প্রাণঘাতি করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে সরকার চট্টগ্রামসহ সারাদেশকে রেড, ইয়েলো ও গ্রিন জোনে ভাগ করে লকডাউন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সংক্রমণের মাত্রা বিবেচনায় চট্টগ্রাম সিটির ১০টি ওয়ার্ডকে ‘রেড জোন’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
রোববার (১৪ জুন) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে এই তিন জোনে করণীয় বিষয়গুলো নিয়ে একটি গাইডলাইন প্রকাশ করা হয়। এতে তিনটি জোনের জন্য অভিন্ন সাধারণ নিয়মাবলী ও পৃথক ১১টি করে নির্দেশনার কথা বলা হয়েছে।
সাধারণ ৭ নিয়ম
১. এলাকার সবাইকে বাধ্যতামূলক মাস্ক পরতে হবে, হাত ধোয়া, জীবাণুমুক্তকরণ ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে।
২. করোনা রোগ-সংক্রমণ শনাক্তকরণ, তাদের আইসোলেশন ও চিকিৎসা প্রদানের ব্যবস্থা করতে হবে।
৩. কন্টাক্ট ট্রেসিং ও তাদের কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করতে হবে।
৪. স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র, হাসপাতাল, জরুরি সেবামূলক প্রতিষ্ঠান খোলা থাকবে, অসুস্থ ব্যক্তি পরিবহনকারী ব্যক্তিগত গাড়ি ও অ্যাম্বুলেন্স কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে চলাচল করবে।
৫. সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান- স্কুল, কলেজ, কোচিং সেন্টার বন্ধ থাকবে।
৬. স্থানীয় প্রশাসনের অনুমতি ছাড়া জনগণ এক জোন থেকে অন্য জোনে যাতায়াত করতে পারবে না। প্রত্যেক এলাকায় সীমিত পরিমাণে প্রবেশ ও বহিরাগমন পয়েন্ট নির্ধারণ করে কঠোরভাবে জনগণের যাতায়াত নিয়ন্ত্রণ করবে।
৭. এসব কার্যক্রমের তদারকির জন্য কার্যকরি সামাজিক সম্পৃক্ততা এবং মাঠকর্মীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে।
রেড জোন:
১. স্বাস্থ্যবিধি মেনে বর্ধিত শিফটে কৃষিকাজ করা যাবে।
২. স্বাস্থ্যবিধি মেনে গ্রামাঞ্চলে কলকারখানা ও কৃষিপণ্য উৎপাদন কারখানায় কাজ করা যাবে, তবে শহরাঞ্চলে সব বন্ধ থাকবে।
৩. বাসা থেকেই অফিসের কাজ করবে।
৪. কোনো ধরনের জনসমাবেশ করা যাবে না। শুধু অসুস্থ ব্যক্তি হাসপাতালে যেতে পারবে।
৫. স্বাস্থ্যবিধি মেনে শুধু জরুরি প্রয়োজনে বাসা থেকে বের হতে পারবে। রিকশা, ভ্যান, সিএনজি ট্যাক্সি বা নিজস্ব গাড়ি চলাচল করবে না।
৬. সড়কপথ, নদীপথ ও রেলপথে জোনের ভেতরে কোরো যান চলাচল করবে না।
৭. জোনের ভেতর ও বাইরে মালবাহী জাহাজ শুধু চলাচল করতে পারবে।
৮. এই জোনের অন্তর্গত মুদি দোকান, ওষুধের দোকান খোলা থাকবে। রেস্টুরেন্ট ও খাবার দোকানে শুধু হোম ডেলিভারি সার্ভিস চালু থাকবে এবং বাজারে শুধু প্রয়োজনে যাওয়া যাবে। তবে শপিংমল, সিনেমা হল, জিম-স্পোর্টস কমপ্লেক্স, বিনোদনকেন্দ্র বন্ধ থাকবে।
৯. আর্থিক লেনদেন বিষয়ক কার্যক্রম, যেমন- টাকা জমাদান, উত্তোলন স্বাস্থ্যবিধি মেনে শুধুমাত্র এটিএম-এর মাধ্যমে করা যাবে।
১০. উক্ত এলাকার রোগীদের পর্যাপ্ত পরিমাণ নমুনা পরীক্ষা করতে হবে, শনাক্ত রোগীরা আইসোলেশনে (বাড়িতে/আইসোলেশন সেন্টারে) থাকবে।
