘটনাও ঘটেছে বলে জানা গেছে।
তবে স্বাস্থ্য কর্মকর্তা জয়নিউজকে বলেন, এসব গুজব ছাড়া আর কিছুই না। এ ফলের পানি খেয়ে উল্টো অসুস্থও হয়ে যেতে পারেন কেউ।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, মঙ্গলবার রাতে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় হঠাৎ গুজব ছড়িয়ে পড়ে একধরনের গাছের ফল (বিচি) পাওয়া যাচ্ছে, যা খেলেই করোনাভাইরাস থেকে মুক্তি মিলবে। এ খবরের পর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় গুজবের ডালপালা ছড়াতে থাকে এবং অনেকেই বাড়ির সামনে ও আশপাশে খুঁজে ওই ফলটি বের করেন।
মেখল ইউনিয়নের বাসিন্দা মো. জুবায়ের চৌধুরী জয়নিউজকে বলেন, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় আমি ঘর থেকে বের হয়ে দেখি অনেক নারী-পুরুষ টর্চলাইটের আলো দিয়ে কী যেন খোঁজ করছে। কৌতুহলী হয়ে আমি সামনে গিয়ে দেখি অনেকটা অর্রা (শ্যাওড়া) গাছের ফলের মতো এই ফলটি কুড়ানোর হিড়িক লেগে যায় রীতিমতো। এটি ডুবিয়ে পানি খেলেই নাকি করোনামুক্ত হওয়া যাবে! আমি বিষয়টি গুজব বলার পর কয়েকজন ক্ষিপ্ত হয়ে যায়।
এ ব্যাপারে হাটহাজারী উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. আবু সৈয়দ মো. ইমতিয়াজ হোসাইন এ ধরণের গুজবে কান না দিতে জনসাধারণের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, করোনভাইরাসের এখনও পর্যন্ত কোনো প্রতিষেধক আবিষ্কার হয়নি। গুজবে কান দিয়ে যদি এধরনের ফল বা ফলের বিচি ভিজিয়ে পানি খেলে উল্টা রোগাক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। তাই গুজবের উপর ভিত্তি করে এ ধরনের কোনো ফল বা বিচি না খাওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।