১৯৭১- পরাধীনতার শিকল ভেঙে বীর বাঙালির বিজয়ের বছর। সেই উত্তাল একাত্তরেই জন্ম তাঁর। জন্মটাও সাধারণ কোনো ঘরে নয়। যে ‘বীর’ না থাকলে বাংলাদেশ স্বাধীন হতো না, যে সাহসী নারী না থাকলে স্বাধীন দেশের অর্থনীতি মজবুত হতো না, সেই পরিবারেই জন্ম তাঁর।
এতক্ষণ যাঁর কথা বলছিলাম তিনি সজীব ওয়াজেদ জয়। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দৌহিত্র এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে জয়। যাঁর ৫০তম জন্মদিন আজ (২৭ জুলাই)।
মাতামহ বাংলাদেশের স্বাধীনতায় নেতৃত্ব দিয়েছেন, পেয়েছেন হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালির খেতাব। আর যোগ্য পিতার যোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী হয়ে বদলে দিয়েছেন পুরো দেশকে।
পরমাণুবিজ্ঞানী এম ওয়াজেদ মিয়া ও শেখ হাসিনার প্রথম সন্তান জয়। তাঁর এই ‘জয়’ নামটিও রাখেন নানা শেখ মুজিবুর রহমান।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু খুন হলে মা-বাবার সঙ্গে বেলজিয়ামের ব্রাসেলস চলে যান জয়। এরপর বাবার কর্মস্থল জার্মানি হয়ে চলে যান ভারতে। তাঁর শৈশব-কৈশোর কাটে ভারতেই।
ভারেতের নৈনিতালের সেন্ট জোসেফ কলেজে লেখাপড়ার পর যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব টেক্সাস অ্যাট আর্লিংটন থেকে কম্পিউটার সায়েন্সে স্নাতক ডিগ্রি নেন জয়। পরে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে লোক প্রশাসনে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন।
২০০২ সালের ২৬ অক্টোবর তিনি ক্রিস্টিন ওয়াজেদকে বিয়ে করেন জয়। তাঁদের সন্তানের নাম সোফিয়া ওয়াজেদ।
২০০৭ সালে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম থেকে আইটি বিশেষজ্ঞ হিসেবে ‘ইয়াং গ্লোবাল লিডার’ অ্যাওয়ার্ড লাভ করেন জয়। ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বরের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নির্বাচনি ইশতেহারে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ এর ধারণাটিও তাঁর। জয়ের এই ব্যতিক্রমী ভাবনা দেশজুড়ে দারুণ প্রভাব ফেলে। যেটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিশাল জয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল বলে মত রাজনীতি বিশেষজ্ঞদের।
২০১০ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি রংপুর জেলা আওয়ামী লীগের প্রাথমিক সদস্যপদ নেন জয়। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের পক্ষে সরাসরি প্রচারণায় অংশ নেন জয়। বর্তমানে তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন করছেন।
পর্দার অন্তরালে থাকতেই যেন ভালবাসেন জয়। ভালবাসেন দেশের মানুষের জন্য কাজ করতে। মায়ের পাশে থেকে গোটা দেশে তথ্যপ্রযুক্তির বিপ্লব ঘটিয়েছেন তিনি।
দেশ গঠনে তরুণদের মতামত ও পরামর্শকে শুরু থেকেই গুরুত্ব দিয়ে আসছেন জয়। এজন্যই তিনি চালু করেন ‘লেটস টক’ ও ‘পলিসি ক্যাফে’ নামের দুটি প্রোগ্রাম। যে প্রোগ্রামগুলো ইতোমধ্যেই দেশজুড়ে দারুণ সাড়া ফেলেছে।
তরুণ উদ্যোক্তা ও তরুণ নেতৃত্বকে প্রশিক্ষিত করতে তিনি সূচনা করেছেন তরুণদের বৃহত্তম প্ল্যাটফরম ‘ইয়াং বাংলা’। সবমিলিয়ে জয়ের নামের আগে এখন জুড়ে গেছে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশের স্থপতি’। আর এভাবেই জয়ী হয়ে চলেছেন সজীব ওয়াজেদ জয়।
জয়নিউজ