নগর অন্ধকারে ডুবে থাকে না উল্লেখ করে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেছেন, মেয়র পদে দায়িত্ব পালনকালীন সময়ে নাগরিক সেবাবৃদ্ধিতে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনায় নাগরিক প্রত্যাশা পূরণে পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করেছি। এই নগর অন্ধকারে ডুবে থাকে না, এটাই আমার বড় অর্জন।
শনিবার (২৫ জুলাই) সকালে আন্দরকিল্লাস্থ পুরাতন নগর ভবনে চসিক বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে এক সমন্বয় সভা হয়। কেবি আবদুচ ছাত্তার মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত সভায় মেয়র এসব কথা বলেন।
মেয়র বলেন, সিটি করপোরেশনের ঠিকাদারদের প্রায় ১৮১ কোটি টাকা এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতাসহ প্রায় ৩শ কোটি টাকার দায়-দেনার ভার কাঁধে নিয়ে আমি দায়িত্ব গ্রহণ করেছি। ধীরে ধীরে এই সংকট কাটিয়ে চসিককে স্বাবলম্বী করেছি। আমি বিশ্বাস করি, স্বদিচ্ছা থাকলে কঠিনকে জয় করা কোনো কঠিন কাজ নয়।
তিনি বলেন, করপোরেশনের স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাতে বছরে প্রায় ২৫ থেকে ৩০ কোটি টাকা ভর্তুকি দেওয়াসহ দু’টি বিভাগকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে দেওয়া হয়েছিল। তা সত্ত্বেও নগরবাসীর প্রত্যাশা অনুযায়ী পরিচ্ছন্নতা, উন্নয়ন, আলোকায়নের সাথে সাথে স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাতের পরিকল্পিত উন্নয়ন করার চেষ্টা করেছি।
‘পরিবেশ উন্নয়ন ও স্বাস্থ্যসম্মত নগরের স্বার্থে রাতে আবর্জনা অপসারণ, নগরের প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক মোড়কে দৃষ্টিনন্দন ও সবুজায়ন এবং বিলবোর্ডমুক্ত নগরী উপহার দিয়েছি।’
মেয়র আক্ষেপ করে বলেন, করোনার কারণে সারাদেশের মতো নগরের উন্নয়নকাজে ধীরগতি হয়েছে। তবে সংশ্লিষ্ট সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় চট্টগ্রামকে নান্দনিক, গ্রিন ও ক্লিন সিটিতে উন্নীতকরণের যে প্রয়াস আমি হাতে নিয়েছি, তা পরবর্তী নেতৃত্ব অব্যাহত রাখবে।
এ সময় মেয়র করোনার দুঃসময়ে চসিকের বিদ্যুৎকর্মীরা ঝুঁকি নিয়ে রাস্তায় আলোকায়নের কাজ চালিয়ে যাওয়ায় তাদের ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, আপনাদের দুরদর্শী কর্মক্ষমতায় করোনার সময়েও চসিকের সড়কবাতি সচল ছিল। বর্তমানে ভারী বর্ষায়ও জনগণ স্বাচ্ছন্দে রাস্তায় চলাফেরা করতে পারছে। প্রধান প্রধান সড়ক ও অলি-গলিতে আলোকায়ন এখন চসিকের অন্যতম সেবা হয়ে দাঁড়িয়েছে। আগামীতেও এমন কর্মদক্ষতা অব্যাহত রাখার জন্য মেয়র তাদের প্রতি আহ্বান জানান।
বিদ্যুৎ বিভাগে কর্মরত কর্মচারীদের হাতে চসিকের পরিচয় পত্র ও মাস্ক তুলে দিয়ে সিটি মেয়র বলেন, ইদানিং লক্ষ্য করা যাচ্ছে চসিকের বিদ্যুৎ লাইন হতে অসাধু একটি চক্র অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ নিয়ে এর অপব্যবহার করছে। এই বিষয়ে দায়িত্বপ্রাপ্তদের সতর্ক থেকে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থাগ্রহণ করতে হবে। এসময় বিদ্যুৎকর্মীরা যাতে কোনো ধরনের সমস্যায় না পড়ে সেজন্য চসিকের দেওয়া পরিচয়পত্র সার্বক্ষণিক সঙ্গে রাখার নির্দেশ দেন মেয়র।
উল্লেখ্য, ১৯৯৪ সালের আগে চসিকের আওতাধীন ৪১টি ওয়ার্ডের মধ্যে মাত্র ১৮টি ওয়ার্ড এলাকায় সড়কবাতির ব্যবস্থা ছিল। পরবর্তীতে ৪১টি ওয়ার্ড এলাকায় আলো সেবা প্রদান কার্যক্রম পর্যায়ক্রমে সম্প্রসারিত হয়। যার সংখ্যা বর্তমানে সোডিয়াম ও এলইডি বাতিসহ ৫১ হাজার ৫ শত ৭৩টি।
সমন্বয় সভায় মেয়রের একান্ত সচিব মো. আবুল হাশেম, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী ঝুলন কান্তি দাশ, সহকারী প্রকৌশলী রেজাউল বারী, আনোয়ারুল হক চৌধুরী, সালমা বেগম ও সিবিএ’র জাহেদুল আলম চৌধুরী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।