মহামারি করোনাভাইরাসের সংক্রমণ পরিস্থিতির আরও অবনতি হলে ফের সাধারণ ছুটি ও লকডাউনের কথা ভাববে সরকার। সরকারের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের কয়েকজন মন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে। তবে এ জন্য আগামী ১৫ জুন পর্যন্ত সবকিছু গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করা হবে।
এর আগে দীর্ঘ ৬৬ দিনের ছুটি শেষে গত ৩১ মে থেকে সীমিত আকারে স্বাভাবিক কার্যক্রম চালু করা হয়েছে। সব চালু করা হলেও করোনার সংক্রমণ কিন্তু থেমে নেই। মঙ্গলবার (২ জুন) এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ করোনা শনাক্ত হয়েছে। মূলত দিনের পর দিন বাংলাদেশে করোনা আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা লাফিয়ে লফিয়ে বাড়ছে।
আরও পড়ুন: সব খুললেও আসতে পারে কঠোর লকডাউন!
সরকারের নীতিনির্ধারকরা জানান, এই পরিস্থিতিতেও শ্রমজীবী, গরিব, খেটে খাওয়া, স্বল্প আয়ের মানুষের জীবিকা এবং দেশের অর্থনীতির কথা বিবেচনা করে সাধারণ ছুটি ও লকডাউন তুলে দেওয়া হয়েছে। তবে পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটলে ও ভয়ঙ্কর পর্যায়ে চলে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হলে, তখন সরকারের হাতে আর কোনো উপায় থাকবে না। বাধ্য হয়ে পুনরায় সাধারণ ছুটি ও লকডাউন দেওয়া হবে। সরকারের উচ্চ পর্যায়ে এমন সিদ্ধান্তই রয়েছে।
তারা জানান, এই সময়ে করোনা সংক্রমণের প্রকৃত অবস্থা বোঝার জন্য পরীক্ষা আরও বাড়ানো হবে। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্টদের প্রয়োজনীয় নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে বলে ওই নীতিনির্ধারকরা জানান।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সরকারের একজন মন্ত্রী বলেন, ১৫ দিন সময় দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে আগামী এক সপ্তাহ কঠোরভাবে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করবে সরকার। যদি সংক্রমণের মাত্রা আরও বাড়ে, তাহলে পুনরায় সাধারণ ছুটি ঘোষণা ও লকডাউন দিয়ে তা কার্যকর করতে কঠোর পদক্ষেপ নেবে সরকার।
এছাড়া সোমবার (১ জুন) সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক ভিডিও কনফারেন্সে বলেন, আমাদের অসচেতনতা এবং স্বাস্থ্যবিধি না মানায় পরিস্থিতি যদি আরও অবনতি হয় এবং তা যদি জনস্বার্থের বিপরীতে চলে যায়, তাহলে সরকারকে বাধ্য হয়ে আবারও কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
আরও পড়ুন: পরিস্থিতির অবনতি হলে কঠোর সিদ্ধান্ত: কাদের
এদিকে বাংলাদেশের পাশাপাশি প্রতিবেশী দেশ ভারতেও করোনা আক্রান্তের হার সর্বোচ্চ পার্যায়ে রয়েছে। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, সেখানে করোনায় আক্রান্ত হয়েছে ২ লাখের বেশি মানুষ। মারা গেছেন ৫ হাজার ৬২৮ জন। কয়েকদিন ধরেই সেখানে রেকর্ড সংখ্যক আক্রান্ত ব্যক্তিকে শনাক্ত করা হয়েছে। আক্রান্তের দিক থেকে ভারত বিশ্বের সপ্তম স্থানে চলে এসেছে। সে দেশেও লকডাউন শিথিল করা হয়েছে।
জানতে চাইলে কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, একটা চরম অনিশ্চয়তার মধ্য দিয়ে আমাদের চলতে হচ্ছে। এই সময়ে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে দেখা হবে। এর পর পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, এটাই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত এমন নয়। ১৫ দিন পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। জনগণ ও দেশের কথা চিন্তা করে যে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে।
জয়নিউজ/এসআই
