অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো অনলাইন ক্লাসের দিকে ঝুঁকছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ও (চবি)। এ জন্য বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) নির্দেশনায় ডিভাইস ক্রয়ে অক্ষম শিক্ষার্থীদের তালিকাভুক্ত করতে কার্যক্রম শুরু করেছে কর্তৃপক্ষ।
চবি কর্তৃপক্ষ বলছে, আগামী ২৯ আগস্ট পর্যন্ত অসচ্ছল শিক্ষার্থীদের নাম সংগ্রহ করা হবে। এ জন্য বৃহস্পতিবার (২৭ আগস্ট) বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে। তবে শিক্ষার্থীরা বলছেন, ডিভাইস নয়, প্রয়োজন ইন্টারনেট খরচ ও ভালো নেটওয়ার্ক।
এ বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক এসএম মনিরুল হাসান জয়নিউজকে বলেন, ইউজিসির নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা অসচ্ছল শিক্ষার্থীদের নাম চেয়েছি। ডিভাইস কিনতে অসচ্ছল শিক্ষার্থীরা আগামী ২৯ আগস্ট পর্যন্ত নিজ বিভাগের সভাপতি বা ইন্সটিটিউটের পরিচালকের কাছে নাম, রোল ও মোবাইল নম্বর জমা দিতে পারবে।
আরও পড়ুন: অনলাইনে ক্লাস করতে ডিভাইস পাবেন চবির অসচ্ছল শিক্ষার্থীরা
এদিকে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর শিক্ষার্থীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া শুরু হয়েছে। এটি কোনো অনুদান নাকি ঋণ এ বিষয়ে স্পষ্ট কোনো তথ্য দিতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয়। আবার এটি কিভাবে যাচাই–বাছাই করা হবে তা নিয়েও সংশয় রয়েছে শিক্ষার্থীদের মধ্যে।
অনেকেই বলছেন, বিগত সময়গুলোতে স্মার্টফোনের ব্যাপক বিস্তৃতির ফলে এখন বেশিরভাগ শিক্ষার্থীর হাতে হাতে স্মার্টফোন রয়েছে। তবে অনেকের কাছেই মূল সমস্যা ইন্টারনেট খরচ ও নেটওয়ার্ক।
বাংলা বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের ছাত্রী ফারহানা শিমু বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকাংশ শিক্ষার্থী মধ্যবিত্ত ও নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারের। যাদের অর্থনৈতিক সমস্যা একটা বড় বিষয়। এখন টিউশন বন্ধ থাকায় ইন্টারনেটের খরচ যোগানোও অনেকের জন্য কঠিন হয়ে পড়েছে।
‘এছাড়াও নেটওয়ার্ক সমস্যার জন্য স্মার্টফোন কিংবা মেগাবাইট থাকা সত্ত্বেও সুষ্ঠুভাবে ক্লাস করা সম্ভব কি–না তাও চিন্তার বিষয়। আবার যাচাই–বাছাইয়ের বিষয়টি নিশ্চিত করতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
প্রাণিবিদ্যা বিভাগের ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র গৌরচাঁদ ঠাকুর বলেন, ইন্টারনেট খরচ ও নেটওয়ার্কও একটা সমস্যা। এক্ষেত্রে আমরা চাই উপস্থিতির বাধ্যবাধকতা রহিত করা হোক। আর ক্লাসগুলো যেন রেকর্ড করে পেজ বা আইডিতে শেয়ার করা হয়। তাহলে এ সমস্যার সমাধান হতে পারে।
এ বিষয়ে জানতে জয়নিউজ কথা বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক এসএম মনিরুল হাসানের সঙ্গে। তিনি বলেন, ইউজিসির নির্দেশনা অনুযায়ী নাম চাওয়া হয়েছে। এটি ঋণ কি–না তা ইউজিসি ভালো বলতে পারবে।
যাচাই–বাছাই প্রসঙ্গে রেজিস্ট্রার বলেন, ইউজিসি নির্দেশ দিয়েছে স্মার্ট ডিভাইস ক্রয়ে অসচ্ছল শিক্ষার্থীদের তালিকা পাঠাতে। আমরা তালিকা করার জন্য বিভাগ ও ইনিস্টিটিউটগুলোকে বলে দিয়েছি। তাদের কাছ থেকে তালিকাগুলো পেলে সেগুলো ইউজিসিতে পাঠানো হবে। ইউজিসিই যাছাই–বাছাই করবে। সেখান থেকে যে সিদ্ধান্ত দেওয়া হবে তা আমরা বাস্তবায়নের চেষ্টা করবো।