হাটহাজারীতে হেফাজতে ইসলাম ও পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষে চার জন নিহত হয়েছেন। শুক্রবার (২৬ মার্চ) বিকেলে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে তারা মারা যান।
তাৎক্ষণিকভাবে নিহত ২ জনের নাম পরিচয় পাওয়া গেছে। তারা হলেন— মাদ্রাসার ছাত্র মো. রবিউল ইসলাম (২৬) এবং মিরাজুল ইসলাম (২৪)।
চমেক হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) আলাউদ্দীন তালুকদার জানান, হাটহাজারীতে গুলিবিদ্ধ ৮-৯ জনকে হাসপাতালে আনা হয়েছে। এর মধ্যে ৪ জন মারা গেছেন।
তিনি বলেন, মৃত্যুবরণ করা ৪ জনের মধ্যে ৩ জন মাদ্রাসা ছাত্র এবং ১ জন পথচারী বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। আহতদের ২৬ নম্বর অর্থোপেডিক সার্জারি ওয়ার্ডে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তাদের অবস্থাও আশঙ্কাজনক।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের প্রতিবাদে শুক্রবার দুপুরে হাটহাজারী দারুল উলুম মঈনুল ইসলাম মাদ্রাসা থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের নেতাকর্মীরা।
মিছিল থেকে হঠাৎ হাটহাজারী থানা, ভূমি অফিস, ডাক বাংলোসহ বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায় দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর চালান তারা। এ সময় পুলিশের সঙ্গে হেফাজত নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ হয়। পুলিশ গুলি ছুঁড়লে বেশ কয়েকজন গুলিবিদ্ধ হন। তাদের চমেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এদিকে এ ঘটনার পর হেফাজত নেতাকর্মীরা মাদ্রাসার সামনে অবস্থান নিয়ে চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি সড়ক অবরোধ করে রেখেছেন। হাটহাজারীতে প্রচুর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়নের পাশাপাশি প্রশাসন ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে অবস্থান করছেন।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (হাটহাজারী সার্কেল) শাহাদাত হোসেন বলেন, হঠাৎ থানায় হামলা করা হয়েছে। আমরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করছি।
হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রুহুল আমিন বলেন, থানায় হামলার পর তারা ভূমি অফিসে ঢুকেও ভাঙচুর করেছে। ভূমি অফিসের ফাইল-আসবাবপত্র সব জড়ো করে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে। ভূমি অফিসের একটি গাড়িতেও আগুন ধরিয়ে দেয় তারা।
তিনি বলেন, শুধু ভূমি অফিস নয়, উপজেলার ডাক বাংলোতে ঢুকেও ব্যাপক ভাঙচুর করেছেন হামলাকারীরা। প্রশাসন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে।