করোনা সংক্রমণের হটস্পট ঢাকা উল্লেখ করে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী মো. ফরহাদ হোসেন বলেন, এখানে আক্রান্তের হার ৭২ শতাংশ। এরপরেই রয়েছে চট্টগ্রাম। আর সারাদেশে ১৬ শতাংশ। এ জন্য ঢাকা এবং চট্টগ্রামকে অধিক গুরুত্ব দিয়ে জোনভিত্তিক লকডাউন কঠোরভাবে কার্যকর করা হবে।
শুক্রবার (১২ জুন) ছুটির দিনে সরকারের পাঁচজন মন্ত্রী, ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি এবং চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) মেয়র, মন্ত্রিপরিষদ সচিব এবং প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব অনলাইন বৈঠক করেন। বৈঠকে অধিক সংক্রমিত এলাকাগুলোতে কঠোর লকডাউন বাস্তবায়নে জোর দেওয়া হয়।
বৈঠক সূত্রে জানা যায়, আর গোটা দেশ লকডাউন নয়, অর্থনীতি বাঁচিয়ে অধিক সংক্রমিত ‘রেড জোনগুলোতে’ কঠোর লকডাউন বাস্তবায়নে সরকার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এর আগে দীর্ঘ সাধারণ ছুটি শেষে গত ৩১ মে থেকে ১৫ জুন পর্যন্ত সীমিত পরিসরে বিধি মেনে অফিস আদালত এবং গণপরিবহন চালু রাখার সিদ্ধান্তই নেয় সরকার। এই সিদ্ধান্তই বাস্তবায়ন হবে ১৫ জুনের পরেও। সরকার ফিরবে না আর দেশব্যাপী লকডাউনে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জীবন ও জীবিকা-দুটো নিয়েই এগোচ্ছেন। তিনি জোনভিত্তিক লকডাউনের সিদ্ধান্ত দিয়েছেন। এসব বিষয় আলোচনা হয় পাঁচ মন্ত্রীর বৈঠকে।
আরও পড়ুন: লকডাউন বাস্তবায়নে মন্ত্রীদের সঙ্গে অনলাইন বৈঠকে নাছির
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকের সভাপতিত্বে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, স্থানীয় সরকার মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম, জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী মো. ফরহাদ হোসেন ও আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক সভায় অংশ নেন।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপস, চসিক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন ছাড়াও মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিব ড. আহমেদ কায়কাউসসহ সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এতে যুক্ত ছিলেন।
এ বিষয়ে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বলেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ঘোষিত রেড জোন জায়গাগুলো লকডাউন থাকবে। এসব এলাকায় ১৪-২১ দিন এমন লকডাউন থাকবে। এই জোনগুলোতে স্পেশাল ট্রিটমেন্ট হবে। এলাকায় স্পেশাল কেয়ার থাকবে, যাতে মুভমেন্ট না থাকে। রেড জোনগুলোতে অফিস বন্ধ থাকবে।
তিনি বলেন, এসব এলাকায় কঠোরভাবে লকডাউন বাস্তবায়ন করা হবে। যাদের খাবার প্রয়োজন তাদের খাবার বিতরণ, সামর্থ্যবানদের কেনাকাটার ব্যবস্থা করা হবে। অ্যাম্বুলেন্স, ফায়ার সার্ভিসসহ জনসাধারণের প্রয়োজনীয় সব সুবিধা নিশ্চিত থাকবে।
আগামী ১৫ জুনের পর কী সিদ্ধান্ত হবে- প্রশ্নে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা যে সীমিত পরিসরে চলার ব্যবস্থা নিয়েছি আপাতত এ সিদ্ধান্ত থাকছে।
গ্রামেও মাস্ক পরতে হবে
ঢাকা শহরে ৯০-৯৫ শতাংশ মানুষ মাস্ক পরছে উল্লেখ করে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী বলেন, যারা পরছে না তাদের পরতে হবে। মাস্ক না পরলে ঝুঁকির মধ্যে থাকবে। গ্রামেও যেন মাস্ক পরে।
এ প্রসঙ্গে ফরহাদ হোসেন বলেন, দেখা যায় রিকশাচালকেরা মাস্ক পরছে না, তাদেরও পরতে হবে। মাস্ক পরে রিকশা চালানো হয়তো কঠিন, কিন্তু জীবন বাঁচানোর জন্য মাস্ক ব্যবহার করতে হবে।
জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা সব অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে দ্রুত কাজ করছি। মানুষ যেন সবাই মাস্ক পরে, অযথা যেন না বের না হয়।