বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় দফা ব্যাপক সংক্রমণের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। শুক্রবার (১২ জুন) ভারতে করোনায় রেকর্ড সংখ্যক মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন। এছাড়া ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রের একাধিক অঙ্গরাজ্যের হাসপাতালগুলোর বিছানা করোনা আক্রান্তদের দিয়ে পূর্ণ হতে শুরু করেছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, লকডাউনে বিপর্যস্ত অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে অনেক দেশ দ্রুত নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নেওয়ায় বিশ্বব্যাপী স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় দেশগুলোতে বর্ণবাদের বিরুদ্ধে চলা ব্যাপক বিক্ষোভ সমাবেশ করোনা সংক্রমণের ঝুঁকিকে বাড়িয়ে দিয়েছে।
চীনের রাজধানী বেইজিংয়ে দুজন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন বলে শুক্রবার জানানো হয়েছে। এর এক দিন আগে নগর কর্তৃপক্ষ স্কুল বন্ধের সময় বাড়িয়েছিল।
প্রায় ৭০ দিন পর ভারত চলতি সপ্তাহে অধিকাংশ গণপরিবহন ব্যবস্থা, অফিস ও শপিং মল খুলে দিয়েছে। তবে এর আগেই স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছিলেন, এই মুহূর্তে সরকারের এ ধরনের পদক্ষেপ করোনার সংক্রমণকে আরও বাড়িয়ে দেবে।
শুক্রবার ভারতের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে নতুন করে ১০ হাজার ৯৫৬ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এক দিনে দেশটিতে সর্বোচ্চ আক্রান্তের রেকর্ড এটি।
ইউরোপের অধিকাংশ দেশে করোনার নতুন সংক্রমণের হার কমে এসেছে। তবে যুক্তরাষ্ট্রে কৃষ্ণাঙ্গ জর্জ ফ্লয়েড হত্যার প্রতিবাদে ইউরোপের বড় শহরগুলোতে বর্ণবাদ বিরোধী বিক্ষোভে লক্ষাধিক মানুষ যোগ দেওয়ায় করোনায় নতুন সংক্রমণের ঝুঁকিকে বাড়িয়ে দিয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস ও অ্যারিজোনাসহ প্রায় ছয়টি রাজ্যের হাসপাতালগুলোর বিছানা করোনা রোগীদের দিয়ে পূর্ণ হতে যাচ্ছে। এরই মধ্যে মার্কিন অর্থনীতি চালু করতে সব নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের প্রস্তুতি চলছে। বৃহস্পতিবার আলবামা, ফ্লোরিডা, নর্থ ক্যারোলিনা, সাউথ ক্যারোলিনা, ওরিগন ও নেব্রাস্কাতে করোনায় রেকর্ড সংখ্যক মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক টেডরস আধানম বৃহস্পতিবার জেনেভায় এক অনুষ্ঠানে বলেছেন, করোনার ‘পুনরূত্থানের হুমকি বহাল থাকা অতিবাস্তব।’
তিনি বলেছেন, ‘আমাদেরকে আরও স্মরণ রাখতে হবে যে, ইউরোপে পরিস্থিতির উন্নতি ঘটতে থাকা সত্ত্বেও বৈশ্বিকভাবে এটি খারাপের দিকে যাচ্ছে…এই মহামারিকে পুরোপুরি পরাস্ত করতে আমাদের বৈশ্বিক সংহতি অব্যাহত রাখা প্রয়োজন।’