বিভিন্ন জেলা থেকে অবাধে প্রবেশের সুযোগে করোনাভাইরাস সংক্রমণের ক্ষেত্রে বন্দরনগরী চট্টগ্রাম হটস্পটে পরিণত হয়েছে। এখানে প্রতিদিনই দেড়শ থেকে ২শ’ করোনা রোগী শনাক্ত হচ্ছে। সে অনুযায়ী চট্টগ্রামকে করোনা সংক্রমণের হটস্পট হিসেবেই চিহ্নিত করেছেন সিভিল সার্জন।
এদিকে হাসপাতালগুলোতেও করোনা আক্রান্ত রোগীদের এখন আর স্থান হচ্ছে না। ১৩০ শয্যার দু’টি হাসপাতালের বিপরীতে বর্তমানে রোগী সংখ্যা দু’হাজারের বেশি। আর চিকিৎসা ব্যবস্থাও সীমিত হয়ে যাওয়ায় আক্রান্তসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে।
সিভিল সার্জন কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, চট্টগ্রামে ৩ এপ্রিল প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হওয়ার পর এক মাসে রোগী সংখ্যা ছিল মাত্র ৮৯ জন। কিন্তু পরের ২০ দিনে রোগী সংখ্যা দু’হাজারের বেশি। বিশেষ করে ২০ মে’র পর থেকে প্রতিদিন দেড়শ কিংবা তার চেয়েও বেশি রোগী শনাক্ত হচ্ছে চট্টগ্রামে। এর মধ্যে ওই দিনই রোগী সংখ্যা ছিল ২শ ৫৭ জন।
সিভিল সার্জন ডা. শেখ ফজলে রাব্বি বলেন, জনগণ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে পারে নাই। সেজন্য চট্টগ্রামের আজ এই ভয়াবহ পরিস্থিত। এখনও মানুষ সচেতন হচ্ছে না, অবাধে চারদিকে ঘুরছে।
নগরে প্রতিদিন দেড়শ’র বেশি রোগী শনাক্ত হলেও করোনা বিশেষায়িত হাসপাতাল রয়েছে মাত্র দু’টি। যেখানে আবার শয্যা সংখ্যা মাত্র ১শ ৩০। করোনাভাইরাস শনাক্ত হওয়ার পরও রোগী নিয়ে হাসপাতালে ঘুরছে স্বজনেরা। ফলে আক্রান্ত রোগী থেকে সংক্রমণের হারও ক্রমশ বেড়ে চলেছে।
এ বিষয়ে স্বাচিপ সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. আ ন ম মিনহাজুর রহমান বলেন, আড়াই মাস ধরে এ সমস্ত গল্প শুনছি। প্রাতিষ্ঠানিক হাসপাতাল হবে, তবে এরকম কিছুই এখনও হয়নি।
চট্টগ্রামে করোনা রোগীর সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে বাড়ার বেশকয়েকটি কারণ চিহ্নিত করেছেন চিকিৎসকরা। গার্মেন্টস এবং বেশ কিছু শিল্প প্রতিষ্ঠান খোলা রাখাকে কারণ হিসেবে দেখছেন তারা।
বিএমএ সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. এস এম মুইজ্জুল আকবর চৌধুরী বলেন, রোগী আছে কিন্তু হাসপাতালে নেই কোনো বেড। স্বাস্থ্য ব্যবস্থার ভয়াবহ চিত্র।
তবে শেষ পর্যায়ে এসে মঙ্গলবার (২৬ মে) চট্টগ্রামের বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল হাসপাতাল এবং খুলশীর ইম্পেরিয়াল হাসপাতালকে করোনা রোগীদের জন্য বিশেষায়িত হাসপাতাল হিসেবে বরাদ্দ দিয়েছে সরকার।