রাতের বৃষ্টিতে ‘তলিয়ে’ গেছে চট্টগ্রাম শহর। নগরের নদী-নালায় এবং কয়েকটি নিম্নাঞ্চলে থৈ থৈ করছে পানি। এতে জীবনযাত্রা অচল হয়ে পড়েছে। দুর্ভোগে পড়েছে নগরের বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দারা।
নগরবাসী বলছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা নিরসনে হাজার কোটি টাকার বরাদ্দ দিয়েছেন। তারপরও কেন সামান্য বৃষ্টিতে নগরের বিভিন্ন স্থানে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে। এর দায় কার?
সোমবার (১৭ আগস্ট) সকালে আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, চট্টগ্রামে বৃষ্টি আরও কয়েকদিন টানা থাকতে পারে। সেই সঙ্গে আকাশ আংশিক মেঘলা থেকে সাময়িকভাবে মেঘাচ্ছন্ন থাকতে পারে। চট্টগ্রামের কোথাও কোথাও অস্থায়ী দমকা হাওয়ার সঙ্গে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টি হতে পারে। দক্ষিণ, দক্ষিণ পূর্ব দিকে থেকে ঘণ্টায় ১২-১৫ কিলোমিটার বেগের বাতাস ৩০-৪০ কিলোমিটার পর্যন্ত বাড়তে পারে।
আবহাওয়াবিদ শেখ ফরিদ আহমেদ জয়নিউজকে বলেন, সোমবার সকাল ৯টা পর্যন্ত পূর্ববর্তী ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রামে ৩৩ দশমিক ৬ মিলিমিটার বৃষ্টির রেকর্ড করা হয়েছে।
সাগর উত্তাল থাকায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কতা সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। এছাড়া নদী বন্দরে ১ নম্বর নৌ সতর্কতা সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে বলে জানান এ আবহাওয়াবিদ।
সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা গেছে, নগরের বাদুরতলা, কাপাসগোলা, চকবাজার, অক্সিজেন, হামজারবাগ, মুরাদপুর, আতুরারডিপো, বহদ্দারহাট, শুলকবহর, কাতালগঞ্জ, নাসিরাবাদ, বায়োজিদ, ষোলশহর দু’নম্বর গেট, চকবাজার, পাঁচলাইশ, ডিসি রোড, খাজা রোড, চান্দগাঁও, মোহরা, বাকলিয়া, চাক্তাই, রাজাখালি, দেওয়ানবাজার, আগ্রাবাদ, ছোটপুল, বড়পুল, সিডিএ, হালিশহর, পাহাড়তলী, সরাইপাড়া, সাগরিকা, কাঁচারাস্তার মাথা ও পতেঙ্গার নিম্নাঞ্চল পানিতে তলিয়ে গেছে। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত এসব এলাকা থেকে পানি সরেনি। ফলে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে নগরবাসীকে।
বাদুরতলা এলাকার বাসিন্দা কাজী মোস্তফা জয়নিউজকে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চট্টগ্রামের উন্নয়নে হাজার কোটি টাকার বরাদ্দ দিয়েছে। কিন্তু গতকালের (রোববার) সামান্য বৃষ্টিতে বাদুরতলাসহ আশপাশে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। তাহলে এত টাকা বরাদ্দ দিয়ে লাভ কি! আমরা বাণিজ্যিক নগরে থাকি, অথচ গ্রামাঞ্চলের মতো পানিতে বন্দী থাকতে হয়।
এদিকে ভারী বর্ষণে ভূমিধসের শঙ্কায় নগরের সরকারি ও বেসরকারি মালিকানাধীন ১৭টি পাহাড়ের পাদদেশে ‘মৃত্যুঝুঁকি’ নিয়ে বসবাস করা লোকজনকে সরে যেতে মাইকিং করছে জেলা প্রশাসন।
এ ব্যাপারে চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) এসএম জাকারিয়া বলেন, ভারী বর্ষণে ভূমিধসের শঙ্কায় চট্টগ্রাম নগরের ১৭টি পাহাড়ের পাদদেশে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাস করা লোকজনকে সরে যেতে মাইকিং করছে জেলা প্রশাসন। সোমবার বিকেলের মধ্যে পাহাড় থেকে লোকজন স্বেচ্ছায় সরে না গেলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের নেতৃত্বে পাহাড়ে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করে তাদের সরিয়ে দেওয়া হবে।