করোনাভাইরাসের কারণে কর্মহীন ও দরিদ্রদের জন্য মানবিক সহায়তা কর্মসূচি থেকে বঞ্চিত হতে যাচ্ছে জুরাছড়ির মৈদং ও দুমদুম্যা ইউনিয়নবাসী। শুধুমাত্র মোবাইল নম্বর না থাকায় ৯শ’ ৯৩ পরিবার এ সহায়তা থেকে বঞ্চিত হতে যাচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, করোনা ভাইরাসজনিত দুর্যোগে মানবিক সহায়তা কর্মসূচি চালুর উদ্যোগ নিয়েছেন সরকার। এ কর্মসূচির অন্তর্ভুক্তির গুরুত্বপূর্ণ শর্ত হচ্ছে সুবিধাভোগীর মোবাইল নম্বর থাকতে হবে। পরবর্তীতে এ মোবাইল নম্বর ব্যবহার করে কেন্দ্রীয়ভাবে মোবাইল ব্যাংকিং একাউন্ট খুলে দিয়ে আর্থিক মানবিক সহায়তা দেওয়া
হবে।
বগাখালীর জলছড়ির পাংখোয়া (৫৫) জয়নিউজকে বলেন, মোবাইল কি জিনিস! নম্বর কোথা থেকে দেবো! জাতীয় পরিচয়পত্র দেখিয়ে বলে এটা নাকি?
একই ইউনিয়নের কন্যামনি তঞ্চঙ্গ্যা (৬০) জয়নিউজকে বলেন, এক মাস ধরে এক বেলা ভাত খেয়ে অন্য বেলা জঙ্গলের আলু খেয়ে দিন পার করছি। সরকারি চাল দেবে শুনেছি অনেক উপকার হবে। সরকারের সহায়তা অধিক আগ্রহে থাকলেও সে জানেনা তারা মোবাইল নম্বর না থাকায় তার নাম বাদ পড়তে যাচ্ছে।
মৈদং ইউনিয়নের ভুয়াতলীছড়ার সোনালী চাকমা। স্বামী দু’বছর আগে মারা গেছে। সরকারের মানবিক সহায়তা কর্মসূচির চালুর খবর পেয়ে খুশি হলেও মোবাইল নম্বর দিতে না পারাই তার নাম বাদ পরেছে। শুধু তিনিই নয়, কঞ্চনমালা চাকমা, ধনবী চাকমা, রূপসী চাকমাসহ অনেকে বাদ পড়াই হতাশ তারা।
এদিকে দুমদুম্যা ইউপি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান সাধন কুমার চাকমা জয়নিউজকে বলেন, ইউনিয়নে মোবাইল নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণে সরকারের কাছে দাবি জানালেও কোনো ফলপ্রসূ হয়নি। অথচ শুধু মাত্র মোবাইল নম্বর না থাকায় প্রধানমন্ত্রীর মানবিক সহায়তা থেকে ইউনিয়নবাসী বঞ্চিত হতে যাচ্ছে। সরকারে কাছে মোবাইল নম্বর ব্যতিত প্রান্তিক জনগোষ্ঠীদের অন্তর্ভুক্ত করার আবেদন জানাচ্ছি।
জুরাছড়ি অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা অর্পন দেওয়ান জয়নিউজকে বলেন, মানবিক সহায়তা প্রাপ্তি নির্দেশিকা অনুযায়ী করোনাভাইরাসে ক্ষতিগ্রস্তের নামের সঙ্গে অবশ্যই মোবাইল নম্বর দিতে হবে। মোবাইল নম্বর না থাকলে মানবিক সহায়তা সফটওয়্যারে তার নাম অন্তর্ভুক্ত করা যাবে না।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাহফুজুর রহমান দুমদুম্যা ইউনিয়নের মোবাইল নেটওয়ার্ক না থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন এ বিষয়ে জেলা প্রশাসককে জানোনো হয়েছে।
উপজেলা চেয়ারম্যান সুরেশ কুমার চাকমা জয়নিউজকে বলেন, দুমদুম্যা ইউনিয়ন সম্পূর্ণ নেটওয়ার্ক নেই, সুতরাং সেখানকার অধিকাংশ জনগোষ্ঠীর মোবাইল ব্যবহার করেনা। যারা উপজেলা সদরে আসা-যাওয়া করে বিশেষ করে ওয়ার্ড সদস্যদের মোবাইল নম্বর ব্যবহার করে এ দুঃসময়ে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীদের এ কর্মসূচির সহায়তা নিশ্চিত করা জরুরি।