পাহাড়ে বিশুদ্ধ পানির সংকটে ছড়া-খালের দূষিত পানি ব্যবহারে বান্দরবানে অজ্ঞাত রোগে শিশুসহ ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। ইতোমধ্যে রোগটি কয়েকটি পাহাড়ি গ্রামে ছড়িয়ে পড়েছে।
মৃত ৩ জন হলেন- সাংকিং পাড়ার বাসিন্দার বয়োজ্যেষ্ঠ নাংলং খুমি (৭০), অংথং পাড়ার বাসিন্দার খুবে অং (৮০) এবং লংথাং পাড়ার বাসিন্দার তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র ডালুং খুমি (১০)। এছাড়া এ রোগে পাহাড়ি পাড়াগুলোতে আক্রান্ত হয়েছে অনেকে।
আক্রান্তদের মধ্যে কয়েকজন হচ্ছেন- অংথাং পাড়ার বাসিন্দা কাইং হয় খুমি (৭২), থাংঅং খুমি (৭০), সুইচেং খুমি (৬৯), থংহ্লা খুমি (২২) এবং থৈতাং খুমি (২৫)। এছাড়াও সাংকিং পাড়ায় ৬ জন ও অংতং পাড়ায় ৩ জন। অজ্ঞাত রোগে মৃত্যুর খবর রোয়াংছড়ি উপজেলার কয়েকটি পাড়ার বাসিন্দারা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে।
সোমবার (২০ এপ্রিল) পানিবাহিত এ রোগের প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মীরা ঘটনাস্থলে যাচ্ছেন বলে খবর পাওয়া গেছে।
স্বাস্থ্য বিভাগ ও স্থানীয়রা জানায়, জেলার রোয়াংছড়ি উপজেলার তারাছা ইউনিয়নের বেতছড়া এলাকার লংথাং পাড়া এবং সাংকিং পাড়াসহ আশপাশের কয়েকটি পাহাড়ি গ্রামে পাড়ায় পাড়ায় পেট ব্যথা, ডায়রিয়া, বমি এবং আমাশয় রোগের লক্ষণ জনিত পানিবাহিত রোগের প্রকোপ দেখা দেয়। ইতোমধ্যে পাড়াগুলোতে আক্রান্ত হয়ে শিশুসহ ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে।
বোমাং সার্কেলের লাংথাং পাড়ার গ্রাম প্রধান থেউলাং খুমি বলেন, বেতছড়া ইউনিয়নে খুমি জনগোষ্ঠীর তিনটি পাড়ায় হঠাৎ করে পেট ব্যথা, বমি, ডায়রিয়ায়, আমাশয় রোগের প্রকোপ দেখা দিয়েছে। ইতোমধ্যে আক্রান্ত হয়ে গত এক সপ্তাহে ৩ জন মারা গেছে।
সাংকি পাড়ার বাসিন্দা লংরেন খুমি বলেন, তার পাড়ায় আরও ৫ জন আক্রান্ত হয়েছে। আক্রান্তদের দূরের একটি বাজার থেকে ওষুধ কিনে দেওয়া হয়েছে।
বিষয়টি স্বীকার করে রোয়াংছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মংহ্লা প্রু মারমা বলেন, এরা মূলত দূষিত পানি খাওয়া এবং ব্যবহারের ফলে টাইফয়েড, ডায়রিয়া ও আমাশয়সহ পানিবাহিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হতে পারে।
‘বছরে এই সময় এসব রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয় পাহাড়ে। ঐ এলাকায় বেতছড়া বাজারে একটি কমিউনিটি ক্লিনিক রয়েছে। আক্রান্তরা চাইলে সেখান থেকে ওষুধ নিতে পারে। সেখানে নিয়মিত চিকিৎসক, স্বাস্থ্য কর্মী রয়েছেন। স্বাস্থ্য ক্লিনিক থেকে প্রাদুর্ভাব দেখা দেওয়া এলাকায় দুজন স্বাস্থ্যকর্মী পাঠানো হবে।
তারাছা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান উথোয়াই মারমা বলেন, আমাকে ঘটনাটি কেউ জানায়নি। স্বস্ব এলাকায় ইউনিয়নের মেম্বারদের পাঠানো হয়েছে।
বান্দরবানের সিভিল সার্জন ডা. অংসুই প্রু মারমা বলেন, পানিবাহিত রোগে বেতছড়ায় কয়েক জনের মৃত্যুর খবর শুনেছি। পাড়াগুলোতে রোগের প্রকোপ বেড়েছে। স্বাস্থ্য বিভাগের মেডিকেল টিম ঘটনাস্থলে যাওয়ার পর রোগের আলামত সংগ্রহ করে পরীক্ষার পর বলা যাবে রোগটি কি। প্রাথমিকভাবে পানিবাহিত রোগ মনে হচ্ছে।