ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) মার্কেটিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. মোর্শেদ হাসান খানকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতির অভিযোগে বুধধবার (৯ সেপ্টেম্বর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
অধ্যাপক ড. মোর্শেদ হাসান ২০১৮ সালের ২৬ মার্চ দৈনিক নয়া দিগন্তে ‘জ্যোতির্ময় জিয়া’ শিরোনামে একটি নিবন্ধে লেখেন- ‘আওয়ামী নেতাদের বেশিরভাগই স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় তাদের পরিবার-পরিজনসহ ভারতে চলে গেলেন এ দেশবাসীকে মৃত্যু ফাঁদে ফেলে দিয়ে নেতৃত্বহীন অবস্থায়। যাকে ঘিরে এ দেশের মানুষ স্বপ্ন দেখত সেই শেখ মুজিবুর রহমানও। জাতির এ সঙ্কটকালীন মুহূর্তে ত্রাতারূপে আবির্ভূত হন তৎকালীন মেজর জিয়াউর রহমান। দেশপ্রেমের মহান মন্ত্রে উজ্জীবিত এই টগবগে যুবকের কণ্ঠে ২৬ মার্চ রাতে বজ্রের মতো গর্জে ওঠে স্বাধীনতার ঘোষণা। স্বাধীনতার ডাক এসেছিল শেখ মুজিবুর রহমান গ্রেফতার হওয়ার পর, তার আগে নয়। আমার জানা মতে, তিনি কোনো স্বাধীনতার ঘোষণা দেননি।’
এ লেখা প্রকাশের পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ করেন তাঁকে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অবাঞ্চিত ঘোষণা করেন। পরে ২ এপ্রিল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অধ্যাপক মোর্শেদ হাসান খানকে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ও প্রশাসনিক সকল কার্যক্রম থেকে সাময়িকভাবে অব্যাহতি দেন। উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মুহাম্মদ সামাদকে আহ্বায়ক করে পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। এরপর তদন্ত কমিটি অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় আইনি সুপারিশের জন্য ২০১৯ সালের ৩০ এপ্রিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্য হিসেবে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমকে দায়িত্ব দেয় বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট।
এদিকে অধ্যাপক ড. মোর্শেদ খানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অধ্যাপক ড. এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বরাবর একটি চিঠি লেখেন। সেখানে তিনি লেখেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় স্বাধীন মত প্রকাশ, মুক্তবুদ্ধির চর্চা ও লালন কেন্দ্র হিসেবে সুপরিচিত। এটি শতবর্ষের ঐতিহ্য। সেখানে একটি লেখার জন্য অধ্যাপক মোর্শেদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া কেবল ভিন্ন মতের ওপর প্রতি আক্রোশের কারণ।’
তিনি আরও বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষককে চাকরিচ্যুত করতে যে যে অভিযোগ প্রমাণ করা লাগে অধ্যাপক মোর্শেদ সেসব অভিযোগে অভিযুক্ত নন।’
জয়নিউজ