লক্ষ্মীপুর পৌরশহরসহ রায়পুর ও কমলনগরে জ্বর ও অন্যান্য রোগে মারা গেছেন তিনজন। এ কারণে ৩০ পরিবারকে হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। সংগ্রহ করা হয়েছে মৃতদের নমুনা।
এনিয়ে জেলায় কোয়ারেন্টাইনে আছেন ৯শ’ ২ জন। নতুন করে চারজন আইসোলেশনসহ মোট আইসোলেশনে আছেন ছয়জন। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন সিভিল সার্জন আব্দুল গাফফার।
তিনি জয়নিউজকে জানান, মৃত ব্যক্তিরা জ্বরসহ অন্যান্য রোগহলে তারা ঢাকা থেকে আসায় সন্দেহে করোনা নমুনা সংগ্রহ করা হয়। এছাড়া ২৪ ঘন্টায় সংগৃহিত নমুনার সংখ্যা ৫৮ জনের নমুনা সংগ্রহ করে পাঠানো হয়েছে। এ পর্যন্ত পাঠানো নমুনার সংখ্যা ৩শ’৬৫ জনের হলেও নতুন কোনো টেস্টের রেজাল্ট আসেনি।
এছাড়া ১শ’ ২৯ জনের রেজাল্ট আসে। এতে করোনামুক্ত ১শ’ ২৭ জন। এছাড়া সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে জেলায় ৪র্থ দিনের মত চলছে লকডাউন।
এর আগে লক্ষ্মীপুরের ঢাকা থেকে আসা গার্মেন্টস শ্রমিক রামগঞ্জে ও নারায়নগঞ্জ থেকে আসা তাবলীগ ৫৫ বছরের রামগতিতে আসা মোট দুই ব্যক্তির পজেটিভ-২ রেজাল্ট পাওয়া যায়।
জানা গেছে, গত এক সপ্তাহে নারায়ণগঞ্জ থেকে শতাধিক ব্যক্তি লক্ষ্মীপুরে এসেছেন। এরমধ্যে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ প্রায় ৫০ জনকে খুঁজে বের করে করোনা পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ করেছেন। তবে এখনও অন্যরা আত্মগোপনে আছেন। এদিকে অনেকেই পাড়া-মহল্লায়, হাটবাজারে অবাধে বিচরণ করছেন। এতে আতঙ্ক বাড়ছে পুরো জেলায়। ইতোমধ্যে নারায়ণগঞ্জ থেকে আসা জেলার রামগঞ্জ ও ঢাকা থেকে আসা রামগতিতে একজন এ জেলায় এখনো পর্যন্ত দুই ব্যক্তি করোনা আক্রান্ত হয়েছেন।
সচেতন মহলের ভাষ্যমতে, গত তিনদিন ধরে লকডাউন রয়েছে কুমিল্লা, নোয়াখালী ও চাঁদপুর। নারায়ণগঞ্জ থেকে সড়কপথে লক্ষ্মীপুরে আসার মাধ্যম এ জেলাগুলো। কয়েকদিন ধরে করোনার ভয়াবহতা ছড়িয়ে পড়ে নারায়ণগঞ্জে। এতে জেলা প্রশাসনের লকডাউন করে দেয়। সেখানে থাকা আতঙ্কিত লোকজন গোপনে এলাকা ছাড়তে শুরু করেন। নৌপথে চাঁদপুর হয়ে হাইমচরের ইচলী এবং লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে আসা যায়।
এছাড়া নারায়ণগঞ্জে মৃত এক যুবকের মরদেহ নদীপথে এনে রায়পুরের চরবংশীতে দাফন করা হয়। তার করোনার উপসর্গ ছিল বলে প্রশাসন কয়েক বাড়ি লকডাউন করে দেয়। এক জেলার মানুষ যেন অন্য জেলায় যাতে না যেতে পারে সেজন্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতিটি কঠোর নির্দেশনা রয়েছে। লক্ষ্মীপুরে প্রবেশধারে প্রত্যেকটি স্থানে চেকপোস্ট বসানোর জন্য স্থানীয় প্রশাসন উদ্যোগ নিলেও তা বাস্তবায়ন নেই। দায়সারা কার্যক্রম চলছে। সোমবার (১৩ এপ্রিল) দুপুরে এমন ভাষ্য জেলা স্বাস্থ্য বিভাগও ব্যক্ত করেছেন।
জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ, পুলিশ, গোয়েন্দা সংস্থা ও দায়িত্বশীল একাধিক সূত্রে জানা গেছে, বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স, পণ্যবাহী গাড়ি এবং ট্রলারযোগে কৌশলে রোগীর আত্মীয় পরিচয় দিয়ে ইতোমধ্যে নারায়ণগঞ্জ থেকে শতাধিক ব্যক্তি লক্ষ্মীপুরে এসেছেন। এজন্য লক্ষ্মীপুরসহ চারটি জেলা ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।