করোনায় কাঁপছে নগর। প্রতিদিন করোনা শনাক্ত রোগীর পাশাপাশি মৃত্যুর সংখ্যাও বাড়ছে এখানে। এই অবস্থায় ওষুধ ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট কামাই করে নিচ্ছে কোটি টাকা। সম্প্রতি ওষুধ প্রশাসনের কিছু অভিযান পরিচালিত হলেও দাম কমছে না ওষুধের।
চট্টগ্রামের সবচেয়ে বৃহৎ ওষুধের পাইকারি বাজার হাজারী গলিতে গত রোববার (৭ জুন) জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযান পরিচালিত হয়। এতে ২৯টি ফার্মেসিকে ১০ লাখ ৯৩ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
তবে অভিযান পরবর্তীতে ক্ষতি পোষাতে ওষুধ সিন্ডিকেট আরো বেপরোয়া হয়ে ক্রেতাদের থেকে গলাকাটা দাম নিচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
প্রকৌশলী মো. ইউসুফ আক্ষেপ করে জয়নিউজকে বলেন, করোনাযুদ্ধে পুরো দেশ যখন যুদ্ধ করছে তখন মুনাফালোভী গুটি কয়েক ফার্মেসি মালিক বিপরীত পক্ষ হয়ে ৭১’র এর রাজাকারদের ভূমিকা পালন করছে। মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের সরকার ক্ষমতায় থাকাকালে কি করে দেশের জনগণকে জিম্মি করে ওরা টাকা কামাচ্ছে। আর এই সময়ে ওষুধ প্রশাসনইবা কি করছে? সরকারের উচিত এসব স্বার্থবাজদের আইনের আওতায় আনার সাথে সাথে চট্টগ্রামে ওষুধ প্রশাসনের ভূমিকাও খতিয়ে দেখা।
ওষুধ প্রশাসন অধিদফতর চট্টগ্রামের সহকারী পরিচালক হোসাইন মো. ইমরান জয়নিউজকে বলেন, আমরা করোনা ফাইটার না। সরকার থেকে করোনা ফাইটারদের ঠিক করে দেওয়া হয়েছে। তারা সরকারি প্রণোদনা পাবেন। তারপরও আমরা প্রতি সপ্তাহে দু-একবার মাঠে যাচ্ছি।
তিনি বলেন, ঔষুধ বিক্রেতাদের লাইন্সের ১০নং শর্তে লেখা আছে, ক্রেতাদের বিক্রি রশিদ দিতে হবে। তাই ক্রেতাদের অবশ্যই বিক্রির রশিদ নিতে হবে। এছাড়া তো আমরা কোনো অ্যাকেশেনে যেতে পারি না।
‘১০ বছর ধরে আমি এখানে কাজ করছি। ৩ জন অফিসার আর ৬ জন কর্মচারী নিয়ে চট্টগ্রাম জেলায় কাজ করে যাচ্ছি। প্রত্যেক এলাকায় ওষুধের পর্যাপ্ত সরবরাহ নিশ্চিত করতে আমরা কাজ করছি।’
হোসাইন মো. ইমরান বলেন, ওষুধ প্রশাসন নভেম্বর ২০১৯ সালে দেশের ওষুধ কোম্পানীদের নির্দেশ দিয়েছিল, করোনায় যেসব ওষুধ বেশি লাগে, সেগুলো বেশি বানাতে। বর্তমানে চট্টগ্রামে ওষুধের কোনো ঘাটতি নেই। চাহিদা বাড়াতেই ফার্মেসি মালিকরা বেশি দাম নিচ্ছে। নগরে যেসব হাসপাতালে ফার্মেসি আছে সেখানে কিন্তু ওষুধের দাম বাড়েনি।
জানতে চাইলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে চট্টগ্রামে দায়িত্বরত স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালের এক কর্মকতা জয়নিউজকে বলেন, কাঁচামাল এবং অন্যান্য উৎপাদন সংকটের কারণে উৎপাদন একটু কম হলেও দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। তাই পাইকারি ও খুচরা ওষুধ ব্যবসায়ীরা অতিরিক্ত দাম নেওয়ার যুক্তিসঙ্গত কোনো কারণ নেই।
বাংলাদেশ কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস সমিতির চট্টগ্রাম জেলার সাধারণ সম্পাদক লায়ন আশীষ কুমার ভট্টাচার্য জয়নিউজকে বলেন, ওষুধ কোম্পনীরা চাহিদা মোতাবেক ওষুধ সরবরাহ করতে না পারাতেই ওষুধের দাম বাড়ছে। তারপরও কোনো অসাধু ফার্মেসি মালিক যদি অতিরিক্ত দামে ওষুধ বিক্রি করে, তাকে আইনের আওতায় আনা হোক। আমরা প্রশাসনকে সহযোগিতা করব।