অস্ত্রোপচারের পরও আর কোনোদিন শতভাগ ঠিক হবে না সাকিব আল হাসানের বাম হাতের আঙুল। এই একটি লাইন এই মুহূর্তে বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য সবচেয়ে বড় অশনী সংকেত। অস্ট্রেলিয়ায় বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডা. গ্রেগ হয়ের শরণাপন্ন হতে শুক্রবার (৫ অক্টোবর) দেশ ছাড়ার আগে সাংবাদিকদের নিজেই জানিয়েছেন এ দুঃসংবাদটি।
জানুয়ারিতে ত্রিদেশীয় সিরিজে শ্রীলংকার সাথে ফাইনালে চোট পেয়েছিলেন বাঁ হাতের আঙুলের গোড়ায়। চোট নিয়ে দেশের কথা ভেবে খেলেছেন গত নয় মাস। কিন্তু আর পারা গেল না। সর্বশেষ দুবাই থেকে ফিরেছেন এশিয়া কাপ অসর্ম্পূণ রেখে। ফিরেই ভর্তি হয়েছিলেন হাসপাতালে। তার আংগুল থেকে সেখানেই দুই দফায় বের করা হয় ৫-৬ মি.লি. পুঁজ!
চলতি বছরে যে সাকিবের আর মাঠে নামার কোনো সম্ভাবনাই নেই, সেটা অনুমেয়। তবে আগামী বিপিএলেই মাঠে ফিরতে চান সাকিব । খেলতে চান ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত নিউজিল্যান্ড সফরে। কিন্তু চূড়ান্ত নয় কিছুই।
সাংবাদিকদের সাকিব বলেন, ‘তিন মাসের যে টাইমফ্রেম, তাতে এক সপ্তাহের বেশি হয়ে গেল। এখন পর্যন্ত তো আমি আশাবাদী যে প্রথম থেকেই খেলতে পারবো। এখন অস্ট্রেলিয়া যাচ্ছি, ওরা যদি বেটার কোনো ট্রিটমেন্ট দিতে পারে, তাহলে হয়তো আরও তাড়াতাড়ি সারার সম্ভাবনা থাকবে।’
সংক্রমণকেই প্রধান বাধা মনে করে তিনি বলেন ‘এখন মূল যেটা হয়েছে, ইনফেকশনটা দূর করতে হবে। ওটা চলে গেলেই আসলে বোঝা যাবে কত সময় লাগবে। আর মেইন সার্জারি যেটা করার কথা ওটা হলে ছয় থেকে আট সপ্তাহ। নরমালি ছয় সপ্তাহ লাগে। দুই সপ্তাহ বেশি ধরা হয়। যদি ছয় সপ্তাহ হয় তাহলে বিপিএলের বেশ আগেই ফিট হয়ে যাবো ইনশাআল্লাহ।’
‘যদি শুধু সার্জারিটা করা লাগতো তাহলে আমার আসলে খুব একটা খারাপ লাগতো না। যেহেতু এটা অনেক আগের ইনজুরি, আমি জানি যে আমার সার্জারি করা লাগবে। মানসিকভাবেও আমি প্রস্তুত ছিলাম। আসলে ইনফেকশন আমার সব থেকে বড় টেনশনের জায়গা। কারণ, ওটা জিরো পার্সেন্টে না আসলে কোনো সার্জন হাত দেবেন না। ওটাতে হাত দিলে পরে বোনে (হাড়) চলে যাবে, আর হাড়ে চলে গেলে পুরো হাত নষ্ট। এখন আমার মেইন পয়েন্ট হচ্ছে কিভাবে ইনফেকশনটা সারানো যায়। অস্ট্রেলিয়ায় আমি ইনফেকশনের ট্রিটমেন্টের জন্যই যাচ্ছি, আর কোনো ট্রিটমেন্টের জন্য যাচ্ছি না।’
ইনফেকশন ঠিক হলে করবেন অস্ত্রোপচার। তবে সেটা শতভাগ ঠিক হবে না জানিয়ে সাকিব বলেন, ‘ইনজুরির দিক থেকে এটাই তো আসলে সব থেকে বড়। এর আগে যে সার্জারিটা হয়েছিল ওটা খুব বেশিদিনের না। প্রথমেই যদি সঠিক ট্রিটমেন্ট হত, তাহলে অনেক কম সময়ে হয়ে যেতো। তবে ওটা আসলে অত বেশি চিন্তার ছিল না। এটা আমার কাছে মনে হয় বেশি। একটা জিনিস যে, হাতটা পুরোপুরি তো আর ওইভাবে ঠিক হবে না। কিন্তু ক্রিকেট খেলার মতো ঠিক করতে হবে আঙুলটা।’
‘ওই আঙুলটা আর কখনো শতভাগ ঠিক হবে না। কারণ, এটা নরম হাড়। এটা আর কখনো জোড়া লাগার সম্ভাবনা নাই। কিন্তু সার্জারিটা হবে এমন, ওরা এমন একটা সিচুয়েশনে এনে দেবে যেখান থেকে আমি ব্যাট-ট্যাড ভালোভাবে ধরতে পারবো, ক্রিকেট খেলাটা চালাতে পারবো।’
‘সংক্রমণটা আগে দূর করতে হবে। ওটা চলে গেলে আসলে বোঝা যাবে কত সময় লাগবে। আর আসল অস্ত্রোপচার করা হলে ছয় থেকে আট সপ্তাহ লেগে যাবে। সাধারণত ছয় সপ্তাহের মধ্যেই হয়ে যায়, দুই সপ্তাহ বেশি ধরে রাখা হয়। যদি ছয় সপ্তাহের মধ্যে হয়ে যায়, তাহলে বিপিএলের আগে ফিট হয়ে যাবো।’
জয়নিউজ/ পার্থ