হাটহাজারীতে এক কিশোরীকে গণধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। শুক্রবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলার ৩ নম্বর মির্জাপুর ইউনিয়নের আদর্শ গ্রাম আশ্রয়ন প্রকল্প এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
শনিবার সাড়ে ৯টার দিকে ওই কিশোরীকে স্থানীয় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনা হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন। বর্তমানে ধর্ষিতা কিশোরী চমেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
এদিকে পুলিশ ঘটনার সঙ্গে জড়িত দুইজনকে আটক করেছে। তারা হলেন ওই ইউনিয়নের খলিফাপাড়া এলাকার মৃত ফজল হক মেম্বারের ছেলে মো. হোসেন মনা (২৪) ও একই ইউনিয়নের হাশেম নগর এলাকার মৃত বদিউল আলমের ছেলে মো. মাসুম (২৯)। এছাড়া ঘটনার সঙ্গে জড়িত ওই এলাকার ফজল হক মেম্বার বাড়ির মো. নুরুছাফার ছেলে মো. আজম (২৩) নামে আরেক বখাটে যুবককে পুলিশ আটক করতে পারেনি বলে জানান ধর্ষিতার বড় ভাই।
ধর্ষিতার বড় ভাই জয়নিউজকে জানান, শুক্রবার রাতে আমার ছোট বোন প্রকৃতির ডাকে সারা দিতে রাতে ঘর থেকে বের হন। এ সময় আগে থেকে ওঁৎ পেতে থাকা তিন বখাটে যুবক তাঁর মুখে কাপড় পেচিয়ে বাড়ির অদূরে একটি পাহাড় সংলগ্ন কবরস্থানে নিয়ে যায়। তাকে মেরে ফেলার ভয় দেখিয়ে ধর্ষণ করে।
ধর্ষিতার হতদরিদ্র রিকশাচালক বাবা জানান, ঘটনার পর থেকে বখাটেদের হুমকির কারণে আমরা গৃহবন্দি হয়ে পড়ি। বখাটেদের ভয়ে মেয়েকে চিকিৎসার জন্যও ঘর থেকে বের করতে পারেনি। শনিবার সন্ধ্যার দিকে আমার মেয়ের শারীরিক অবস্থা খারাপের দিকে গেলে বখাটেদের চোখ এড়িয়ে রাত সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাই। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক অবস্থা সংকটাপন্ন হওয়ায় তাকে চমেক হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন।
এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আবু সৈয়দ মোহাম্মদ ইমতিয়াজ জয়নিউজকে বলেন, শনিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে মির্জাপুর থেকে ধর্ষণ হওয়া এক মেয়েকে হাসপাতালে আনা হয়। মেয়েটিকে আমরা চমেক হাসপাতালে প্রেরণ করি।
এদিকে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে রোববার দুপুর ৩টায় হাটহাজারী সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ আবদুল্লাহ আল মাসুম জয়নিউজকে বলেন, আমরা মেয়ের ভাইয়ের সঙ্গে কথা বলেছি এবং থানায় আসতে বলেছি। ঘটনার সঙ্গে জড়িত দুই যুবককে আটক করা হয়েছে। অপরজনকে ধরতে অভিযান চলছে। ধর্ষিতা কিশোরীর ডাক্তারি পরীক্ষা শেষ হয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
উল্লেখ্য, গত মাসের ১৪ সেপ্টেম্বর শুক্রবার সন্ধ্যায় হাটহাজারী পৌরসভার ফটিকা শাহজালাল পাড়ার একটি ভবনে স্কুলছাত্রী তুহিনকে একই ভবনের চতুর্থ তলার ভাড়াটিয়া শাহনেওয়াজ মুন্না নামের এক বখাটে তার বাসায় নিয়ে ধর্ষণের পর হত্যা করে। এরপর লাশ বস্তায় ভরে ড্রয়িং রুমের সোফার নিচে লুকিয়ে রাখে। ওই ঘটনায় নিহতের ভাই হত্যা মামলা করলে মূল আসামি মুন্নাকে আটক করা হয়। তবে এখন পর্যন্ত মামলার অপর দুই আসামিকে আটক করা যায়নি।