ব্যক্তিগত সহকারীর হাতে হত্যার শিকার হন পাঠাওয়ের সহপ্রতিষ্ঠাতা ফাহিম সালেহ। শুক্রবার (১৭ জুলাই) পুলিশের বরাত দিয়ে এমনটাই জানিয়েছে নিউইয়র্ক টাইমস।
পুলিশ জানিয়েছে, ফাহিম তার সহকারী টাইরিস ডেভন হাসপিলের কয়েক হাজার ডলার চুরির বিষয়টি ধরে ফেলেছিলেন। তিনি অবশ্য বিষয়টি পুলিশকে জানাননি। বরং যে পরিমাণ অর্থ টাইরিস চুরি করেছিলেন, তা ফেরত দিতে বলেছিলেন ফাহিম। এর জন্য একটি উপায়ও বাতলে দিয়েছিলেন তিনি।
তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, ফাহিম সালেহ সোমবার হত্যার শিকার হন। পুলিশ তার মৃতদেহ পাওয়ার একদিন আগে হত্যাকারী অনলাইনে হত্যাকাণ্ডের প্রমাণ মুছে ফেলতে কিছু সরঞ্জাম ও স্যানিটাইজার অনলাইনে কিনতে ফাহিমের ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করেছিলেন। পরের দিন মৃতদেহ খণ্ড-বিখণ্ড করতে এবং প্রমাণ মুছে ফেলতে ফাহিমের অ্যাপার্টমেন্টে ফিরে আসে সে।
লিফটের মধ্যে থাকা সিকিউরিটি ক্যামেরায় দেখা গেছে, অ্যাপার্টমেন্টের লিফটে ফাহিমের সঙ্গেই প্রবেশ করেছিল সম্পূর্ণ কালো পোশাক পরিহিত হত্যাকারী। লিফটে সে ফাহিমের সঙ্গে কিছু কথাবার্তাও বলেছিল। তবে এর অডিও রেকর্ড পাওয়া যায়নি। লিফট থেকে বের হওয়ার পর ফাহিমের পেছনে আসা হত্যাকারী তার হাত উঁচু করে। এরপরই ফাহিম মেঝেতে পড়ে যান।
পুলিশের ধারণা, হত্যাকারী ট্যাজার গান দিয়ে বৈদ্যুতিক শক ছুড়ে মারায় জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছিলেন ফাহিম। লিফটের দরজা এরপর বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এরপরের ঘটনাগুলোর ভিডিও রেকর্ড পাওয়া যায়নি। পরে তাকে অ্যাপার্টমেন্টের ভেতরে নিয়ে ছুরিকাঘাত করা হয় বলে অনুমান পুলিশের।
বৃহস্পতিবার নিউইয়র্ক সিটির ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক জানিয়েছেন, গলা ও কাঁধে একাধিক ছুরিকাঘাতে নিহত হয় ফাহিম।
গোয়েন্দা কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মৃতদেহের রক্ত জমাট বাঁধা পর্যন্ত অপেক্ষা করেছিল হত্যাকারী। পরে ইলেকট্রিক করাত দিয়ে মৃতদেহ খণ্ড-বিখণ্ড করে সে। শরীরের বিভিন্ন অংশ ভারী প্লাস্টিকের ব্যাগে ভরার সময় লবি থেকে বা বাইরে থেকে কেউ ফাহিমের খোঁজ করতে আসেন। এ সময় পরিকল্পনা অনুযায়ী হত্যাকারী তার কাজ শেষ করতে পারেনি। হত্যাকাণ্ডের প্রমাণ পুরোপুরি মুছে ফেলতে গিয়েও ব্যর্থ হয় সে।
লিফটের মধ্যে থাকা সিকিউরিটি ক্যামেরায় ধারণ করা ভিডিওতে দেখা গেছে, হত্যাকারী তার উপিস্থিতির প্রমাণ মুছে ফেলতে ব্যাটারিচালিত পোর্টেবল ভ্যাকুয়াম ক্লিনার ব্যবহার করেছে।