প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘ক্ষমতার চেয়ার এবং কারাগার খুব পাশাপাশি থাকে।’ ২০০৭ সালে সেনা নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে নিজের গ্রেফতারের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, তখন সবার আগে আমাকেই গ্রেফতার করা হয়েছিল। কাজেই সেটা আমরা জানি যে, রাজনীতি করতে গেলে এটা করতেই হবে। সেজন্য আমরা কারাগারগুলোর উন্নতিও করে যাচ্ছি।
রোববার (২৭ ডিসেম্বর) গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে কেরানীগঞ্জে নবনির্মিত ‘মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগার’, একটি সরকারি বাসভবন ও একটি এলপিজি স্টেশন উদ্বোধনকালে তিনি এসব কথা বলেন।
এ সময় শেখ হাসিনা দেশের বিভিন্ন স্থানে নবনির্মিত ২০টি ফায়ার সার্ভিস স্টেশন এবং ছয় জেলা সদরে ছয়টি আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস আনুষ্ঠানিকভাবে চালু করেন।
সরকারপ্রধান বলেন, বিচারপ্রার্থীদের ন্যায়বিচার পাওয়া নিশ্চিত করতে সরকার এই করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে জেলাপর্যায়ে ভার্চুয়াল আদালতের কার্যক্রম চালু করবে। বিচারপ্রার্থীদের ভোগান্তি কমাতে ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহার করে ভার্চুয়াল আদালতে শুনানি শুরুর পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।
কারাগারকে সংশোধনাগার হিসেবে গড়ে তুলতে সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের উদ্দেশ্য হলো কারাগারে শুধু অপরাধীদের বন্দি করে রাখা নয়, সঙ্গে সঙ্গে তাদের মন-মানসিকতার পরিবর্তন করা, তাদের কিছু প্রশিক্ষণ দেওয়া, তাদের কিছু শিক্ষা দেওয়া; যাতে তারা বের হয়ে ভবিষ্যতে একই অপরাধে জড়িয়ে না পড়ে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই করোনাভাইরাসের সময়ে আদালতের কার্যক্রম পরিচালনা করা কঠিন। আমরা তাই ভার্চুয়াল আদালতের জন্য পদক্ষেপ নিয়েছি। কেরানীগঞ্জ কারাগারে কোর্টরুম প্রস্তুত করা হয়েছে। এভাবে জেলাপর্যায়ের কারাগারে কোর্টরুম স্থাপন করা হবে যাতে করে অনলাইনে মামলা চালানো যেতে পারে।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কারাগারের বেদনাদায়ক জীবনের কথা স্মরণ করে শেখ হাসিনা বলেন, তার সরকার কারাগার আধুনিকায়নের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়েছে এবং দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের মানসিকতা ও আচরণ পরিবর্তনের জন্য কারাগারগুলোকে সংশোধনাগারে পরিণত করেছে।
সংগ্রামী জীবনে বঙ্গবন্ধুর বারবার জেল খাটার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, শুধু অপরাধ করলেই যে জেলে যায় তা না। ১৯৪৮ সালে যখন আমাদের মাতৃভাষা বাংলার অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছিল, তখন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রতিবাদ করেছিলেন, সেই প্রতিবাদের কারণে কারাগারে যেতে শুরু করেন। তারপর তার জীবনের অনেকটা সময় কারাগারে কাটাতে হয়েছে অত্যন্ত মানবেতরভাবে।
বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে কারাগারে যাওয়ার অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, কারাগারের সঙ্গে সব সময় আমাদের একটা সম্পর্ক। ছোটবেলা থেকেই কারাগারে যাই, সেখানকার ভালোমন্দ অনেক কিছু জানারও সুযোগ হয়।