অস্বাভাবিকভাবে গেল বছর কোরবানির পর চামড়া দাম কমে যায়। হঠাৎ বাজারের এ দাম পতনে অনেকেই ক্ষোভে বিক্রি না করে রাস্তায়-ডাস্টবিনে ফেলে দেন চামড়া। আবার রক্ষণাবেক্ষণের অভাবেও নষ্ট হয়ে যায় অন্তত দুই কোটি টাকার চামড়া।
তাছাড়া ২০১৭ সালের পর থেকেই চামড়ার আন্তর্জাতিক বাজার পড়তির দিকে ছিল। এবছর করোনার কারণে এ শিল্পের নাজুক অবস্থায় বেশি চামড়া কিনে মজুত করতেও দ্বন্দ্বে রয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
চামড়া শিল্পের এমন পরিস্থিতিতে আর গত বছরের এ তিক্ত অভিজ্ঞতার কারণে কোরবানির দিন পাড়ায় পাড়ায় ছিল না মৌসুমী চামড়া ব্যবসায়ীর ভিড়। স্বাভাবিকভাবেই সস্তা দরে কোরবানির চামড়া বিক্রি হয়েছে আড়তদারদের প্রতিনিধির কাছে।
সরকার নির্ধারিত দাম অনুযায়ী চট্টগ্রামে গরুর লবণযুক্ত কাঁচা চামড়ার দাম ২৮ থেকে ৩২ টাকা এবং খাসির লবণযুক্ত চামড়ার দাম ধরা হয় ১৩ থেকে ১৫ টাকা ও বকরির চামড়া ১০ থেকে ১২ টাকা। তাই কোরবানির পর লবণ ছাড়া চামড়ার দাম আরো কমে যায়।
দামপাড়া এলাকার সবুজ মিয়া জানান, কোরবানির পর লবণ ছাড়া চামড়ার দাম ছিল খুবই কম। ১৫ থেকে ২০ টাকাই বিক্রি করতে বিক্রি করতে হিমশিম খেতে হয়েছে।
এবার উপজেলাগুলো থেকে চামড়া আনার সময় লবণ দেওয়ার জন্য আগেই থেকেই বলে দিয়েছেন চামড়া ব্যবসায়ীরা।
চট্টগ্রাম কাঁচা চামড়া আড়তদার সমবায় সমিতির সভাপতি আবদুল কাদের জয়নিউজকে বলেন, সরকার নির্ধারিত দামেই আমরা চামড়া কিনছি। তবে লবণ ছাড়া কাঁচা চামড়ায় লবণের দাম শুধু কম দেওয়া হয়েছে। শনিবার কোরবানির পর দুপুর থেকেই চামড়া আসছে। আজ রোববারও (২ আগস্ট) আড়তে চামড়া আসবে। সঠিকভাবে চামড়া সংরক্ষণের জন্য সকল ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
জানা যায়, স্বাধীনতার পর চট্টগ্রামে ২২টি ট্যানারি ছিল। এর মধ্যে নানা কারণে বন্ধ হয়ে যায় ২১টি ট্যানারি। বর্তমানে নগরের কালুরঘাটে টিকে গ্রুপের ট্যানারিটিই অবশিষ্ট আছে। প্রতিবছর তারা চট্টগ্রাম থেকে ২০ শতাংশ কাঁচা চামড়া কিনে বাকি চামড়া ঢাকার ট্যানারিতে বিক্রি করে দেয়। মূলত বৃহত্তর চট্টগ্রামে এ চামড়া বাজার নিয়ন্ত্রণ করে ঢাকার ট্যানারি ব্যবসায়ীরাই।
চট্টগ্রামের একমাত্র ট্যানারি টিকে গ্রুপের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান রিফ লেদার লিমিটেডের পরিচালক (অপারেশন্স অ্যান্ড সেলস) মো. মোকলেছুর রহমান জানান, প্রক্রিয়াজাত চামড়া রপ্তানির আমাদের প্রধান বাজার হচ্ছে চীন। মোট চামড়ার ৬০ থেকে ৬৫ শতাংশই চীনে রপ্তানি হয়। এছাড়া আমেরিকা, ইতালি, স্পেন, জাপান এবং থাইল্যান্ডে রপ্তানি করা হতো। কিন্তু করোনার কারণে দেশগুলোতে রপ্তানি বন্ধ থাকায় আগের উৎপাদিত পণ্য নিয়ে অনিশ্চয়তায় পড়েছি।