হাটহাজারীর আলীপুর রহমানিয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজের বিজ্ঞান ব্লক ভবনের উদ্বোধন করা হয়েছে। এ উপলক্ষে বুধবার (২২ জুলাই) ভারতীয় হাই কমিশন একটি ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
ভারতীয় রাষ্ট্রদূত শ্রীমতি রিভা গাঙ্গুলী দাসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ ও বিশেষ অতিথি ছিলেন আনিসুল ইসলাম মাহমুদ এমপি।
তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, প্রকৃতপক্ষে যখনই বাংলাদেশ এবং ভারতের সম্পর্কের কথা আসে, তখনই আমাদের কৃতজ্ঞতা জানাতে হয় আমাদের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে ভারতের ঐতিহাসিক ভূমিকার জন্য, ভারত সরকারের সহায়তা, ভারতের জনগণের অকুণ্ঠ সমর্থন এবং সহায়তার জন্য। ভারতের অনেক সেনা সদস্য আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধে প্রাণ দিয়েছিল, আমি তাদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাই।
ভারত সরকার বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর থেকে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে অব্যাহতভাবে ভূমিকা রেখে চলেছে, বর্তমানে আমাদের দুই দেশের মধ্যে বহুমাত্রিক সহযোগিতা চলমান আছে।- যোগ করেন মন্ত্রী।
স্কুল প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এই স্কুলের ভবন নির্মাণের মধ্যদিয়ে সেই স্কুলের শিক্ষার্থীরা যেমন উপকৃত হবে, পুরো জনপদও উপকৃত হবে। বিশেষ করে বিজ্ঞান ভবন নির্মাণের পাশাপাশি কম্পিউটারসহ অন্যান্য শিক্ষাসামগ্রীর জন্যও ৭ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। সুতরাং এটি স্কুলের উন্নয়ন এবং স্থানীয় শিক্ষার্থীদের শিক্ষার মান উন্নয়ন করার ক্ষেত্রেও অত্যন্ত ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে।
ভারতীয় রাষ্ট্রদূত শ্রীমতি রিভা গাঙ্গুলী দাস বলেন, বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক আজ এক নতুন উচ্চতায় পৌঁছে গেছে। উভয় দেশ বিস্তৃত ক্ষেত্রজুড়ে একে অন্যের প্রতি সহযোগিতা প্রসারিত করেছে। সরকারি পর্যায়ে মিথস্ক্রিয়া ছাড়াও, ভারত ‘হাই ইমপ্যাক্ট কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট’- এর মাধ্যমে সামাজিক ও মানবিক উন্নয়নের দিকগুলি অন্তর্ভুক্ত করে বিভিন্ন সক্ষমতা বৃদ্ধি প্রকল্প গ্রহণ করছে, প্রত্যক্ষভাবে যার সুফল পাচ্ছে বাংলাদেশের স্থানীয় জনগণ। আমরা চট্টগ্রামের হাটহাজারী আলিপুর রহমানিয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজের সায়েন্স ব্লক ভবন নির্মাণে সহযোগিতা করতে পেরে অত্যন্ত আনন্দিত।
সংসদ সদস্য আনিসুল ইসলাম মাহমুদ এমপি বলেন, আশা করি ভবিষ্যতে ভারতের পক্ষ থেকে এই ধরণের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে। আমি হাটহাজারীবাসীর পক্ষ থেকে ভারত সরকার ও ভারতীয় হাই কমিশনকে কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।
হাটহাজারীর রহমানিয়া স্কুল ও কলেজের বিজ্ঞান ব্লক ভবনের পাঁচ তলা বিশিষ্ট ভবনের নিচতলা নির্মাণের জন্য ২০১৭ সালে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। প্রকল্পটি ভারত সরকারের উচ্চ-প্রভাবশালী সামাজিক উন্নয়ন প্রকল্প (এইচআইসিডিপি)-এর আওতায় অর্থায়ন করা হয় যার মোট ব্যয় বাংলাদেশি মুদ্রায় ৫১ লাখ ৪২ হাজার ৮৪৫ টাকা।
এইআইসিডিপি-র আওতায়, ভারত সরকার বিভিন্ন সক্ষমতা বৃদ্ধিকারী প্রকল্পে সহায়তা প্রদান করে থাকে, যা স্থানীয় জনগোষ্ঠীর জন্য সরাসরি উপকারী এবং ইতিবাচক প্রভাব বিস্তার করতে সক্ষম। অনুদান তহবিলের অধীনে শিক্ষা, তথ্যপ্রযুক্তি, স্বাস্থ্য, যাদুঘর পুনরুদ্ধার, সাংস্কৃতিক ও ঐতিহ্য কাঠামো, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, নগর উন্নয়ন ইত্যাদি বিভিন্ন ক্ষেত্রে এই উন্নয়ন প্রকল্পগুলি বাস্তবায়ন করা হয়েছে।
অতিতে ভারত সরকার চট্টগ্রাম অঞ্চলে থিয়েটার ইনস্টিটিউট চট্টগ্রাম (টিআইসি) মিলনায়তনের সংস্কার ও উন্নয়ন কার্যক্রম, বাঁশখালী উপজেলায় গভীর নলকূপ স্থাপন; চাঁদপুরের ফরক্কাবাদ ডিগ্রি কলেজ ও সিংড়া রাম কানাই উচ্চ বিদ্যালয়, আনোয়ারা’র একাডেমিক ভবন নির্মাণ, ইত্যাদি কাজে সহায়তা প্রদান করেছে।