আধিপত্য বিস্তার ও জায়গা জমির চলমান বিরোধকে কেন্দ্র করে ছুরিকাঘাতের ঘটনায় আহত ব্যক্তির অ্যাম্ব্যুলেন্স থামিয়ে পুনরায় উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করে জহিরুল ইসলাম (৩৭) নামে এক ব্যক্তিকে খুন করা হয়েছে। ভেঙে দেওয়া হয়েছে আহত ব্যক্তিকে বহন করা অ্যাম্বুলেন্স। এছাড়াও ছুরিকাঘাতে আহত হয়েছে রবিউল ইসলাম হিরন (২২) ও জামাল উদ্দিন (৫৫) নামে আরও দুইজন।
মঙ্গলবার (১২ মে) সকাল ৯টায় বাঁশখালী উপজেলার সাধনপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ সাধনপুর এলাকার প্রধান সড়কের ওপর এ ঘটনা ঘটে। নিহত জহিরুল ইসলাম এলাকার মৃত আলী মিয়ার ছেলে। তিনি পেশায় একজন ট্রাক ড্রাইভার।
সরেজমিন ঘুরে জানা গেছে, প্রায় এক সপ্তাহ আগে জায়গা জমির বিরোধের ঘটনায় সুলতান আহমদের ছেলে মাহমুদুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তি প্রতিপক্ষের হামলায় ছুরিকাহত হন। তিনি ওই ঘটনায় বিচার চেয়ে রামদাশ মুন্সির হাট পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক মামুন হাসানের কাছে এজাহার দায়ের করেন। পুলিশ পরিদর্শক মামুন হাসান এজাহারটি নথিভুক্ত না করে টালবাহানা থাকেন।
এই সুযোগে ওই দায়ের না হওয়া এজাহারের আসামী নেজাম উদ্দিন, মনির আহমদ, মো. জহির, সিরাজুল ইসলামসহ আরো কয়েকজন মিলে গত সোমবার (১১ মে) রাতে মাহমুদুল ইসলামের ওপর পুনরায় হামলা করে ঘরবাড়ি ভাংচুর দেয়। মাহমুদুল ইসলামের ঘরবাড়ি ভাঙ্গার প্রতিবাদ করেন তার মামা জহিরুল ইসলাম। প্রতিবাদ করার কারণে এবং প্রভাব বিস্তার করতে স্থানীয় নেজাম উদ্দিন, মনির আহমদ, মো. জহির, সিরাজুল ইসলামসহ আরও কয়েকজন ওই ঘটনার রেশ ধরে মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৭টায় অর্তকিত ছুরিকাঘাত করে জহিরুল ইসলামের নাড়ি-ভুঁড়ি বের করে ফেলে।
আহত জহিরুল ইসলামকে প্রতিবেশিরা দ্রুত গুনাগরির একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করায়। ওইখানকার কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে প্রেরণ করেন। অ্যাম্বুলেন্সে করে চমেক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সময় দক্ষিণ সাধনপুরে প্রধান সড়কের ওপর পৌঁছালে সন্ত্রাসীরা আবারো সশস্ত্র হামলা চালিয়ে অ্যাম্ব্যুলেন্সের গতিরোধ করে। সন্ত্রাসীরা উর্পযুপরি ছুরিকাঘাত করে জহিরুল ইসলামের মৃত্যু নিশ্চিত করে। ওই ঘটনায় বাধা দিতে গিয়ে আহত হয়েছেন রবিউল ইসলাম হিরন (২২) ও জামাল উদ্দিন (৫৫) নামের আরো দুইজন।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, রামদাশ মুন্সিরহাট পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক মামুন হাসানের দায়িত্ব অবহেলার কারণে এই হত্যাকাণ্ডটি ঘটেছে। এলাকার বহু অপরাধের নায়কদের সঙ্গে তিনি সরাসরি জড়িত। তার বিরুদ্ধে বহু মানুষের অভিযোগ থাকলেও তাকে দীর্ঘদিন ধরে বদলি করা হচ্ছে না বলে অসংখ্য অভিযোগ করেছেন।
রামদাশ মুন্সির হাট পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক মামুন হাসান বলেন, হত্যার ঘটনাটি তদন্ত করা হচ্ছে। পূর্বের বিরাধের সঙ্গে বর্তমানের হত্যাকাণ্ড সম্পৃক্ততা রয়েছে কি-না, তা খতিয়ে দেখা হবে। আমার বিরুদ্ধে এলাকাবাসীর অভিযোগ সঠিক নয়।
বাঁশখালী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ রেজাউল করিম মজুমদার বলেন, লাশ মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। এ ব্যাপারে হত্যা মামলা দায়ের করা হবে। খুনিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। দোষী কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।