হেফাজতে ইসলামের আমির ও হাটহাজারী মাদ্রাসার সাবেক মহাপরিচালক আল্লামা শাহ আহমদ শফীর মৃত্যু নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে চলছে পক্ষে-বিপক্ষে নানা আলোচনা-সমালোচনা। তবে বিষয়টি নিয়ে হেফাজত নেতারা ও মাদ্রাসার শিক্ষকরা গণমাধ্যমে বিক্ষিপ্তভাবে বললেও এবার স্পষ্ট করে মুখ খুললেন আল্লামা শফীর বড় ছেলে মাওলানা মো. ইউছুপ। তিনি রাঙ্গুনিয়ার শরফভাটা ইউনিয়নের পাখিয়ার টিলা কওমি মাদ্রাসার পরিচালক।
মঙ্গলবার (২৯ সেপ্টেম্বর) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আল্লামা শফী ছেলের একটি ভিডিওবার্তা ভাইরাল হয়। এতে দেখা গেছে, মাওলানা ইউছুপ তাঁর পিতা হাটহাজারী মাদ্রাসার সাবেক মহাপরিচালক আল্লামা শফীর স্মৃতি বিজড়িত কার্যালয় থেকে ওই ভিডিওবার্তায় যুক্ত হন। ওই সময় তাঁর সঙ্গে ছিলেন মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সদস্য আল্লামা শেখ আহমদ ও মাওলানা ইয়াহইয়া।
এছাড়া আল্লামা শফীর নাতি মাওলানা আরশাদ, মাওলানা ফয়সাল ও মাওলানা আসআদসহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
এ সময় ওই ভিডিওবার্তায় শফী ছেলে মাওলানা মো. ইউছুপ তাঁর পিতার জন্য দোয়া চেয়ে বলেন, গত ১৭ সেপ্টেম্বর (বৃহস্পতিবার) রাতে আমার আব্বা হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। এরপর এখান (মাদ্রাসা) থেকে আমার বড় ছেলে আরশাদসহ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। ওখানে শারীরিক অবস্থার অবনতির কারণে পরের দিন শুক্রবার সোয়া ৪টার দিকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে ঢাকার আজগর আলী হাসপাতালে নেওয়া হয়। ওই হাসপাতালে ঢুকানোর ১৫-২০মিনিট পর আমার আব্বা আল্লাহর ডাকে সাড়া দিয়ে এ দুনিয়া থেকে চির বিদায় নিয়েছেন। স্বাভাবিকভাবে আমার আব্বা মৃত্যুবরণ করেছেন।
তিনি ভিডিওবার্তায় তাঁর পিতার জানাজায় অংশ নেওয়া মুসল্লিদের কোনো খেদমত করতে না পারার জন্য পরিবারের পক্ষ থেকে দুঃখ প্রকাশ করে আরো বলেন, আমার আব্বা পুরো জীবন হাটহাজারী মাদ্রাসার জন্য অক্লান্ত শ্রম ব্যয় করেছেন। আমার আব্বার বয়স যখন ১০ বছর সেই সময় তিনি হাটহাজারীর বাথুয়া গ্রামের হাফেজ ইমতিয়াজ সাহেবের মাধ্যমে এ মাদ্রাসায় ভর্তি হন। প্রায় ১০ বছর লেখাপড়া করে তিনি ভারতের দারুল উলুম দেওবন্দ মাদ্রাসায় চলে যান। সেখোনে ৪ বছর লেখাপড়া করে আওলাদে রাসুল মাওলানা সাইয়্যেদ হোসাইন আহমাদ মাদানী (র.) খেলাফত লাভ কওে হাটাহাজারী মাদ্রাসায় যোগদান করেন। সেই সময় থেকে ২০২০ পর্যন্ত হাটহাজারী মাদ্রাসার খেদমত করেছিলেন।
ভিডিওবার্তার শেষ দিকে তিনি তাঁর প্রয়াত বাবা আল্লামা শফির ভুল-ত্রুটির জন্য সবার কাছে ক্ষমা প্রর্থনা ও তাঁর অসুস্থ মায়ের (আল্লামা শফীর সহধর্মিণী) জন্য দোয়া কামনা করেন।
প্রসঙ্গত, ২৬ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ কওমি মাদ্রাসা শিক্ষক সমিতির ব্যানারে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় আহমদ শফীর মৃত্যু অস্বাভাবিক আখ্যা দিয়ে এর বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি করে আলেমদের একটি পক্ষ। এ সময় হাটহাজারী মাদ্রাসার ছাত্র বিক্ষোভকে বহিরাগত উসকানি আখ্যায়িত করে এটিরও বিচারের দাবি জানানো হয়।