বিশ্বমানবতায় অনন্য শেখ হাসিনা

তাঁর দিনের শুরুটা হয় ভোরের আজানের পরে নামাজ আদায়ে। ধর্মপ্রাণ এই নারী কিন্তু অসাম্প্রদায়িক চেতনায় বিশ্বাসী। সকালে নিজের চা নিজেই তৈরি করেন। বঙ্গবন্ধুর আদর্শই তাঁর অনুপ্রেরণা। প্রতিদিন গড়ে ১৭ থেকে ১৮ ঘণ্টা তিনি কাজ করেন। আর কাজের পুরোটা সময়জুড়ে থাকে মানবসেবা! এ পর্যন্ত ১৯ বার তাঁকে হত্যার চেষ্টা চালিয়েছে দেশদ্রোহীরা। কিন্তু বারবারই তারা ব্যর্থ হয়েছে। কারণ কোটি কোটি বাঙালির ভালোবাসা আর দোয়া যে রয়েছে তাঁর সঙ্গে!

- Advertisement -

বলছি একজন মহীয়সীর কথা। বলছি জাতির জনকের এক কন্যার কথা। বলছি প্রাণের মায়া তুচ্ছ করে রাজপথে থাকা এক সাহসী নারীর কথা। বলছি একটি দেশকে অর্থনৈতিকভাবে বদলে দেওয়া এক প্রধানমন্ত্রীর কথা।

- Advertisement -google news follower

তিনি শেখ হাসিনা সংকীর্ণতার ঊর্ধ্বে উঠে একটি উদার রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠাতা। দেশের মানুষের কল্যাণে যাঁর কাছে তুচ্ছ নিজের অমূল্য জীবনটাও!

শুধু বাংলাদেশ নয়, বিশ্ব দরবারেও আজ প্রশংসিত এক নাম শেখ হাসিনা। যাঁর নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত হয়েছে। তাঁর দক্ষ নেতৃত্বে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি থেকে শুরু করে খাদ্যে স্বনির্ভরতা, নারীর ক্ষমতায়ন, কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, যোগাযোগ, বিদ্যুৎ ও আইসিটি খাতে বাংলাদেশ পেয়েছে ব্যাপক সাফল্য।

- Advertisement -islamibank

ছাত্রজীবন থেকেই সংগ্রামী

শিশুকালটা গোপালগঞ্জেই কাটে শেখ হাসিনার। তবে শিক্ষাজীবনটা কেটেছে ঢাকা শহরে। কিশোর বয়স থেকেই রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন তিনি। স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে ছাত্রলীগের নেত্রী হিসেবে আইয়ুববিরোধী আন্দোলন, ছয় দফা আন্দোলনসহ বিভিন্ন আন্দোলন-সংগ্রামে সক্রিয়ভাবে অংশ নেন।

১৯৬৭ সালে ঢাকার বকশী বাজারের গভর্নমেন্ট গার্লস কলেজ (বর্তমান বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা মহাবিদ্যালয়) থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা। এ কলেজে অধ্যয়নকালে তিনি কলেজ ছাত্র সংসদের সহসভানেত্রী (ভিপি) পদে নির্বাচিত হন। তিনি কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এবং পরের বছর সভাপতি হন।

ইন্টারমিডিয়েট পাস করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে ভর্তি হন শেখ হাসিনা। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সদস্য এবং ছাত্রলীগের রোকেয়া হল শাখার সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ১৯৭৩ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন।

রাজনীতিতে শেখ হাসিনা

১৫ আগস্টের সেই নির্মম হত্যাকাণ্ড কিংকর্তব্যবিমূঢ় করে ফেলে আওয়ামী লীগকে। দেশে না থাকায় ভাগ্যক্রমে সেদিন বেঁচে গিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা। কিন্তু তখন আওয়ামী লীগকে নিশ্চিহ্ন করতে চলছে নানামুখী ষড়যন্ত্র। এর মধ্যেই ১৯৮১ সালে হলো আওয়ামী লীগের বিশেষ কাউন্সিল। যেখানে দলের সভানেত্রী নির্বাচিত করা হয় দিল্লিতে অবস্থানরত শেখ হাসিনাকে।

আওয়ামী লীগের হাল ধরতে প্রাণের মায়া ত্যাগ করে ১৯৮১ সালের ১৭ মে দেশে ফিরেন শেখ হাসিনা। দীর্ঘ ১৫ বছর রাজপথে আন্দোলন-সংগ্রামের পর রাষ্ট্র ক্ষমতায় আনেন আওয়ামী লীগকে। ১৯৯৬ সালে সরকার গঠন করে আওয়ামী লীগ। অথচ ১৯৭৫-এর পৈশাচিক হত্যাকাণ্ডের পর ক্ষমতায় যাওয়া তো দূরে থাকুক আওয়ামী লীগের অস্তিত্ব নিয়েও সন্দিহান ছিলেন অনেকে।

