লক্ষ্মীপুরে নির্মাণাধীন সেপটিক ট্যাংকে কাজ করতে গিয়ে বিষাক্ত গ্যাসে দুই শ্রমিক প্রাণ হারিয়েছেন। আশঙ্কজনক অবস্থায় সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে আরো দুই শ্রমিককে।
বুধবার দুপুরে সদর উপজেলার বাংগাখাঁ ইউনিয়নের হোগলডহুরী এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। দুর্ঘটনায় নিহত দুই শ্রমিক হলেন- কামাল হোসেন (২৮) ও ওমর ফারুক (২২)। মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন শ্রমিক সোহাগ হোসেন ও ইউসুফ চৌধুরী।
এলাকাবাসী জানায়, গত চার-পাঁচ মাস আগে সেপটিক টাংকটি (ময়লার টাংকি) নির্মাণ করা হয়েছিল। কয়েক মাস সেটি আবদ্ধ ছিল। তবে সেটি ব্যবহার করা হয়নি। আবদ্ধ থাকায় সেখানে বিষাক্ত গ্যাস জমে থাকতে পারে।
পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয় এলাকাবাসী জানায়, বুধবার দুপুরে ইউসুফ চৌধুরী বাসায় নির্মানাধীণ সেপটিক ট্যাংকির সেন্টারিংয়ের মালামাল খুলতে যান শ্রমিকরা। এসময় প্রথমে কামাল উদ্দিন সেপটিক ট্যাংকিতে নামলেও আর উঠে আসেননি। তাকে দেখতে নামেন অপর শ্রমিক ওমর ফারুক। তিনিও উঠে না আসায় সোহাগ ও ইউসুফ চৌধুরী তাদের দেখতে ট্যাংকিতে নামলে তারাও অসুস্থ হয়ে পড়েন। এরপর স্থানীয়রা তাদের দুইজনকে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে ভর্তি করে।
খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে ঘন্টাব্যাপী চেষ্টা চালিয়ে ট্যাংকি ভেঙ্গে নিহত দুই শ্রমিকের মরদেহ উদ্ধার করে। পরে পুলিশ মরদেহগুলো সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়ে দেয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, হোগলডুহরী গ্রামের আবদুর রশিদ ব্যাপারী বাড়ির মো. নিজাম নামে এক ব্যক্তির সেপটিক ট্যাংকের ভেতরে থাকা সেন্টারিংয়ের বাঁশ-কাঠ খুলতে যান নির্মাণ শ্রমিক ফারুক ও কামাল। প্রথমে তারা পাম্পের সাহায্যে ট্যাংকের ভেতরের পানি নিষ্কাষণ করে। পরে ঢাকনা সরিয়ে আবদ্ধ টাংকিতে ঢুকেন ফারুক। এর ৩০ সেকেন্ডের মধ্যেই ফারুকের মৃত্যু হয়। তাকে উদ্ধার করতে কামাল ভেতরে ঢুকলে তিনিও কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে মারা যান। তাদের উদ্ধার করতে গিয়ে কোমরে দড়ি বেঁধে টাংকির ভেতরে প্রবেশ করেন সোহাগ নামে এক ব্যক্তি। তিনিও গুরুতর আহত হলে স্থানীয়রা তাকে টেনে উপরে তুলে। এতে ইউসুফ নামে আরও একজন আহত হয়। তাদের সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
লক্ষ্মীপুর ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার ওয়াসি আজাদ জানান, ট্যাংকিতে বিষাক্ত গাসের কারণে দুই শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে।
সদর থানার ওসি তদন্ত মোসলেহ উদ্দিন জানান, নিহত দুই শ্রমিকের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে। এরপর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জয়নিউজ/মনির