কর্ণফুলী নদী থেকে ড্রেজার দিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের ফলে কোটি কোটি টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার। এছাড়া বালু উত্তোলনের ফলে বিলীন হচ্ছে আশ-পাশের বসতবাড়ি ও ফসলি জমি।
সরেজমিনে দেখা যায়, রাউজানের নোয়াপাড়া ইউনিয়নের কচুখাইন, চৌধুরীহাট ঘাটকুল, পালোয়ানপাড়া, উভলং, বাগোয়ান ইউনিয়নের পাঁচখাইন দরগাহ বাড়ি, লাম্বুর হাট ও খেলারঘাট এলাকায় কর্ণফুলী নদী থেকে প্রতিদিন অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছে এলাকার প্রভাবশালীরা। এছাড়া রাঙ্গুনিয়ার বেতাগী, বোয়ালখালীর চরণদ্বীপ ও কধুরখীল এলাকায়ও একই চিএ দেখা যায়।
এদিকে মো. ইউনুছ নামে এক ইজারাদার ৭৬ লাখ টাকা দিয়ে কর্ণফুলী নদীর একটি বালু মহাল ইজারা নেয়। ইজারাদার ইউনুছকে রাউজান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জোনায়েদ কবির সোহাগ নোয়াপাড়া চৌধুরীহাট ঘাটকুল থেকে বাগোয়ানের লাম্বুরহাট পর্যন্ত বালুমহলের দখল বুঝিয়ে দেয়। পরে ওই ইজরাদার ইউনুছ বালু মহালের দখল বুঝে নিয়ে নোয়াপাড়া ইউনিয়নের চৌধুরীহাট ঘাটকুলসহ নোয়াপাড়া ইউনিয়নের দুই স্থান থেকে বালু উত্তোলন করছেন বলে জানান নোয়াপাড়া ইউনিয়নের মেম্বার সেকান্দর হোসেন।
অপরদিকে, নোয়াপাড়া ইউনিয়নের উভলং, বাগোয়ান ইউনিয়নের পাঁচখাইন দরগাহ বাড়ি, লাম্বুরহাট, খেলারঘাট এলাকা অবৈধভাবে বালু উত্তোলনকারীদের দখলে রয়েছে। এসব এলাকায় কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তি কর্ণফুলী নদী থেকে প্রতিদিন ড্রেজার দিয়ে হাজার হাজার ঘনফুট বালু উত্তোলন করছে। পরে এসব বালু শত শত ট্রাক ও জিপে করে রাউজান ও চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকায় বিক্রি করছে প্রভাবশালীরা।
স্থানীয়রা অভিযোগ করে জয়নিউজকে বলেন, প্রতিদিন ড্রেজার দিয়ে কর্ণফুলী নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের ফলে নদীর ভাঙন বৃদ্ধি পেয়ে বসতবাড়ি ও ফসলি জমি নদীতে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। কর্ণফুলীর নদীর ভাঙনে নোয়াপাড়া চৌধুরীহাট, উভলং, পালোয়ানপাড়া, বাগোয়ান ইউনিয়নের পাঁচখাইন দরগাহ বাড়ি, লাম্বুরহাট, পাঁচখাইন ও খেলারঘাট এলাকার শতাধিক পরিবারের বসতবাড়ি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। আরো প্রায় অর্ধ শতাধিক পরিবারের বসতবাড়ি ও ফসলি জমি হুমকির মুখে পড়েছে। কর্ণফুলী নদীর ভাঙনরোধে পানি উন্নয়ন বোর্ডের দেওয়া বালুর বস্তা ও ব্লক নদীতে মিশে যাচ্ছে।
এবিষয়ে রাউজান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জোনায়েদ কবির সোহাগ জয়নিউজকে কর্ণফুলী নদীর একটি বালু মহাল ৭৬ লাখ টাকা দিয়ে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক থেকে ইজারা দেওয়া হয়েছে। ইজারাদার কর্ণফুলী নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করার বিষয়ে কোনো অভিযোগ দেয়নি। ইজারাদার অভিযোগ দিলে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।