দীর্ঘ দিন ধরে চীন-ভারতের লাদাখ সীমান্তে দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা চলছে। গত কয়েক মাস ধরে দুই দেশই অস্ত্র ও সেনা মজুদ করেছে সেখানে। এর মধ্যে সোমবার (১৫ জুন) রাতে সেখানে দুই পক্ষের সংঘর্ষ ঘটে।
এতে প্রথমে বলা হয়েছিল ভারতের তিন সেনা নিহত হয়েছে। কিন্তু মঙ্গলবার (১৬ জুন) জানানো হয়েছে, ভারতে ২০ সেনা নিহত হয়েছে। অন্যদিকে চীনের ৪০ জনেরও বেশি সেনা হতাহত হয়েছে বলে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে দাবি করা হয়েছে।
সংঘাতে জড়ানোয় উদ্বেগ প্রকাশ করে দুই দেশকেই সর্বোচ্চ সংযম দেখানোর আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তনিও গুতেরেস।
মঙ্গলবার নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ে জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তনিও গুতেরেস পক্ষে তাঁর মুখপাত্র এরিক কানেকো বলেন, আমরা ভারত ও চীনের মাঝামাঝি সীমান্ত লাইন অব অ্যাকচুয়াল কন্ট্রোলে (এলএসি) সংঘর্ষ ও হতাহতের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করছি এবং উভয়পক্ষকে সর্বোচ্চ সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানাচ্ছি। তবে এটা ইতিবাচক যে, উভয় দেশ উত্তেজনা নিরসনে উদ্যোগ নিয়েছে।
তবে এসব আহ্বান উপেক্ষা করে চীন-ভারত যদি বড় কোনো সংঘাতে দিকে অগ্রসর হয় তাহলে তার প্রভাব পড়বে গোটা দুনিয়ায়। দুই দেশই পরমাণু অস্ত্র সমৃদ্ধ। দুই দেশের হাতেই রয়েছে ভয়ঙ্কর নানা মারাণাস্ত্র।
প্রতিরক্ষা বাজেট: প্রতিরক্ষা খাতে চীনের বাজেট ২ হাজার ৩৭০ কোটি ডলার এবং ভারতের ৬১০ কোটি ডলার।
সক্রিয় সেনাসদস্য: ১৩৮টি দেশের মধ্যে পিআরডাব্লিউ ইনডেক্সে তৃতীয় স্থানে থাকা চীনের মোট ২১ লাখ ২৩ হাজার সেনাসদস্য রয়েছে, ভারতের রয়েছে ১৪ লাখ ৪৪ হাজার সেনাসদস্য। তবে রিজার্ভ সৈন্যের সংখ্যায় এগিয়ে আছে ভারত। চীনের পাঁচ লাখ ১০ হাজার রিজার্ভ সেনা রয়েছে। বিপরীতে ভারতে এই সংখ্যা ২১ লাখ।
যুদ্ধবিমান: চীনের যুদ্ধবিমানের সংখ্যা ভারতের দ্বিগুণেরও বেশি। চীনের ১ হাজার ২৩২টি আর ভারতের ৫৩৮টি।
এয়ারক্রাফট: চীনের ৩ হাজার ২১০টি এয়ারক্রাফটের বিপরীতে ভারতের রয়েছে ২ হাজার ১২৩টি এয়ারক্রাফট।
ট্যাঙ্ক: তবে ট্যাঙ্কের সংখ্যায় চীনের থেকে অনেক এগিয়ে ভারত। চীনের আছে ৩ হাজার ৫০০টি ট্যাঙ্ক আর ভারতের ৪ হাজার ২৯২টি।
যুদ্ধজাহাজ: এখানেও এগিয়ে চীন। দেশটির ৭৭৭টি যুদ্ধজাহাজ রয়েছে। আর ভারতের রয়েছে ২৮৫টি যুদ্ধজাহাজ।
হেলিকপ্টার: চীনের আছে ৯১১টি হেলিকপ্টার আর ভারতের ৭২২টি।
রকেট প্রজেক্টর: এক্ষেত্রে চীন প্রায় দশগুণ এগিয়ে। চীনের ২ হাজার ৬৫০, ভারতের ২৬৬।
সাঁজোয়া যান: চীনের সাঁজোয়া যানবাহনের সংখ্যা ৩৩ হাজার, ভারতের ৮ হাজার ৬৮৬।
স্বয়ংক্রিয় আর্টিলারি: এক্ষেত্রে অবশ্য চীনের ধারেকাছেও নেই ভারত। চীনের আছে ৩ হাজার ৮০০, ভারতের মাত্র ২৩৫।
ফিল্ড আর্টিলারি: এখানে অবশ্য ভারত কিছুটা এগিয়ে। চীনের ৩ হাজার ৮০০-র বিপরীতে তাদের রয়েছে ৪ হাজার ৬০টি ফিল্ড আর্টিলারি।
সাবমেরিন: সাবমেরিনের সংখ্যার দিক থেকেও ভারত অনেক পিছিয়ে। চীনের ৭৪টির বিপরীতে ভারতের আছে ১৬টি সাবমেরিন।
বিমানবাহী জাহাজ: চীনের ২টি, ভারতের ১টি।
ফ্রিগেট: চীনের ৫২, ভারতের তার ঠিক চার ভাগের এক ভাগ, অর্থাৎ ১৩টি।
ডেস্ট্রয়ার: চীনের ৩৬টি, অন্যদিকে ভারতের ১০টি।
রণতরি: রণতরী চীনের ৫০টি, ভারতের ১৯টি।
নৌবন্দর এবং টার্মিনাল: চীনের ২২টির বিপরীতে ভারতের রয়েছে মোট ১৩টি বন্দর ও টার্মিনাল।
উপকূলীয় টহল: চীনের ২২০, ভারতের ১৩৯।
বিমানবন্দর: চীনের আছে মোট ৫০৭টি বিমানবন্দর আর ভারতের ৩৪৭টি।