দেশে করোনাভাইরাসের প্রার্দুভাবের পর নগরের অলিগলিতে সন্ধ্যার নামার সঙ্গে সঙ্গেই রাস্তায় দোকানপাট বন্ধ হযে যায়। সবখানে নেমে আসে ঘুটঘুটে অন্ধকার। শুধু সেই আগের মতোই রাত পর্যন্ত খোলা থাকে ওষুধের দোকানগুলো। এসব ওষুধের দোকানে প্রতিদিন কিছু মানুষ শুধু কয়েকটি ভিটামিনের ওষুধ খোঁজ করতেই থাকেন। বিশেষ করে ভিটামিন সি, ডি ও জিংকসমৃদ্ধ ওষুধ।
তারা জেনেছেন, এ ভিটামিনগুলো খেলে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়বে। যেটি এখন করোনা রোধে সবচেয়ে দরকার। আর তাদের এ চাহিদাকে পুঁজি করে অসাধু ব্যবসায়ীরা এ ওষুধগুলো বাজার থেকেই উধাও করে দিয়েছেন। কেবলমাত্র তিন-চারগুণ টাকা দিলেই মিলছে এ ওষুধ। বাকি সবাই খুঁজে খুঁজে দিশেহারা।
কিন্তু তারা কি জানেন, তাদের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা কতটুকু। নাকি শুধুই একটি অজানা ভয় থেকে ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়াই এই চেষ্টা। তবে অবশ্যই দেহের রোগক্ষমতা বাড়াতে হবে। কিন্তু সাপ্লিমেন্টারি ওষুধ খেয়ে নয়। আমাদের জোর দিতে হবে দৈনন্দিন কিছু খাবারের উপর।
ইউনিভার্সিটি অব সাউথ এশিয়ার পুষ্টিবিদ ফারিয়া ইসলাম রোগ প্রতিরোধে জোর দিচ্ছেন কিছু খাবারের উপর। যা করোনাসহ বিভিন্ন রোগ থেকে আমাদের বাঁচাবে।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে যে খাবার খাবেন:
সাইট্রাস ফল: লক্ষ্য করলে দেখবেন ঠাণ্ডা বা হাঁচির সমস্যা হলে অনেকেই টক ফল খেতে বলে। এর কারল হলো- টক জাতীয় ফলগুলোতে ভিটামিন সি এর প্রাচুর্য বেশি থাকে, যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। ভিটামিন সি শ্বেত রক্ত কণিকার উৎপাদন বৃদ্ধি করে, যা ইনফেকশন থেকে দেহকে রক্ষা করতে পারে।
আঙ্গুর, লেবু, আমলকি, কমলা এই জাতীয় ফল। লাল বেম্ব মরিচে প্রায় দ্বিগুণ পরিমাণ ভিটামিন সি আছে। সঙ্গে রয়েছে বিটা ক্যরোটিন, যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির পাশাপাশি চোখ এবং চামড়ার উপকারে আসে।
রসুন: মশলা জগতে খুব পরিচিত নাম রসুন। অনেকে খেতে পছন্দ না করলেও রসুনের রয়েছে সালফার কম্পাউন্ড, এন্টিমাইক্রবিয়াল উপাদান এলিসিন যা রক্ত সঞ্চালনে এবং রক্তে চর্বির পরিমাণ কমাতে সাহায্য করে। এই এলিসিন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতেও সাহায্য করে।
ব্রুকলি: খুব সহজেই এই সবজিটি পাওয়া যায়। এতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ, সি এবং কে আছে। এই তিনটি ভিটামিনই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। তাছাড়া এতে রয়েছে ভালো পরিমাণে পটাশিয়াম এবং ফলিক এসিড। এটি একটু আধ কাঁচা অথবা কাঁচা খাওয়া ভালো।
আদা: অনেকেই জানেন যে ঠাণ্ডা কাশি হলেই আদা চা পান করার কথা খুব বেশি প্রচলিত আছে আমাদের দেশে। এর পেছনের কারণ- আদাতে আছে খুব শক্তিশালী anti-inflammatory and antioxidant effects যা ইমিউনিট শক্তি বাড়ায় এবং inflammatory ডিজিজগুলোর বিপক্ষে কাজ করে।
দই: দই একটি উপাদেয় খাবার। কারণ এতে আছে pro-biotic ( live microorganism ), যা অনেক বেশি স্বাস্থ্য উপকারী। যাদের বদহজম বা পেটের কোনো সমস্যা আছে, তাদের জন্য দই একটি গুরুত্বপূর্ণ খাবার। এছাড়া দই ক্যালসিয়াম এবং ভিটামিন ডি’র খুব ভালো সোর্স। আর ভিটামিন ডি রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
হলুদ: রান্না ঘরের বহুল প্রচলিত হলো হলুদ। এর কড়া হলুদ রঙের জন্য এটি খুব পরিচিত, যাতে আছে curcumin। হলুদে আছে anti-inflammatory ধর্ম । এই কারকুমিন স্নিজেরাই ফ্রি-রেডিকেলগুলোকে বাধা দিতে সক্ষম এবং সেই সঙ্গে দেহের নিজস্ব অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এনজাইমগুলিকে উদ্দীপিত করে রোগ প্রতিরোধ করে।
গ্রিন টি: flavonoids হলো এক ধরনের antioxidant যা গ্রিন টি’তে প্রচুর পরিমাণে বিদ্যমান থাকে। এছাড়া রয়েছে epigallocatechin gallate, বা EGCG আরো এক ধরনের antioxidant যা প্রতিরোধ ক্ষমতা উন্নত করে।
পেঁপে: খুব পরিচিত অনেক সহজলভ্য একটি ফল হলো পেঁপে। পেঁপেতে আছে প্রচুর ভিটামিন সি। প্রতিটি পেঁপেতে প্রায় ২২৫ গ্রাম ভিটামিন সি পাওয়া যায়। এতে আছে পাপাইন, যা খাবার হজমকাড়ি এনজাইম এবং এর আছে anti-inflammatory effects.
সূত্র: সময় নিউজ
জয়নিউজ/পিডি