নগরের পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকত এলাকায় চট্টগ্রামের ৫ম যুগ্ম মহানগর দায়রা জজের ওপর হামলার ঘটনায় করা মামলায় বিতর্কিত আওয়ামী লীগ নেতা হাজী ইকবালের ছেলে আলী আকবরকে ৫ বছরের সাজা দিয়েছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে অতিরিক্ত মহানগর হাকিম মহিউদ্দিন মুরাদের আদালত এ রায় ঘোষণা করেন। এসময় আলী আকবর আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
নগর পুলিশের সহকারী কমিশনার (প্রসিকিউশন) শাহাবুদ্দিন আহমদ বলেন, বিচারকের ওপর হামলার ঘটনায় করা মামলায় মোট দুজনকে আসামি করা হয়েছিল এবং পুলিশ দুজনকে আসামি করে চার্জশিটও দিয়েছিল। তবে আজকে শুনানি শেষে আদালত শুধু হাজী ইকবালের ছেলে আলী আকবরকে ৫ বছরের সাজা দিয়েছেন। আলী আকবরের সহযোগী অপর আসামি আলী হোসেন জিসানকে আদালত মামলা থেকে খালাস দিয়েছেন।
গত ২১ ডিসেম্বর আলী আকবর ও তার সহযোগী আলী হোসেন জিসানকে আসামি করে এ মামলার অভিযোগপত্র আদালতে দাখিল করেন পতেঙ্গা মডেল থানার সাব-ইন্সপেক্টর (এসআই) মো. মহিউদ্দিন চৌধুরী। মাত্র ১২ দিনের মধ্যে আদালতে তদন্ত কর্মকর্তা চার্জশিট দাখিল করেছিলেন।
আরও পড়ুন: রিং রোডে মোটরসাইকেল রেসিং, প্রতিবাদ করায় হামলা
উল্লেখ্য, গত ৯ ডিসেম্বর পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকতে উল্টো পথে মোটরসাইকেল চালানোর প্রতিবাদ করায় চট্টগ্রামের ৫ম যুগ্ম মহানগর দায়রা জজ জহির উদ্দিনের ওপর হামলা হয়। বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে সংঘটিত ওই ঘটনায় আলী আকবর এবং তার সহযোগী হাসান আলী জিসানকে আটক করে পুলিশে দেয় স্থানীয়রা।
এদের মধ্যে আলী আকবর যুবলীগ কর্মী মহিউদ্দিন হত্যা মামলার আসামি। তার বাবা হাজী ইকবালও একই মামলার আসামি। বন্দর থানা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হাজী ইকবালকে দলীয় শৃঙ্খলাবিরোধী কর্মকাণ্ডের জন্য ১০ বছর আগে বহিষ্কার করা হয়। তবে এলাকায় তিনি এখনো আওয়ামী লীগ নেতা পরিচয় দেন।
জানা গেছে, সাজাপ্রাপ্ত আলী আকবর ও খালাসপ্রাপ্ত তার সহযোগী আউটার রিং রোডে উল্টো পথে সেদিন মোটরসাইকেল চালিয়ে যাচ্ছিলেন। এসময় বিচারক জহির উদ্দিন ওই পথ দিয়ে গাড়ি নিয়ে অন্যত্র যাচ্ছিলেন।
মোটরসাইকেল তার গাড়ির সামনে পড়লে তিনি উল্টো পথে বেপরোয়া গাড়ি চালানোর বিষয়ে জানতে চান। এসময় তারা বিচারক ও গাড়িতে হামলা চালায়। হামলায় চট্টগ্রামের পঞ্চম যুগ্ম জেলা জজ জহির উদ্দিন হাতে আঘাত পান।
আদালত সূত্র জানায়, বিচারক জহির উদ্দিনের গাড়িচালক রাজু শেখ বাদি হয়ে তখন আলী আকবর ও আলী হোসেন জিসানের বিরুদ্ধে মামলা করেন। এ মামলায় গ্রেফতারপরবর্তী আদালতের আদেশে তাদেরকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদও করা হয়।
বিচারকের ওপর হামলা, মামলা দায়ের, তদন্ত, আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল এবং সর্বশেষ রায় দান সবকিছুই সম্পন্ন হয়েছে খুব দ্রুততার সঙ্গে। এসব কার্যক্রম সম্পন্নে সময় লেগেছে মাত্র দুই মাস।