বেসরকারি ম্যাক্স হাসপাতালে অবহেলা ও ভুল চিকিৎসায় শিশুকন্যা রাফিদা খান রাইফার মৃত্যুর তিন মাস পূর্ণ হলো আজ (২৯ সেপ্টেম্বর)। গত ২৯ জুন মাত্র দুই বছর চার মাস বয়সে মৃত্যুবরণ করে সাংবাদিক কন্যা রাইফা। ফুটফুটে এই শিশুর মৃত্যুতে সারাদেশে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। বিক্ষুব্ধ হয় দেশের সাংবাদিক সমাজ। শোকাহত হয় বিবেকবান মানুষ।
এ ঘটনায় ম্যাক্স হাসপাতালের এমডিসহ চার চিকিৎসকের বিরুদ্ধে নগরীর চকবাজার থানায় গত ১৮ জুলাই একটি এজাহার করেন রাইফার বাবা সাংবাদিক রুবেল খান। দু’দিন পর সেটি মামলা হিসেবে গ্রহণ করে চকবাজার থানা পুলিশ। শিশু রাইফার মৃত্যুর পর তিন মাস হয়ে গেলেও এখনও চার্জশিট দিতে পারেনি পুলিশ। মন্থর গতিতে চলছে মামলার তদন্ত।
এই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ছিলেন চকবাজার থানার ওসি (তদন্ত) আরিফ হোসাইন। তিনি সম্প্রতি চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) এর গোয়েন্দা শাখায় বদলি হয়েছেন। তার স্থলে চকবাজার থানার ওসি (তদন্ত) হিসেবে যোগ দিয়েছেন রিয়াজ উদ্দিন চৌধুরী।
রাইফার মৃত্যুর ঘটনায় দায়েরকৃত মামলার তদন্ত কতদূর- এমন প্রশ্নের জবাবে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও চকবাজার থানার ওসি (তদন্ত) রিয়াজ উদ্দিন চৌধুরী জয়নিউজকে বলেন, ‘এই মামলার আগের তদন্তকারী কর্মকর্তা কয়েকদিন আগে অন্যত্র বদলি হয়ে গেছেন। তার স্থলে আমি সবেমাত্র যোগ দিয়েছি। তদন্তটি প্রাথমিক পর্যায়েই রয়েছে। তবে আশা করছি, খুব শিগগিরই তদন্তকাজ শেষ করতে সক্ষম হবো।’
এ প্রসঙ্গে রাইফার বাবা সাংবাদিক রুবেল খান জয়নিউজকে বলেন, এই মৃত্যুর ঘটনা তদন্তে চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জনের নেতৃত্বে তিন সদস্যের যে কমিটি গঠন করা হয়েছিল, সেই কমিটির তদন্ত প্রতিবেদনে রাইফার চিকিৎসায় অবহেলার বিষয়টি উঠে এসেছে। এছাড়া স্বাস্থ্য অধিদফতরের তদন্ত কমিটি ম্যাক্স হাসপাতালের ১১টি ত্রুটি চিহ্নিত করেছে। তদন্তকারী কর্মকর্তা যদি সিভিল সার্জন ও স্বাস্থ্য অধিদফতরের তদন্ত প্রতিবেদন দু’টির সহযোগিতা নেন, তাহলে মামলার তদন্তকাজ দ্রুত সম্পন্ন করতে সক্ষম হবেন তিনি।
চিকিৎসায় অবহেলা ও ভুল চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যু প্রতিরোধ, দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন এবং চিকিৎসক ও চিকিৎসা ব্যবস্থার প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থা অর্জনের স্বার্থে রাইফার মৃত্যুর ঘটনায় দায়ের করা মামলার সুষ্ঠু তদন্ত ও দায়ীদের বিরুদ্ধে দ্রুত চার্জশিট প্রদানের দাবি জানান রুবেল খান।
চকবাজার থানায় দায়ের করা মামলায় ডা. বিধান রায় চৌধুরী, ডা. দেবাশীষ সেনগুপ্ত, ডা. শুভ্র দেব ও বেসরকারি ম্যাক্স হাসাপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. লিয়াকত আলীকে আসামি করা হয়।
জয়নিউজ/আরসি