করোনাভাইরাসের নমুনা সংগ্রহে ধীরগতির পাশাপাশি ফলাফল জানাতে সময় ক্ষেপণে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের অবজারভেশন সেলে থাকা রোগীরা। এছাড়া করোনা শনাক্তের আগেই আইসিইউ সুবিধা না পেয়ে ঘটেছে একাধিক মৃত্যু।
সেইসঙ্গে করোনার উপসর্গ নিয়ে না এলেও সব রোগীকে করোনা পরীক্ষার জন্য একই ওয়ার্ডে রাখায় সংক্রমণের আশঙ্কা করছেন রোগীর স্বজনরা।
৭০ বছর বয়সী আরতি দেবের শ্বাসকষ্ট বাড়লে উন্নত চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসা হয় চমেক হাসপাতালে। প্রথমে ভর্তি করা হয় ১৩ নম্বর মেডিসিন ওয়ার্ডে। পরে শ্বাসকষ্ট থাকায় রোগীকে স্থানান্তর করা হয় ফ্লু কর্নার ও বিশেষ অবজারভেশন সেলে। কিন্তু করোনা আক্রান্ত কি-না, নমুনা পরীক্ষার আগেই মারা যান আরতি দেব। এ সময় ডাক্তার কিংবা নার্স কারোই কোনো ধরনের সহায়তা না পাওয়ার অভিযোগ স্বজনদের।
স্বজনরা জানান, নমুনা নিতে বলেছি, কিন্তু তারা বলে নমুনা নেওয়া শেষ। এটা বললেও কোনো ডাক্তার, নার্স আসেনি। এরকম করতে করতে ১০ টার পর মারা গেছে।
অন্যদিকে ষাটোর্ধ্ব আবু মুসা জ্বর ও শ্বাসকষ্টে ভুগতে থাকায় কোথাও ভর্তি করতে না পেরে নিয়ে আসা হয় চমেকে। বিশেষ অবজারভেশন সেলে রেখে নমুনা পরীক্ষা করা হলেও রিপোর্ট আসার আগেই মারা যান তিনি। আইসিইউ সাপোর্ট না পেয়ে তার মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি মৃতের সন্তানের।
মৃত আবু মুসার ছেলে বলেন, আমার বাবার জান থাকা অবস্থায় আইসিইউতে ঢোকাতে পারিনি।
এদিকে নমুনা সংগ্রহ ও ফলাফল পেতে ধীরগতি ও স্বাস্থ্যকর্মীদের অবহেলায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন রোগীর স্বজনরা। রোগীর স্বজনদের একজন বলেন, টেস্টের ফলাফল পজিটিভ না। তাও সেবা দিতে রাজি না, হয়রানি করে।
করোনা চিকিৎসার জন্য চমেক বিশেষায়িত হাসপাতাল না হওয়ার কারণে করোনা আক্রান্ত রোগীদের আইসিইউ সেবা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না বলে জানান চমেক পরিচালক এস এম হুমায়ুন কবির।
তিনি বলেন, আমরা কিন্তু করোনা চিকিৎসা দিতে ডেজিগনেটেড না। এখানে যে আইসিইউ আছে তা সাধারণ রোগীদের উপযুক্ত। করোনা রোগীদের চিকিৎসা দেওয়ার মতো কোনো নির্দেশনা এখনও মন্ত্রণালয় থেকে পাইনি।