“আবার ফুটেছে দ্যাখো কৃষ্ণচূড়া থরে থরে শহরের পথে কেমন নিবিড় হয়ে। কখনো মিছিলে কখনো বা একা হেঁটে যেতে যেতে মনে হয় ফুল নয়, ওরা শহীদের ঝলকিত রক্তের বুদ্বুদ, স্মৃতিগন্ধে ভরপুর। একুশের কৃষ্ণচূড়া আমাদের চেতনার রঙ…।”
কবিতাটিতে কৃষ্ণচূড়ার পাপড়িতে বাঙালির চেতনার রঙ দেখেছিলেন নাগরিক কবি শামসুর রাহমান। যে রঙ সবার স্মৃতিতে ভেসে ওঠে বারবার।
করোনা মহামারির মধ্যেও আজ রোববার নানা আয়োজনে দেশজুড়ে পালিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ও মহান শহীদ দিবস। বাঙালির মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর এ দিনের প্রথম প্রহর থেকেই চট্টগ্রামে গভীর শ্রদ্ধায় বীর শহিদদের স্মরণ করেছে নগরবাসী।
করোনাকালে ব্যাপক জনসমাগমের ওপর বিধিনিষেধ থাকলেও শহিদ মিনার প্রাঙ্গণে উপস্থিতির কমতি নেই । সকালে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠন শহিদ বেদিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে। সকাল ১০টায় শোভাযাত্রা সহকারে শহিদ মিনারে গিয়ে শ্রদ্ধা জানায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি )।পাশাপাশি বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এবং সংগঠনের পক্ষ থেকে শহিদ মিনারে শ্রদ্ধা জানানো হয়।
রাত ১২টা বাজার অনেক আগে থেকেই সহস্র লোকে লোকারণ্য হয়ে উঠে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণ। বাঙালির চিরাচরিত ধারার শাড়ি, ফতুয়া, কামিজ, পাঞ্জাবি পড়ে প্রভাতফেরিতে অংশ নিয়ে শহিদদের শ্রদ্ধা জানাতে আসেন বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠনের সদস্যরা।
প্রভাতফেরিতে আসে নানা রয়সের শিশুরাও। কেউ বাবা-মা’র হাত ধরে, আবার কেউবা আসে কোলে চড়ে। মাইকে তখন বাজছে অমর একুশের সেই অবিনাশী গান ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি, আমি কি ভুলিতে পারি…’।
নবপ্রজন্মের কাছে মহান ভাষা আন্দোলন ও দীর্ঘ সংগ্রামে অর্জিত স্বাধীনতার মূলমন্ত্র ছড়িয়ে দেওয়ার এ যেন এক মাহেন্দ্রক্ষণ।
জয়নিউজ/পিডি