রাঙামাটির জুরাছড়ি বৃগুপাড়া গ্রামের ৩০টি পরিবার পেয়েছে নিরাপদ পানি। জুরাছড়ি উপজেলা পরিষদের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির আওতায় ৫ লক্ষ ৭৮ হাজার টাকা ব্যয়ে প্রতিটি ঘরে ঘরে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে পানির লাইন। শত বছরের এ গ্রামটিতে যেতে অতিক্রম করতে হয় প্রায় ৮০ কিলোমিটার উঁচু-নিচু পাহাড়ি পথ।
জুরাছড়ির আইমাছড়া মৌজার তেরপাড়ার একটি ছড়ার (ছোট ঝর্ণা) মধ্যে গভীর নল বসানো হয়েছে। সেখান থেকে ৮ হাজার ফুট পাহাড় বেয়ে পাইপের মাধ্যমে নিয়ে আসা হয়েছে পানির লাইন। গ্রামে একটি দুই হাজার ফুট ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন ট্যাংক বসানো হয়েছে। এখানে সরাসরি পানি এসে জমা হয়। এখান থেকে প্রতিটি ঘরে ঘরে পানির সংযোগ দেওয়া হয়েছে।
গ্রামের ৮৫ বছর বয়সী চন্দ্রকান্ত চাকমা জানান, এই গ্রামে এর আগে কখনো কোনো উন্নয়ন হয়নি। নিরাপদ পানির একমাত্র ভরসা ছিল ছড়া। এই ছড়া থেকে পানি আনতে পাহাড়ের ৪-৫ কিলোমিটার নিচে নামতে হয়। শুকনো মৌসুমে দেখা দেয় পানির তীব্র সংকট। এখন পানির লাইন থাকায় জুমের কাজ শেষে সবাই এ পানিতে নিশ্চিন্তে রান্না-বান্না ও গোসল করছে।
গ্রামের এ্যাম লদা চাকমা (৪৫) জানান, মেয়েদের কষ্ট দূর হয়েছে। আমরা এখন ঘরে বসেই পানি পাচ্ছি। আজ্যাকি চাকমা(৭০) জানান, এখনো মনে হয় আমি স্বপ্ন দেখছি। কিন্ত আসলে এটাই এখন আমার জন্য বাস্তব।
জুরাছড়ি ইউপি চেয়ারম্যান ক্যানন চাকমা জানান, পাহাড়ে যারা বসবাস করছে তাদের প্রধান সমস্যা নিরাপদ পানির অভাব। তাই আমরা নিরাপদ পানির ব্যবস্থা করেছি।
উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান রিটন চাকমা জানান, পাহাড়ে বসবাসরত জনগোষ্ঠী খুবই সহজ সরল। কিন্ত তাদের জীবন-যাপন খুবই কঠিন। তাদের এই কঠিন জীবন যাপন একটু সহজ করে দিতে আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি।
রিটন চাকমা জানান, পাহাড়ে বসবাসরতদের জীবন যাত্রার উন্নয়নে বিভিন্ন কাজ করার ইচ্ছে রয়েছে, সামর্থ্য খুবই কম। সরকারি স্বল্প বরাদ্দে এসব ব্যয়বহুল প্রকল্প বাস্তবায়ন করা খুবই কঠিন। এ ক্ষেত্রে নিরাপদ পানি নিশ্চিতকরণে স্থানীয় সরকার বিভাগ ও পার্বত্য মন্ত্রণালয়ের বিশেষ দৃষ্টি দেওয়া জরুরি।
জয়নিউজ