প্রায় এক বছর পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরে শুভ সূচনা হলো বাংলাদেশের। দ্বিতীয় সারির ওয়েস্ট ইন্ডিজকে তারা প্রথম ওয়ানডেতে হারালো সহজে। যদিও তামিম ইকবাল ছাড়া টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতা ছিল চোখে পড়ার মতো। এসব একপাশে সরিয়ে রাখলে ৬ উইকেটে পাওয়া জয় স্বস্তি দিচ্ছে বাংলাদেশকে।
সাকিব আল হাসানের ঘূর্ণিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ১২২ রানে অলআউট করে বাংলাদেশ। মাত্র ৩২.২ ওভারে সফরকারীদের ইনিংস শেষ হয়। এরপর লিটন দাশের সঙ্গে তামিমের উদ্বোধনী জুটিতে সহজ জয়ের পথ তৈরি করে স্বাগতিকরা। শেষ পর্যন্ত ৩৩.৫ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে ১২৫ রান করে বাংলাদেশ। এই জয়ে তিন ম্যাচের সিরিজে ১-০ তে এগিয়ে গেলেন তামিমরা। ম্যাচসেরা হয়েছেন সাকিব।
সহজ লক্ষ্যে তামিম ও লিটন ভালো শুরু এনে দেন। কিন্তু তারা স্কোরবোর্ডে ৫০ রান তোলার আগেই বিচ্ছিন্ন হয় উদ্বোধনী জুটি। দলীয় ৪৭ রানে আকিল হোসেনের কাছে বোল্ড হন লিটন। ৩৮ বলে দুই চারে ১৪ রান করেন তিনি।
তিন নম্বরে ব্যাট করতে নেমে নাজমুল হোসেন শান্ত ভালো করতে পারেননি। আকিলের পরের ওভারে দ্বিতীয় শিকার হয়েছেন তিনি মাত্র ১ রান করে। ২৭ বছর বয়সী বাঁহাতি স্পিনারের বলে মিড উইকেটে ওয়েস্ট ইন্ডিজ অধিনায়ক জেসন মোহাম্মদের ক্যাচ হন শান্ত।
অধিনায়ক হিসেবে প্রথম ম্যাচে ফিফটির হাতছানি ছিল তামিমের সামনে। কিন্তু ব্যর্থ হন বাঁহাতি ওপেনার। ৪৪ রান করে প্রতিপক্ষ অধিনায়ক জেসনের বলে স্টাম্পিং হয়েছেন তামিম। ৬৯ বলে ৭ চারে সাজানো ছিল তার ইনিংস।
বল হাতে অসাধারণ সাকিব বেশিক্ষণ ক্রিজে থাকতে ব্যর্থ হন। প্রতিপক্ষের স্পিনে মাঠ ছাড়েন তিনি। তার ব্যাট থেকে এসেছে মাত্র ১৯ রান, ৪৩ বল খেলেছেন। ছিল একটি বাউন্ডারি। আকিলের বলে বোল্ড হন সাকিব।
দুই সিনিয়র ব্যাটসম্যান মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদউল্লাহর অপরাজিত ২০ রানের জুটিতে জয় নিশ্চিত করে বাংলাদেশ। মুশফিক ১৯ ও মাহমুদউল্লাহ ৯ রানে অপরাজিত ছিলেন।
উইন্ডিজের পক্ষে ৩ উইকেট নিয়ে সেরা বোলার আকিল। একটি পান জেসন।
এর আগে টস জিতে ফিল্ডিং নিয়ে দুর্দান্ত শুরু করে বাংলাদেশ। মোস্তাফিজুর রহমান শুরুর ধাক্কা দেন, পরে সাকিবের ঘূর্ণিতে বেসামাল হয়ে পড়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। তার সঙ্গে অভিষিক্ত হাসান মাহমুদের পেসে নাকাল সফরকারীরা। ক্যারিবিয়ানরা গুটিয়ে যায় ১২২ রানে।
নিজের প্রথম তিন ওভারে ওপেনার সুনীল অ্যামব্রিস ও জশুয়া ডা সিলভাকে ফেরান মোস্তাফিজ। দলীয় ৫৬ রানের মধ্যে সাকিবের শিকার আন্দ্রে ম্যাকক্যার্থি, অধিনায়ক জেসন মোহাম্মদ ও এনক্রুমাহ বোনার।
পাঁচ ব্যাটসম্যানের পতনের পর প্রতিরোধ গড়েন কাইল মায়ার্স ও রোভম্যান পাওয়েল। ৫৯ রানের জুটি গড়েন তারা। ২৮ রানে রোভম্যানকে ফিরিয়ে প্রথম আন্তর্জাতিক উইকেট পান হাসান। পরের বলে রেমন রেইফারকে ফিরিয়ে প্রথম ওয়ানডেতেই হ্যাটট্রিকের সুযোগ তৈরি করেন তিনি। আলজারি জোসেফ তার বল ঠেকিয়ে হ্যাটট্রিক বঞ্চিত করেন।
অবশ্য পরের তিন ওভারে শেষ ৩ ব্যাটসম্যান বিদায় নেন। মেহেদী হাসান মিরাজ ইনিংস সেরা ব্যাটসম্যান মায়ার্সকে ৪০ রানে লিটন দাসের ক্যাচ বানান। আকিল হাসানকে বিদায় করে তৃতীয় উইকেট পান হাসান। আর সাকিবের চতুর্থ শিকার হয়ে শেষ ব্যাটসম্যান আলজারি বিদায় নেন।
নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরা সাকিব ৭.২ ওভারে ২ মেডেনসহ ৮ রান দিয়ে নেন ৪ উইকেট। অভিষেক ওয়ানডেতে হাসান নেন ৩ উইকেট। দুটি পান মোস্তাফিজ।