আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম বলছে, উত্তর কোরিয়ার শীর্ষ নেতা কিম জং উন গুরুতর অসুস্থ। তবে তার মৃত্যুর গুজব ভেসে বেড়াচ্ছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও উত্তর কোরিয়ার তীব্র সমালোচক কিছু দেশের সংবাদমাধ্যমে।
পারমাণবিক শক্তিধর দেশটির শাসকের মৃত্যু হয়ে থাকলে কে হবেন তার উত্তরসূরি, সেই প্রশ্নও উঠতে শুরু করেছে। কারণ উনের সন্তানদের বয়স এখনও অনেক কম। তিন প্রজন্ম ধরে উত্তর কোরিয়া শাসন করে আসা কিম পরিবারে উনের পর দল ও দেশের দায়িত্ব নেওয়ার মতো একমাত্র সদস্য রয়েছেন তার বোন কিম ইয়ো জং।
৩১ বছরের জং বড় ভাই উনের মতোই কয়েক বছর সুইজারল্যান্ডের গামলিজেনের ইংলিশ ল্যাঙ্গুয়েজ ইন্টারন্যাশনাল স্কুলে পড়াশোনা করেছেন। সেখান থেকে ফিরে এসে তিনি পিয়ংইয়ংয়ে কম্পিউটার সায়েন্স নিয়ে পড়াশোনা করেন। ২০১১ সালের ডিসেম্বরে বাবা কিম জং ইলের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় প্রথম নজরে আসেন জং। অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া কমিটির সদস্য না হয়েও তাকে নেতৃত্বের ভূমিকায় দেখা যায়। এরপর থেকেই দেশটির ক্ষমতাসীন ওয়ার্কার্স পার্টির বিভিন্ন পদে একের পর এক দায়িত্ব পেতে থাকেন তিনি।
২০১৪ সালে উন অসুস্থ হলে দেশ শাসনে ভাইয়ের পাশে দাঁড়ান জং। ওই বছরই তাকে দলের প্রচারণা ও আন্দোলন বিভাগের উপ পরিচালক করা হয়। এর পাশাপাশি দলের শীর্ষ নীতিনির্ধারণী ফোরাম পলিটব্যুরোর সদস্য করা হয় তাকে।
২০১৮ সালে শীতকালীন অলিম্পিক উপলক্ষে সিউলে প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন জং। ১৯৫০ সালে দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে যুদ্ধের পর প্রথম উত্তর কোরিয়ার প্রতিনিধি দল ছিল এটি। আন্তর্জাতিক কোনো সম্মেলনে এটাই ছিল তার প্রথম যোগদান। পরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে কিম জং উনের বৈঠকেও উপস্থিত ছিলেন তিনি।
ভাই উনের মতোই জং দেশ শাসনে কঠোর ও নিষ্ঠুর যে হবেন না তার প্রমাণ এখনও পাওয়া যায়নি। বরঞ্চ ভাইয়ের মতোই তাকে হুমকি-ধমকি দিতে দেখা গেছে। গত মাসে দক্ষিণ কোরিয়ার সামরিক মহড়ার সময় তিনি সিউলকে বলেছিলেন, ‘ভয় পেয়ে ঘেউ ঘেউ করা কুকুর’।
স্বৈরতন্ত্র শাসন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক নাতাশা লিন্ডস্টায়েদত ডেইলি মিররকে বলেছেন, ‘বিশ্বের অন্য দেশের সঙ্গে সম্পর্ক নির্ধারণে ভাইয়ের চেয়েও কঠোর অবস্থান নেওয়ার সম্ভাবনা তার রয়েছে। আমার বিশ্বাস তিনি তার ভাইয়ের মতোই কঠোর এবং সাম্প্রতিক দিনগুলোতে তাকে অনেক বেশি প্রকাশ্যে দেখা গেছে।’