চট্টগ্রাম নগর ও উপজেলায় গণপরিবহন চালুর পর থেকে যাত্রীদের কাছ থেকে আদায় করা হচ্ছে কয়েকগুণ বাড়তি ভাড়া। কিন্তু ভাড়া বাড়লেও স্বাস্থ্যবিধি মানার কোনো বালাই নেই। চালক ও হেলপাররা ইচ্ছেমতো গাদাগাদি করেই যাত্রী পরিবহন করছে, কোনোকিছুর তোয়াক্কা না করেই।
বিশেষ করে সকালে অফিস টাইমে ও বিকেলে ফেরার সময়ে গণপরিবহনগুলো থাকে যাত্রীতে ঠাসা। প্রশাসনের পক্ষ থেকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ব্যাপারে নির্দেশনা দিলেও নিয়মিত মনিটরিংয়ের অভাবে তা শুধুই কাগজে–কলমে রয়ে গেছে। এ যেন কাজীর গরু কেতাবে আছে, গোয়ালে নেই অবস্থা।
অভিযোগ রয়েছে, যাত্রী বেশি নেওয়ার জন্য প্রতিটি রুটে নির্দিষ্ট সময় পর পর গাড়ি ছাড়ছেন চালকরা। এতে রাস্তায় গণপরিবহন কমে যায়। তাই যাত্রীদেরও বাধ্য হযে বেশি ভাড়া দিয়ে গাদাগাদি করেই গন্তব্যে যাচ্ছেন। নগরের ফ্রি পোর্ট এলাকা থেকে কালুঘাট, বহদ্দারহাট থেকে নিউমার্কেট-শাহ আমানত সেতুতে চলাচলকারী গণপরিবহনে ভীড় সবচেয়ে বেশি।
আরও পড়ুন: স্বাস্থ্যবিধি না মেনেই চট্টগ্রামে চলছে গণপরিবহন
এছাড়া মুরাদপুর থেকে অক্সিজেন-হাটহাজারী-রাউজান, কাপ্তাই রাস্তার মোড় থেকে রাঙ্গুনিয়া এবং দক্ষিণ চট্টগ্রামের সব উপজেলাগামী গণপরিবহনে স্বাস্থ্যবিধি মানা ছাড়াই চলছে গণপরিবহন।
এদিকে গণপরিবহনে ভাড়া নিয়েও চলছে নৈরাজ্য। সরকার স্বাস্থ্যবিধি মানার শর্তে ৬০ ভাগ ভাড়া বাড়ালেও গণপরিবহন ইচ্ছেমতো ভাড়া আদায় করছে। উপরন্তু স্বাস্থ্যবিধি মানার কোনো বালাই নেই।
দক্ষিণ চট্টগ্রামের পটিয়া থেকে নগরে যাতায়াতকারী আনিসুর ইসলাম জানান, প্রতিদিন আগে ৬০ থেকে ৭০ টাকা মধ্যে যাতায়াত করতে পারতেন। করোনাকালে এ পরিবহন নৈরাজ্যে প্রতিদিন খরচ হচ্ছে ১৫০ থেকে ১৮০ টাকা। চাকরি বাঁচাতে বাধ্য হয়ে যাতায়াত করতে হয়। প্রতিবাদ করলে হেনস্থার শিকার হতে হয়।
পোশাকশ্রমিক আঞ্জুম আরা বলেন, প্রতিদিন সকালে ইপিজেডে কাজে যেতে আর ফেরার সময় বাড়তি ভাড়াও দিতে হয়, আবার গাদাগাদি করে ফিরতে হয়। রাস্তায় মানুষ অনুপাতে গণপরিবহন থাকে না তাই আমরাও বাধ্য হই ঝুঁকি নিতে।
চট্টগ্রাম পরিবহন মালিক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক মনজুরুল আলম মনজু বলেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনেই যানবাহন চালানোর জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, এটা মানতে চালক ও হেলপাররা বাধ্য।
তিনি বলেন, সরকার নির্ধারিত ভাড়ার বেশি আদায় করা যাবে না। সবাই নয়, হয়তো কেউ কেউ ভাড়া বেশি আদায় করছে। তবে অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ ব্যাপরে সিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ট্রাফিক) এস এম মোশতাক আহমেদ খান জয়নিউজকে বলেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে গণপরিবহন চলাচল করা বাধ্যতামূলক। নিয়মের বাইরে যাত্রী পরিবহন না করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পরিবহন মালিক, শ্রমিক সংগঠনগুলোর সঙ্গে কয়েক দফায় বৈঠকও করা হয়েছে। তারপরও নিয়ম না মানলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।