বুধবার পরিচালক হিসেবে ১০ বছর পূর্ণ করেছেন সৃজিত মুখোপাধ্যায়। সারাদিন এসেছে শুভেচ্ছাবার্তা। টুইটারে সৃজিতকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন পেশায় অর্থনীতির শিক্ষক তথা নেশায় পরিচালক সুমন ঘোষও। কিন্তু সেই ৫টি বাক্যের টুইটে ‘রুচি’ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। তাতেই শুরু হয়েছে সৃজিত ও সুমনের প্রকাশ্য বিতণ্ডা।
সুমনের টুইটের বাংলা অনুবাদ করলে দাঁড়ায়, বাংলা চলচ্চিত্রে তোমার অবদানের জন্য অনেক শুভেচ্ছা। কিন্তু তোমাকে নিজের স্কোরকার্ড এভাবে প্রচার করতে দেখে কিছুটা অস্বস্তি হচ্ছে। এই পেশার সঙ্গে যুক্ত কাউকে আগে এ রকম করতে দেখিনি। তবে আমি বিদ্বেষ থেকে এ কথা বলছি না। পুরোটাই হয়তো রুচির উপর নির্ভরশীল’।
ঘটনাচক্রে, সুমন বাক্যগুলি লিখেছেন সৃজিতেরই একটি টুইট শেয়ার করে। সেই টুইটে সৃজিত দর্শককে ধন্যবাদ জানিয়েছিলেন পাশে থাকার জন্য। টুইটের শুরুতেই ছিল পরিসংখ্যান। গত ১০ বছরে তিনি পরিচালক হিসেবে কী কী সাফল্য পেয়েছেন সেই ফিরিস্তিও দিয়েছিলেন পরিচালক। লিখেছিলেন, ‘১০ বছর। ১৮টি ছবি। ২টি ওয়েব ফিল্ম। ১টি ওয়েব সিরিজ। ১৭টি রিলিজ। ১৪টি সুপারহিট। ১৭৭টিআই অ্যাওয়ার্ড। ৫৯টি ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল’।
সাফল্যের এই খতিয়ানে নিয়েই আপত্তি তুলেছেন সুমন। তাঁর বক্তব্য, এভাবে নিজের সাফল্যের তালিকা দেওয়াটা ‘রুচিবিগর্হিত’।
সৃজিতও ছেড়ে দেওয়ার পাত্র নন। স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে উত্তর দিয়েছেন সুমনকে। লিখেছেন, ‘একজন পরিসংখ্যানবিদ/অর্থনীতিবিদের থেকে এ রকম কথা শুনে অবাক হচ্ছি। যে মানুষ অন্যের বক্স অফিস ফিগার জানতে বা সাফল্যকে সেই নিরিখে বিচার করতে কুণ্ঠাবোধ করেন না, তিনি এমন কথা বললে অবাক লাগে। কিন্তু এটা রুচিবোধের বিষয়। সেটা সকলের এক নয়’।
এবার সুমনের জবাব, ‘সাফল্যের কথা নিশ্চয়ই বলবে। তবে যে সফল সে নিজে বলবে না। বলবে অন্যরা’।
সুমন পরিষ্কার জানান, তিনি সৃজিতের দেওয়া তথ্যের সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন না। তাঁর টুইট, ‘এই বিষয়টা হলো, সচিন তাঁর দেশের জন্য কতগুলি সেঞ্চুরি করেছেন, সে কথা তাঁর নিজেরই গর্ব করে বলার মতো। সে কথা তো বাকিরা বলবে’।
সুমন জানিয়েছিলেন, তিনি কোনও বিদ্বেষ থেকে এ কথা বলছেন না। পাল্টা খোঁচা দিয়ে সৃজিতের উত্তর, ‘নিশ্চয়ই আপনার উপলব্ধি কোনও বিদ্বেষ, হিংসা বা নিরাপত্তাহীনতা থেকে আসেনি। কেনই বা আসবে’?
আপাতত এখানেই থমকে আছে টুইটার যুদ্ধ। সুমন এবং সৃজিত, দু’জনেই টলিউডের সফল পরিচালক।
আমেরিকা প্রবাসী সুমনের ঝুলিতে রয়েছে ‘পদক্ষেপ’, ‘দ্বন্দ্ব’, ‘নোবেল চোর’-এর মতো ছবি। ২০০৮ সালে ‘পদক্ষেপ’-এর জন্য জাতীয় পুরস্কারও পেয়েছিলেন তিনি।
অন্যদিকে সৃজিত তাঁর প্রথম ছবি থেকেই সাড়া ফেলেছেন। ‘অটোগ্রাফ’ থেকে ‘ দ্বিতীয় পুরুষ’— দর্শক পছন্দ করেছেন তাঁর বেশিরভাগ ছবি। অনুরাগীরা বলেন, সৃজিতই নাকি বাঙালিকে ফের হলমুখী করেছেন। এখন দেখার, ‘রুচি’ নিয়ে টুইটারে দুই পরিচালকের বিতণ্ডা ভবিষ্যতে তাঁদের সৃষ্টি বা সম্পর্কে কোনো প্রভাব ফেলে কি না।
জয়নিউজ