উপসর্গ ছাড়া করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের মাধ্যমে সংক্রমণের ঝুঁকি বিরল বলে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মন্তব্যের কড়া সমালোচনা করেছেন বিশেষজ্ঞরা।
তাদের দাবি, বিভিন্ন দেশের সরকার যখন লকডাউন শিথিলের উদ্যোগ নিচ্ছে, তখন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এই গাইডলাইন তাদের জন্য সমস্যা হয়ে দেখা দেবে।
সোমবার (৮ জুন) বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কর্মকর্তা মারিয়া ভ্যান কেরখোভে বলেছেন,উপসর্গহীন রোগীদের মাধ্যমে অন্য ব্যক্তিদের মধ্যে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার ঘটনা ‘বিরল’।
তিনি জানান, যেসব দেশে কঠোরভাবে কন্টাক্ট ট্রেসিং করা হয়েছে, সেসব দেশ থেকে তথ্য-উপাত্ত পাঠানো হয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থায়। সেগুলো বিশ্লেষণ করেই এই সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া গেছে। তবে এ বিষয়ে আরও নিশ্চিত হতে অধিকতর তথ্যের বিশ্লেষণ প্রয়োজন।
মঙ্গলবার (৯ জুন) লন্ডন স্কুল অব হাইজিন অ্যান্ড ট্রপিক্যাল মেডিসিনের ক্লিনিক্যাল এপিডিমিওলজির অধ্যাপক লিয়াম স্মিথ এই মন্তব্যের সমালোচনা করে বলেন, ‘আমি ডব্লিউএইচও’র এই বিবৃতিতে বেশ বিস্মিত। যাদের কখনোই লক্ষণ দেখা যায় না সেই উসর্গহীন ব্যক্তি এবং লক্ষণপূর্ব ব্যক্তিরা অন্যকে সংক্রমিত করার গুরুত্বপূর্ণ উৎস হিসেবে জানা আমার বৈজ্ঞানিক জ্ঞানের বিপরীত।’
করোনার সংক্রমণ ধীরে ধীরে কমিয়ে আনা এবং আক্রান্ত ব্যক্তিকে চিহ্নিত করা ও আইসোলেশনে রাখার মাধ্যমে লকডাউন শিথিলের পরিকল্পনা করছে অনেক দেশ। উপসর্গহীন করোনা আক্রান্তদের নিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এই গাইডলাইন সংক্রমণের ঝুঁকি আরও বাড়িয়ে দেবে বলেও মন্তব্য করেছেন বিশেষজ্ঞরা।
ক্যামব্রিজ ইউনিভার্সিটি হাসপাতারের সংক্রমক রোগ পরামর্শক বাবাক জাভিদ বলেন, ‘অনেক দেশ ট্র্যাক/ট্রেস/আইসোলেশনে রাখতে যেসব পদক্ষেপ নিয়েছে তার ওপর গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলবে এটি।’
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, গত মে মাসে জার্মানির হেইনসবার্গে ৯১৯ জন করোনা আক্রান্তকে পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, প্রতি পাঁচ জনে এক জন আক্রান্ত উপসর্গহীন ছিলেন।
সিঙ্গাপুরের করোনা টাস্কফোর্সের এক শীর্ষ কর্মকর্তা সোমবার জানিয়েছেন, ঘণবসতিপূর্ণ আবাসন এলাকাতে করোনার উপসর্গহীন সংক্রমণের ঘটনা ঘটেছে তাদের দেশে।