বিশ্ব মানবতার ইতিহাসে মহাত্মা গান্ধী এক অবিস্মরণীয় নাম। আজ সেই ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের অবিসংবাদিত নেতা ও বিশ্বে অহিংস আন্দোলনের প্রবর্তকের ১৫০ তম জন্মদিন।
মহাত্মা গান্ধীর জন্মদিন উপলক্ষে ভারতীয় সহকারী হাইকমিশন চট্টগ্রামের পক্ষ থেকে সকলকে শুভেচ্ছা জানানো হয়েছে।
একই সঙ্গে এই দিনটি জাতিসংঘ ঘোষিত ‘আন্তর্জাতিক অহিংস দিবস’ হিসেবেও পালিত হচ্ছে।
পুরো নাম মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধী হলেও ভারতে বাপুজি এবং সারাবিশ্বে তিনি মহাত্মা গান্ধী হিসেবেই পরিচিত। মহাত্মা গান্ধীর জন্ম ১৮৬৯ সালে গুজরাটের পোরবান্দরে। ১৮৮৮ সালে আইন বিষয়ে উচ্চশিক্ষার জন্য তিনি লন্ডনের ইউনিভার্সিটি কলেজে ভর্তি হন। ১৮৯৩ সালে দক্ষিণ আফ্রিকায় আইনব্যবসা শুরু করেন। সেখানে ব্রিটিশ বর্ণবাদী শাসনের প্রতিবাদের মধ্য দিয়ে রাজনীতিতে নামেন। ১৯১৪ সালে দেশে ফিরে ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে যুক্ত হন। ১৯২১ সালে তিনি ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের নেতৃত্বে চলে আসেন, সূচনা করেন অসহযোগ আন্দোলনের।
১৯৩০ সালে গান্ধী প্রথম তাঁর অহিংস শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মতাদর্শ প্রয়োগ করেন। লবণ করের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে হাঁটেন ৪০০ কিলোমিটার পথ, যা ছিল ইংরেজ শাসকদের প্রতি সরাসরি ‘ভারত ছাড়’ আন্দোলনের সূত্রপাত। পরের দিনগুলোতে তিনি ছিলেন উপমহাদেশের রাজনীতির অন্যতম নিয়ন্তা।
ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের কারণে বেশ কবার দক্ষিণ আফ্রিকা ও ভারতে কারাবরণ করেন মহাত্মা গান্ধী। তবে সব পরিস্থিতিতেই অহিংস মতবাদ ও সত্যের ব্যাপারে ছিলেন অটল। সাধারণ জীবনযাপন করা এই রাজনীতিবিদ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ আশ্রম।
১৯২১ ও ১৯২৫ সালে দুই বার অহিংসের বার্তা নিয়ে এসেছিলেন চট্টগ্রামে। ব্রিটিশবিরোধী স্বাধীনতা সংগ্রামের অগ্রনী ভূমিকায় অভিভূত হয়ে লিখেছিলেন ‘Chittagong to the fore’ অর্থাৎ সবার আগে চট্টগ্রাম। প্রায় ৪ মাস নোয়াখালিতে অবস্থানকালে গ্রামে গ্রামে ঘুরে ঘুরে ছড়িয়ে দিয়েছিলেন অহিংসার বাণী। যা তখন সকল সম্প্রদায়ের মধ্যে মৈত্রীর বন্ধন দৃঢ় করেছিল।
ভারতের স্বাধীনতার পর রাজনীতি থেকে অবসর নেন তিনি। ওই অবস্থায় ১৯৪৮ সালের ৩০ জানুয়ারি নাথুরাম গডসে নামে এক ব্যক্তি তাকে গুলি করে হত্যা করেন।
কিন্তু কথায় আছে কীর্তিমানের মৃত্যু নাই। তাঁর অহিংসার বাণী এখনো অন্যায়-শোষণের বিরুদ্ধে নিপীড়িতদের মুখে উচ্চারিত হয়।
তাইতো বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এ অহিংস রাজনীতির জনককে অভিহিত করেছিলেন ‘মহাত্মা’ বলে।
জয়নিউজ/পিডি