বন্যহাতি হত্যা বন্ধের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার অঞ্চলের প্রাণী সংরক্ষণকর্মী, গবেষকসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। তারা বলেছেন, গত এক বছরে দেশে ২২টি হাতি মারা গেছে। যার অধিকাংশই পরিকল্পিত হত্যার শিকার। তাই হাতি সংরক্ষণে পাঁচ দফা দাবি উপস্থান করেন তারা।
শনিবার (২৬ ডিসেম্বর) সকালে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব চত্বরে ‘বিপন্ন এশিয়ান হাতি রক্ষায়’ এই মানববন্ধনের আয়োজন করে ‘প্রাণ-প্রকৃতি সুরক্ষায় সম্মিলিত আন্দোলন’ নামে একটি সংগঠন। এতে প্রকৃতি ও পরিবেশ নিয়ে গণসচেতনতা তৈরিতে জড়িত আরও কয়েকটি সংগঠন সংহতি প্রকাশ করে।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, বাংলাদেশের বনবিভাগ ও আন্তর্জাতিক সংস্থা-আইইউসিএন’র সর্বশেষ জরিপের তথ্য অনুযায়ী দেশে এশিয়ান বন্যহাতি আছে ২৬৮টি। দেশের সীমান্তবর্তী পাঁচটি বনাঞ্চলে ৯৩টি পরিযায়ী হাতি বিচরণ করে। এছাড়াও সরকারের অনুমতিক্রমে দেশে ১০০টি পোষা হাতি আছে। কিন্তু দিন দিন মারা যাওয়ার ঘটনা বাড়ছে আর হাতির এই পরিসংখ্যন কমছে।
তারা বলেন, গত এক বছরে দেশে ২২টি হাতি মারা গেছে। এর মধ্যে চলতি মাসে মারা গেছে চারটি হাতি। গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অভিযোগ করা হয়েছে, হাতিগুলোকে গুলি করে, বিষ প্রয়োগ অথবা বৈদ্যুতিক শক দিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে। এভাবে হাতি হত্যা করা হলে, বাংলাদেশ থেকে শিগগিরই এই প্রাণীটি বিলুপ্ত হয়ে যাবে।
বক্তারা বন্যহাতি হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও হাতির পর্যাপ্ত নিরাপত্তা দাবি করেছেন। এছাড়া হাতির প্রাকৃতিক চলাচলের পথ, খাবার ও পানির উৎস রক্ষায় গহীন বনে প্রাকৃতিক জলাধার সংরক্ষণ, অভয়ারণ্যসহ বনে পর্যাপ্ত খাদ্য শৃঙ্খল গড়ে তোলার দাবি জানিয়েছেন।
কর্মসূচি শেষে তারা হাতি সংরক্ষণে পাঁচ দফা দাবি উপস্থান করেন। দাবিগুলো হলো— চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারে অব্যাহত বন্যহাতি হত্যা বন্ধ করার উদ্যোগ নিতে হবে এবং হাতি হত্যাকারীদের চিহ্নিত করে গ্রেফতারপূর্বক দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে; বন্যহাতির প্রাকৃতিক চলার পথ, খাবার পানির উৎস গহীন বনের প্রাকৃতিক জলাধার সংরক্ষণসহ হাতির নিরাপত্তা, অভয়ারণ্যসহ বনে পর্যাপ্ত খাদ্য শৃঙ্খল নিশ্চিত করতে হবে; বন্যপ্রাণী ও হাতির নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ ও কর্তব্য অবহেলার ঘটনা রয়েছে কি-না তা খতিয়ে দেখে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর ঘোষণা অনুসারে ব্যর্থ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে; বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন ২০১২ সংশোধন করে হাতির বাণিজ্যিক ব্যবহার স্থায়ীভাবে বন্ধ করতে হবে; বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইন ও প্রাণী কল্যাণ আইন যথাযথ কার্যকর করতে হবে।