মূর্তি ও ভাস্কর্য নির্মাণের বিষয়ে নিজেদের পূর্বের কঠোর অবস্থান থেকে সরে এসেছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। সংগঠনটি বলছে, তারা ভাস্কর্য বা মূর্তি ভাঙার বিষয়ে কোনো মতামত প্রকাশ করেনি। কেউ এ ধরনের আচরণ করলে তা হবে সম্পূর্ণ নিয়মবহির্ভূত কাজ।
মঙ্গলবার (৮ ডিসেম্বর) রাজধানীর পুরানা পল্টনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের আমির সৈয়দ মোহাম্মদ রেজাউল করীম এ কথা বলেন।
কুষ্টিয়ায় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য ভাঙার বিষয়ে এক প্রশ্নের উত্তরে রেজাউল করীম বলেন, আমরা শুধু ভাস্কর্য বা মূর্তির ব্যাপারে ইসলামের দৃষ্টিকোণ থেকে মতামত প্রকাশ করেছি। কিন্তু মূর্তি ভাঙা বা উসকানি দেওয়ার মতো কোনো কথা বলিনি।
তিনি আরও বলেন, মূর্তি ভাঙার বিষয়ে আমি পরিষ্কারভাবে বলেছি, যদি কেউ এই ধরনের আচরণ করে থাকে, তাহলে তা সম্পূর্ণ নিয়মবহির্ভূত এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। সরকার সঠিক তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে, এটা আমরাও সমর্থন করি।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে রেজাউল করীম বলেন, উলেমায়ে কেরামের দাবির মধ্যে বঙ্গবন্ধুর প্রতি কোনো বিদ্বেষ ছিল না। আলেম সমাজ ও সাধারণ মুসলিম ধর্মপ্রাণ জনগণ মূর্তির বিষয়ে সরকারের কাছে তাদের প্রাণের আকুতি তুলে ধরতেই পারে। মানা না-মানা কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব।
কিন্তু বিষয়টিকে বিকৃতভাবে উপস্থাপন করে দেশের সর্বজন শ্রদ্ধেয় উলেমায়ে কেরামকে অপদস্থ করার হাতিয়ার হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছে। একটি সুবিধাবাদী মহল বিষয়টিকে কেন্দ্র করে দেশে চরম উসকানি ও উত্তেজনা তৈরি করছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে হেফাজত ইসলামের আমির জুনায়েদ বাবুনগরী, সংগঠনের যুগ্ম-মহাসচিব মামুনুল হক ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমির সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীমের নামে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে হওয়া মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়।
এছাড়া যারা ওলামা সমাজ ও ধর্মীয় ব্যক্তিদের গালাগাল, ব্যঙ্গ কার্টুন প্রকাশ করে অপমান করে সংঘাত ও মল্লযুদ্ধের আহ্বান করেন, তাদের বিচারের আওতায় এনে শাস্তির দাবি করা হয়।
রেজাউল করীম আরও বলেন, সরকার যদি তাদের সুবিধাভোগী উগ্র সমর্থক ও দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রকারী শক্তিগুলোর বাড়াবাড়ি এবং উসকানিমূলক কর্মকাণ্ড বন্ধ করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে ধর্মপ্রাণ মানুষ প্রতিরোধ গড়ে তুলতে বাধ্য হবে।