বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) কর্তৃপক্ষ বলেছে, স্বাস্থ্যখাতে জরুরি অবস্থা চলছে। বিশ্ববিদ্যালয়টি মনে করে, করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে এখনই বিয়েসহ সব ধরনের সামাজিক অনুষ্ঠান, সভা-সমাবেশ ও পর্যটন বন্ধ করতে হবে।
অন্যদিকে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ১৮ দফা নির্দেশনা অপর্যাপ্ত, অস্পষ্ট এবং সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে এসব নির্দেশনা কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারবে না।
দেশে সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার (১ এপ্রিল) বিএসএমএমইউ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে। সংবাদ সম্মেলনে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, এখন স্বাস্থ্যে জরুরি অবস্থা চলছে। শুধু পার্বত্য চট্টগ্রামের তিন জেলার পর্যটন বন্ধ করলে চলবে না। কক্সবাজারসহ সারা দেশের পর্যটন বন্ধ করতে হবে। জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে প্রতিদিন যে সমাবেশ, মিছিল বা মানববন্ধন হয়; তা বন্ধ করতে হবে।
“করোনা পরিস্থিতি: বর্তমান প্রেক্ষিত ও ভবিষ্যৎ করণীয়” শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক সহ-উপাচার্য, একাধিক বিভাগের প্রধানসহ উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনের পরে উপাচার্য মো. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, সংক্রমণ দ্রুত ছড়াচ্ছে। পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে, তা অনুমানও করা যাচ্ছে না। জরুরি পরিস্থিতিতে যেমন মানুষকে কিছু কাজে বাধ্য করা হয়, সংক্রমণের বর্তমান পরিস্থিতিতে একইভাবে মানুষকে মাস্ক পরা ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার ক্ষেত্রে বাধ্য করার উদ্যোগ নিতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে সরকারের ১৮ দফা নির্দেশনার যৌক্তিকতা নিয়ে আলোচনা হয়। উপাচার্য বলেন, জনস্বাস্থ্যবিষয়ক কোনো উদ্যোগ নেওয়ার আগে সরকার যেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানী ও গবেষকদের সঙ্গে পরামর্শ করে, তা নিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে অনুরোধ করবেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগনিয়ন্ত্রণ শাখার সাবেক পরিচালক বে-নজির আহমেদ বলেন, নতুন রোগী শনাক্তের ক্ষেত্রে প্রতিদিন রেকর্ড হচ্ছে। শনাক্ত হওয়া রোগীদের একটি অংশকে অবশ্যই হাসপাতালে ভর্তি করতে হবে। ১০ থেকে ১৫ দিন পরে এ ধরনের রোগীদের জন্য শয্যা পাওয়া যাবে কি না, তা মূল্যায়ন করা দরকার।
এদের সেবার জন্য অক্সিজেন সরবরাহের ব্যবস্থাসহ অন্যান্য সরঞ্জাম লাগবে, বাড়তি জনবল লাগবে। আমলাতান্ত্রিক ব্যবস্থায় এসব করা যাবে না। জরুরি আয়োজনের মধ্যে এসব করতে হবে।
তিনি বলেন, ‘এখন সংসদ চলছে। সরকার দেশে জরুরি স্বাস্থ্যব্যবস্থা ঘোষণা করতে পারে। এতে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে সহজ হবে।’