ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে গত মাস থেকে করোনাভাইরাসের চিকিৎসা শুরু হয়েছে। এই এক মাসে চিকিৎসকদের থাকা-খাওয়া বাবদ খরচ হয়েছে ২০ কোটি টাকা। অর্থ মন্ত্রণালয়ের একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র এই তথ্য নিশ্চিত করেছে।
এই বিল দেখে অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের থাকা-খাওয়া বাবদ খরচ এতো হলে করোনা চিকিৎসা কিভাবে হবে? ভবিষ্যতে এতো খরচ হলে তা আর বহন করা যাবে না বলে ইতোমধ্যে অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিবকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব বিষয়টি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর মূখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউসের সঙ্গেও যোগাযোগ করেছেন বলে একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে। এই পরিপ্রেক্ষিতে ভবিষ্যতে সরকারি যে ডরমেটরি আছে, সেই ডরমেটরিতে চিকিৎসকদের রাখার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বলেও সূত্র নিশ্চিত করেছে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সূত্রে জানা গেছে, কোভিড-১৯ পরীক্ষার জন্য ঢাকা মেডিকেলের একাংশকে নির্ধারণ করার বিষয়টি শুরু থেকেই ঢাকা মেডিকেলের চিকিৎসকরা বিরোধিতা করেছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় ও কার্যালয়ের উদ্যোগে ঢাকা মেডিকেলের নতুন বর্ধিতাংশকে কোভিড-১৯ চিকিৎসার জন্য বিশেষায়িত করা হয়। সেসময় পাঁচশ জন চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের এখানের দায়িত্বে দেওয়া হয়।
জানা গেছে, একজন চিকিৎসক মাত্র ৭ দিন ডিউটি করে বাকি ২১ দিন হোটেলে থাকেন। এর আগে চিকিৎসকদের রাখার জন্য ঢাকার একটি চার তারকা হোটেল নেওয়া হয়। এর ফলে এক মাসে তাঁদের বিল এসেছে প্রায় ২০ কোটি টাকা। এর মধ্যে সাড়ে ৫ কোটি টাকা শুধু খাবারের বিল।
যদিও প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা ছিল, ৭ দিন ডিউটি এবং ২১ দিন ছুটির নিয়মটি বদল করতে হবে। বরং ১৪ দিন ডিউটি করে পরের ১৪ দিন ছুটির নিয়ম প্রবর্তন করতে হবে। কিন্তু ঢাকা মেডিকেলের চিকিৎসকরা ৭ দিন ডিউটি করে ২১ দিনের ছুটি ভোগ করছেন।
এ সময় তাঁদের হোটেলের বিল এসেছে ১২ কোটি টাকা এবং খাবারের বিল এসেছে সাড়ে ৫ কোটি টাকা। যখন সরকার করোনা মোকাবিলায় হিমশিম খাচ্ছে। সেইসময়ে এমন ব্যয় অযাচিত এবং অর্থ মন্ত্রণালয় এটা নিয়ে আপত্তি জানিয়েছে বলেও জানা গেছে।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের সূত্র বলছে, এবার তাদেরকে বিল দেওয়া হলেও ভবিষ্যতে এমন বিলাসিতা কখনোই গ্রহণযোগ্য হবে না।