ওয়েলিংটনে সিরিজের শেষ ম্যাচে জিতবে বাংলাদেশ। দিনের শুরুতে টাইগারদের পেসারদের তোপ দেখে তেমনটাই মনে হয়েছিল। কিন্তু রুবেল হোসেন ও তাসকিন আহমেদের উড়ন্ত বোলিংয়ের সামনে ঘুড়ে দাঁড়িয়েছিল কিউইরা। জোড়া সেঞ্চুরিতে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৬ উইকেটে ৩১৮ রানের বিশাল সংগ্রহ দাঁড় করিয়েছিল তারা।
আশা অনেকটা সেখানেই শেষ হয়ে গিয়েছিল। কারণ, জিততে হলে বাংলাদেশকে গড়তে হবে রেকর্ড। টপকাতে হবে ৩১৮ রানের পাহাড়সমান স্কোর। এর আগে ১৯৮৯ সালে ২৫৪ রান তাড়া করে জেতার রেকর্ডটি নিউজিল্যান্ডের।
তবুও আশা ছিল, হারলেও অন্তত সম্মানজনক একটা স্কোর দেখা যাবে বোর্ডে। কিন্তু নিজেরাই যেখানে উইকেট বিলিয়ে দিয়ে এসেছে সেখানে স্বাগতিক পেসারদেরই বা করার কি আছে? তবুও ধুঁকতে ধুঁকতে দেড়শ’র কোটা পার করেছে বাংলাদেশ। ৪৩ ওভারে নিশাম এসে বাংলাদেশের কফিনে শেষ পেরেক ঠুকে দিলে হোয়াইওয়াশের লজ্জা মাথায় নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয় টাইগারদের। হারল ১৬৪ রানের বিশাল ব্যাবধানে।
নিউজিল্যান্ডের দেওয়া ৩১৯ রান তাড়া করতে নেমে দলীয় ৮২ রানেই ৭ উইকেট হারানোর পর শতরানের আগেই অল আউটের শঙ্কা জেগেছিল। তবে, তাসকিনকে নিয়ে মাহমুদুল্লাহ কিছুটা প্রতিরোধ গড়ে তুললে দলের শতরান পার হয়। এরপর ৬৪ বলে ৪ চার ও ২ ছয়ে মাহমুদুল্লাহ অর্ধশতক তুলে নিলে ১৫৪ রানে থামে টাইগার ইনিংস। মাহমুদুল্লাহ ৭৩ বলে ৭৬ রানে অপরাজিত থাকেন।
সকালে তামিম-লিটন-সৌম্য-মিঠুনদের তাড়া দেখে পরের কোন ব্যাটসম্যানেরই আর মাঠে থাকতে ইচ্ছে হয়নি। শুরুর সেই খোলস থেকে পরে আর কেউই বের হতে পারেননি। মাঝে কেউ কেউ অবশ্য থিতু হতে চেষ্টা করেছেন, কিন্তু ধৈর্যের পরীক্ষায় পাস করতে পারেননি। তাদের আসা-যাওয়া দেখে মনে হয়েছে, রান তাড়া নয়, প্যাভিলিয়নেই ফিরতেই তাড়া বেশি তাদের। অথচ, জিততে হলে টাইগারদের গড়তে হতো রেকর্ড।
দলের শতরান পার হওয়ার পরই অবশ্য ৯ রান করে বিদায় নেন তাসকিন। ধুকতে থাকা বাংলাদেশের কফিনে এখন কিছুটা প্রলেপ লাগানোর চেষ্টা করছেন মাহমুদুল্লাহ ও রুবেল হোসেন।
এর আগে, স্বাধীনতা সুবর্ণজয়ন্তীতে খেলতে নেমে ওয়েলিংটনে সিরিজের শেষ ম্যাচে দুর্দান্ত শুরু করেছিল টাইগার বোলাররা। রুবেল হোসেন ও তাসকিন আহমেদের উড়ন্ত বোলিংয়ে দুরন্ত গতিতেই এগিয়ে যাচ্ছিল বাংলাদেশ। মাত্র ৫৭ রানেই তিন উইকেট হারিয়ে ফেলেছিল নিউজিল্যান্ড। তবে কথায় আছে, সকালের সূর্য সবসময় সঠিক বার্তা দেয় না। তারই দৃষ্টান্ত দেখাল কিউই ব্যাটসম্যানরা।
চতুর্থ উইকেট জুটিতে প্রতিরোধ গড়েন ডেভন কনওয়ে এবং ড্রায়েল মিচেল। তাদের ১৫৯ রানের জুটির সঙ্গে দুজনের জোড়া সেঞ্চুরিতে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৬ উইকেটে ৩১৮ রানের বিশাল সংগ্রহ দাঁড় করিয়েছে কিউইরা।
বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ ৩ উইকেট নিয়েছেন রুবেল হোসেন। এ ছাড়া একটি করে উইকেট নিয়েছেন মোস্তাফিজ, তাসকিন ও সৌম্য। দশ ওভারে ৮৭ রান খরচ করেছেন ফিজ, যা তার ক্যারিয়ারে সবচেয়ে রান খরচের রেকর্ড।
জয়নিউজ/পিডি