বাংলাদেশের যোগাযোগ ব্যবস্থায় যুগান্তকারী আরেকটি পরিবর্তন আসতে যাচ্ছে। ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে প্রথমবারের মতো বুলেট ট্রেন চলাচলে একটি প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। এর সম্ভাব্যতা যাচাই কাজ সম্পন্ন হয়েছে, শেষ পর্যায়ে রয়েছে নকশা তৈরির কাজও।
প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে ৬ ঘণ্টার পরিবর্তে ননস্টপে মাত্র ৫৫ মিনিটে চট্টগ্রাম-ঢাকা রুটে যাতায়াত করা যাবে। এ রুটে থাকা ৬টি স্টেশন হচ্ছে— ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, কুমিল্লা, ফেনী, পাহাড়তলী ও চট্টগ্রাম। বুলেট ট্রেনটি এসব স্টেশনে ৩ মিনিট করে থামলে আরো ১৮ মিনিট যুক্ত হবে। সব মিলিয়ে সময় লাগবে ৭৩ মিনিট।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, ঘণ্টায় ৩০০ কিলোমিটার গতির এ ট্রেনে প্রতিদিন ৫০ হাজারের মতো যাত্রী পরিবহন করা সম্ভব হবে। প্রতি যাত্রীকে ভাড়া বাবদ গুনতে হবে ২ হাজার টাকা।
ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম পর্যন্ত হাইস্পিড বুলেট ট্রেন চালুর রেলপথ মন্ত্রণালয়ের প্রকল্প ২০১৭ সালের মার্চে অনুমোদন দেওয়া হয়। এর সম্ভাব্যতা যাচাই করেছে চায়না রেলওয়ে ডিজাইন কর্পোরেশন ও বাংলাদেশের মজুমদার এন্টারপ্রাইজ।
শত কোটি টাকার বেশি ব্যয়ের এ ট্রেনের বিশদ নকশা তৈরির কাজ চলছে, যা আগামী বছরের জানুয়ারির মধ্যে শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে ৩২১ কিলোমিটার রেলপথ রয়েছে, নতুন এই প্রকল্পে যা কমে আসবে ২২৭ কিলোমিটারে। এতে দূরত্ব কমবে ৯৪ কিলোমিটার, কমবে যাত্রী ভোগান্তিও।
জানা গেছে, মেগা প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ৬৬৮ দশমিক ২৪ হেক্টর জমি লাগবে। এর মধ্যে ৪৬৪ দশমিক ২ হেক্টরই অধিগ্রহণ করতে হবে।
এ বিষয়ে প্রকল্প পরিচালক মো. কামরুল আহসান জানান, প্রকল্পের ডিজাইন জানুয়ারিতে শেষ হওয়ার আশা করা হচ্ছে। এরপর ব্যয় নির্ধারণ করে অনুমোদনের জন্য একনেকে পাঠানো হবে।
রেলের পূর্বাঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী সুবক্তগীন জানান, নির্মাতা চীনা প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা ডিসেম্বরে বাংলাদেশে আসছেন। সে সময় এর নকশা চূড়ান্ত অনুমোদনের কথা রয়েছে। অনুমোদনের পরপরই কাজ শুরু হবে।
২০১৪ সালে রেলপথ মন্ত্রণালয় পরিদর্শনকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে হাইস্পিড রেলপথ নির্মাণের নির্দেশ দেন। এরপর থেকেই এটি নিয়ে কাজ শুরু করে রেলপথ মন্ত্রণালয়।
২০১৮ সালের ২৫ জুলাই মন্ত্রিপরিষদ কক্ষে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের এক আলোচনায় তৎকালীন মন্ত্রী মুজিবুল হক জানান, শুধু ঢাকা-চট্টগ্রাম নয়, আগামীতে ঢাকা-সিলেট, ঢাকা-রাজশাহী ও ঢাকা-পায়রা বন্দর পর্যন্ত বুলেট ট্রেন চালু করা হবে।