প্রাণঘাতি করোনাভাইরাসের প্রকোপ দিনের পর দিন বাড়ছে। এর মধ্যে সংক্রমণের ঝুঁকি হিসেবে নতুনভাবে যোগ হয়েছে করোনায় আক্রান্ত রোগীদের সন্ধান না পাওয়া। চট্টগ্রামে এখন পর্যন্ত তিনশ’র বেশি করোনা রোগীর সন্ধান পাচ্ছে না আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীসহ প্রশাসন।
নমুনা পরীক্ষায় পজিটিভ আসার পর লাপাত্তা হয়ে যাওয়া এসব রোগী করোনা বিস্তারে বড় ভূমিকা রাখছে বলে মনে করছেন চিকিৎসকরা। এ অবস্থায় নমুনা সংগ্রহের ক্ষেত্রে একাধিক মোবাইল নম্বর সংযুক্ত করার পাশাপাশি জাতীয় পরিচয়পত্রের কপি জমা দেওয়া বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
গত আড়াই মাসে চট্টগ্রামে করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছেন প্রায় সাড়ে ৫ হাজার। আর মারা গেছেন ১২৪ জন। কিন্তু করোনা পজিটিভ হওয়া রোগীদের মধ্যে তিনশ’র বেশি রোগীর কোনো হদিস পাচ্ছে না প্রশাসন। এর মধ্যে নগরেই লাপাত্তা হওয়া রোগীর সংখ্যা দুশ’র বেশি।
আরও পড়ুন: করোনা পরীক্ষায় লাগবে জাতীয় পরিচয়পত্র
করোনা পজিটিভ হওয়া রোগীদের হাসপাতালে পাঠানো থেকে শুরু করে আবাসস্থল লকডাউনের দায়িত্ব পালন করতে হয় সংশ্লিষ্ট থানাগুলোকেই। কিন্তু ভুল মোবাইল নম্বরের পাশাপাশি পুরো ঠিকানার অভাবে এসব রোগীর ব্যাপারে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া যাচ্ছে না।
সিএমপির অতিরিক্ত উপ কমিশনার শাহ মো. আবদুর রউফ বলেন, অনেকেই মোবাইল নম্বরটা ভুল দিচ্ছেন অথবা বন্ধ করে রাখছেন। আমরা যখন ঠিকানা খুঁজতে যাই, তখন সেটা খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
চিকিৎসকদের মতে, বতর্মানে চট্টগ্রাম সামাজিক সংক্রমণের চূড়ান্ত পর্যায়ে অবস্থান করছে। প্রতিদিনই দেড়শ’ থেকে দুশ’ রোগীর করোনা পজিটিভ ফলাফল আসছে। আর পালিয়ে থাকা করোনা রোগীরাই বড় ধরনের ভূমিকা রাখছে সংক্রমণ বিস্তারে।
চট্টগ্রাম ইম্পেরিয়াল হাসপাতালের সমন্বয়কারী ডা. এ কে এম আরিফ উদ্দিন আহমেদ বলেন, যাদের জ্বর-সর্দি নেই, তারা উপসর্গহীনভাবে এ রোগ আক্রান্ত বা বহন করছে। তারা যদি অবাধে সমাজে চলাফেরা করতে থাকেন তাহলে এটা অবশ্যই ক্ষতিকর হবে।
চট্টগ্রামের সিভিল সার্জনও স্বীকার করলেন পালিয়ে থাকা রোগীরা সংক্রমণ ছড়াচ্ছে। এ অবস্থায় নমুনা সংগ্রহের ক্ষেত্রে জাতীয় পরিচয়পত্র জমা দেওয়া বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
সিভিল সার্জন ডা. শেখ ফজলে রাব্বি বলেন, এভাবে রোগী খোঁজা কষ্টসাধ্য ব্যাপার। অনেক সময়েই খুঁজেও করোনা রোগীকে পাওয়া যাচ্ছে না। এর ফলে সংক্রমণ চারদিকে ছড়িয়ে পড়ছে। তাই এখন থেকে নমুনা দেওয়ার সময়ে একাধিক মোবাইল ফোন নম্বর এবং ভোটার আইডি কার্ড দিতে হবে।