১৯৯৬-এর পর ফের ২০০৯ সালে জনরায়ে সরকার গঠন করে আওয়ামী লীগ। সেই থেকে টানা তিনবার প্রধানমন্ত্রী হয়ে বাংলাদেশের ইতিহাসে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন শেখ হাসিনা।

বিশ্বনেতা শেখ হাসিনা

বিশ্বের অন্যতম ক্ষমতাধর ব্যক্তি হিসেবে বিবেচিত শেখ হাসিনা। ২০১০ সালে নিউ ইয়র্ক টাইমস সাময়িকীর অনলাইন জরিপে তিনি বিশ্বের সেরা দশ ক্ষমতাধর নারীদের মধ্যে ষষ্ঠ স্থানে ছিলেন। ২০১১ সালে বিশ্বের সেরা প্রভাবশালী নারী নেতাদের তালিকায় ছিলেন সপ্তম স্থানে। ২০১৮ সালে ফোর্বস সাময়িকীর দৃষ্টিতে বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর ১০০ নারীর তালিকায় তাঁর অবস্থান ছিল ২৬তম। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ফরেইন পলিসি নামক সাময়িকীর করা বিশ্বব্যাপী শীর্ষ ১০০ বৈশ্বিক চিন্তাবিদের তালিকায়ও রয়েছেন শেখ হাসিনা।

অঙ্গীকারে অটুট

দেশের মানুষের জন্য একবার যে অঙ্গীকার করেন তা রক্ষায় সর্বদা অটুট থাকেন শেখ হাসিনা। তাঁর এই দৃঢ়চিত্তের জন্যই মুক্তিযোদ্ধাদের দীর্ঘদিনের দাবি যুদ্ধাপরাধী ও বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনিদের বিচার হয়েছে। একসময় দেশে যে জঙ্গিবাদ মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছিল তিনি শক্ত হাতে তা দমন করেছেন। শান্তি চুক্তির মতো কঠিন কাজটিও তিনি করে দেখিয়েছেন। তাঁর আমলেই একুশে ফেব্রুয়ারি স্বীকৃতি পেয়েছে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের।

রেহানা ছাড়া কেউই নেই

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পাঁচ সন্তান। শেখ হাসিনা, শেখ কামাল, শেখ জামাল, শেখ রেহানা ও শেখ রাসেল। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ঘাতকরা শুধু বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গমাতাকেই খুন করেনি হত্যা করেছে শেখ হাসিনার প্রাণপ্রিয় তিন ভাইকেও। এখন হাসিনার সঙ্গী হয়ে আছেন একমাত্র বোন শেখ রেহানা।

তোমার জন্মে ধন্য দেশ

শেখ হাসিনা- যোগ্য পিতার যোগ্য সন্তান। যাঁর জন্ম সৌভাগ্য নিয়ে এসেছে একটি দেশের জন্য, একটি জাতির জন্য। নিজের মেধা, দক্ষতা ও দূরদর্শিতায় পুরো দেশকেই বদলে দিয়েছেন তিনি। কিন্তু এরপরও তিনি সহজ-সরল। জন্ম নিয়ে কোনো গৌরব তো নেই-ই, তিনি গর্ব করেন দেশ নিয়ে। তাইতো বঙ্গবন্ধুকন্যা, আওয়ামী লীগ সভানেত্রী, প্রধানমন্ত্রীর তকমা ছাড়িয়ে তিনি বলতে পারেন- “আশ্বিনের সোনালি রোদ্দুর ছড়ানো দুপুরে-টুঙ্গিপাড়া গ্রামে আমার জন্ম। … আমার শৈশবের স্বপ্ন-রঙিন দিনগুলো কেটেছে গ্রাম-বাংলার নরম পলিমাটিতে, বর্ষার কাদা-পানিতে, শীতের মিষ্টি রোদ্দুরে, ঘাসফুল আর পাতায় পাতায় শিশিরের ঘ্রাণ নিয়ে, জোনাকজ্বলা অন্ধকারে ঝিঁঝির ডাক শুনে, তাল-তমালের ঝোপে বৈচি, দীঘির শাপলা আর শিউলি-বকুল কুড়িয়ে মালা গেঁথে, ধুলামাটি মেখে, বর্ষায় ভিজে খেলা করে।”

শুভ জন্মদিন প্রধানমন্ত্রী, শুভ জন্মদিন মানবতার জননী।

লেখক: সম্পাদক, জয়নিউজ

KSRM
পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জয়নিউজবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন news@joynewsbd.com ঠিকানায়।

এই বিভাগের আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ

×KSRM