আজ ১২ রবিউল আউয়াল, শুক্রবার। বিশ্বনবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর জন্ম ও ওফাত দিবস। সারা বিশ্বের মুসলমানরা এই দিনকে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) হিসেবে পালন করেন। এবার করোনা পরিস্থিতির কারণে বাংলাদেশেও স্বাস্থ্যবিধি মেনে যথাযোগ্য মর্যাদায় দিনটি পালন করবেন ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা।
এক হাজার ৪৫০ বছর আগের এই দিনে আরবের মরু প্রান্তরে মা আমিনার কোল আলো করে জন্ম নিয়েছিলেন সর্বশ্রেষ্ঠ ও সর্বশেষ নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)। ৬৩ বছর বয়সে ১২ রবিউল আউয়ালেই তিনি ইন্তেকাল করেন।
হজরত মুহাম্মদ (সা.) পৃথিবীতে এসেছিলেন তাওহিদের মহান বাণী নিয়ে। প্রচার করেছেন শান্তির ধর্ম ইসলাম। তাঁর আবির্ভাব এবং ইসলামের শান্তির বাণীর প্রচার সারা বিশ্বে আলোড়ন সৃষ্টি করে। আরব সমাজ যখন পৌত্তলিকতার অন্ধকারে ডুবে ছিল, তখন মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)কে সারা বিশ্বজগতের জন্য রহমতস্বরূপ পাঠিয়েছিলেন সর্বশক্তিমান মহান আল্লাহ। ৪০ বছর বয়সে নবুয়ত লাভ করেন মহানবী (সা.)। বিশ্ববাসীকে তিনি মুক্তি ও শান্তির পথে আসার আহ্বান জানান। সব ধরনের কুসংস্কার, গোঁড়ামি, অন্যায়, অবিচার ও দাসত্বের শৃঙ্খল ভেঙে মানবসত্তার চিরমুক্তির বার্তা বহন করে এনেছিলেন তিনি। মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) দীর্ঘ ২৩ বছর এই বার্তা প্রচার করেন। পবিত্র কোরআন শরিফে বলা হয়েছে, মহানবীকে সৃষ্টি না করলে আল্লাহ পৃথিবী সৃষ্টি করতেন না।
রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর বাণী
পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন। রাষ্ট্রপতি তাঁর বাণীতে বলেন, সাম্য ও ন্যায়ভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি নারীর মর্যাদা ও অধিকার, শ্রমের মর্যাদা, মনিবের দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পর্কে স্পষ্ট ভাষায় দিকনির্দেশনা দিয়েছেন মহানবী (সা.)। তাঁর বিদায় হজের ভাষণ মানবজাতির জন্য চিরকালীন দিশারি হয়ে থাকবে। বিশ্বের ইতিহাসে সর্বপ্রথম লিখিত সংবিধান ‘মদিনা সনদ’ ছিল মহানবী (সা.)-এর বিজ্ঞতা ও দূরদর্শিতার প্রকৃষ্ট দলিল। এ দলিলে জাতি-ধর্ম-বর্ণ-নির্বিশেষে সর্বস্তরের জনগণের ন্যায্য অধিকার ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠার সর্বজনীন ঘোষণা রয়েছে। ধর্মীয় ও পার্থিব জীবনে তাঁর শিক্ষা সমগ্র মানবজাতির জন্য অনুসরণীয়। পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে বিশ্ববাসীসহ মুসলিম উম্মাহকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও মোবারকবাদ জানান রাষ্ট্রপতি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর বাণীতে বলেন, মহানবী (সা.)-এর সুমহান আদর্শ অনুসরণের মধ্যেই মুসলমানদের অফুরন্ত কল্যাণ, সফলতা ও শান্তি নিহিত রয়েছে। করোনা মহামারিসহ আজকের দ্বন্দ্ব-সংঘাতময় বিশ্বে প্রিয় নবী (সা.)-এর অনুপম শিক্ষার অনুসরণ ও ইবাদতের মাধ্যমেই বিশ্বে শান্তি, ন্যায় ও কল্যাণ নিশ্চিত হতে পারে। দিনটি উপলক্ষে দেশ, জাতি ও মুসলিম উম্মাহ তথা বিশ্ববাসীর শান্তি ও মঙ্গল কামনা করে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও মোবারকবাদ জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
কর্মসূচি
ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) পালনের জন্য ইসলামিক ফাউন্ডেশনসহ বিভিন্ন সংগঠন নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।
এছাড়া দেশের সব হাসপাতাল, কারাগার, সরকারি শিশু সদন, বৃদ্ধনিবাস, মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রে উন্নত মানের খাবার পরিবেশন করা হবে। বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস ও মিশনসমূহ যথাযথভাবে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) পালন করবে। এ উপলক্ষে সারা দেশে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
জয়নিউজ/পিডি