১১. মসজিদ-উপাসনালয়ে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে ইবাদত করা যাবে।
ইয়েলো জোন:
১. স্বাস্থ্যবিধি মেনে কৃষিকাজ করা যাবে।
২. স্বাস্থ্যবিধি মেনে কলকারখানা ও কৃষিপণ্য উৎপাদন কারখানায় ৫০ শতাংশ কর্মী কাজ করবে এবং জনসংকীর্ণ কারখানাতে ৩৩ শতাংশ কর্মী বর্ধিত শিফটে কাজ করা যাবে।
৩. স্বাস্থ্যবিধি মেনে অফিসে ৫০ শতাংশ কর্মী কাজ করবে। বাকিরা বাসা থেকেই কাজ করবে।
৪. ৩০ জনের বেশি জনসমাবেশ করা যাবে না।
৫. স্বাস্থ্যবিধি মেনে শুধুমাত্র প্রয়োজনে বাসা থেকে বের হতে পারবে, রিকশা, ভ্যান, সিএনজি ট্যাক্সিতে একজন করে চলাচল করবে। নিজস্ব গাড়িতে চলাচল করা যাবে।
৬. সড়ক পথ, নদী পথ ও রেল পথে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাচল করা যাবে।
৭. জোনের ভিতরে ও বাইরে মালবাহী জাহাজ চলাচল করতে পারবে।
৮. এই জোনের অন্তর্গত মুদি দোকান, ওযুধের দোকান খোলা থাকবে, রেস্টুরেন্ট ও খাবার দোকানে শুধুমাত্র হোম ডেলিভারি সার্ভিস চালু থাকবে এবং বাজারে শুধুমাত্র নিত্য প্রয়োজনে যাওয়া যাবে। তবে শপিংমল, সিনেমা হল, জিম স্পোর্টস কমপ্লেক্স, বিনোদন কেন্দ্র বন্ধ থাকবে।
৯. আর্থিক লেনদেন বিষয়ক কার্যক্রম, যেমন- টাকা জমাদান, উত্তোলন স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত আকারে করা যাবে।
১০. উক্ত এলাকার রোগীদের পর্যাপ্ত পরিমাণ নমুনা পরীক্ষা করতে হবে, শনাক্ত রোগীরা আইসোলেশনে (বাড়িতে বা আইসোলেশন সেন্টারে) থাকবে। স্থানীয়ভাবে পর্যাপ্ত আইসোলেশনের ব্যবস্থা থাকবে।
১১. মসজিদ উপাসনালয়ে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে ইবাদত করা যাবে।
গ্রিন জোন:
১. স্বাস্থ্যবিধি মেনে কৃষিকাজ করা যাবে।
২. স্বাস্থ্যবিধি মেনে কলকারখানা ও কৃষি পণ্য উৎপাদন কাজ করা যাবে।
৩. স্বাস্থ্যবিধি মেনে অফিস খোলা থাকবে।
৪. ৩০ জনের বেশি জনসমাবেশ করা যাবে না।
৫. স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাচল করা যাবে। তবে প্রয়োজন ছাড়া কিংবা আড্ডা দেওয়ার জন্য বের হওয়া যাবে না।
৬. সড়ক পথ, নদী পথ ও রেল পথে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাচল করা যাবে।
৭. জোনের ভেতরে ও বাইরে মালবাহী জাহাজ চলাচল করতে পারবে।
৮. এই জোনের অন্তর্গত মুদি দোকান, ওষুধের দোকান, রেস্টুরেন্ট, চায়ের দোকান, সেলুন, বাজার ইত্যাদি স্বাস্থ্যবিধি মেনে খোলা রাখা যাবে। তবে শপিংমল, সিনেমা হল, জিম স্পোর্টস কমপ্লেক্স, বিনোদন কেন্দ্র বন্ধ থাকবে।
৯. আর্থিক লেনদেন বিষয়ক কার্যক্রম, যেমন- টাকা জমাদান, উত্তোলন স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত আকারে করা যাবে।
১০. উক্ত এলাকার রোগীর নমুনা পরীক্ষার সহজগম্যতা থাকতে হবে। শনাক্ত রোগীরা আইসোলেশনে (বাড়িতে বা আইসোলেশন সেন্টারে) থাকবে।
১১. মসজিদ উপাসনালয়ে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে ইবাদত করা যাবে।
জয়নিউজ/এসআই
