টানা ১১ দিন অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় হামলা চালানোর পর আন্তর্জাতিক চাপের মুখে যুদ্ধবিরতিতে রাজি ইসরায়েল। প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর নেতৃত্বে বৃহস্পতিবার (২০ মে) দেশটির মন্ত্রিসভার বৈঠকের আগে ইসরায়েল সরকার এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানিয়েছে বিবিসি।
গাজায় বিবিসির প্রতিনিধি রুশদি আবুয়ালউফ এক টুইট বার্তায় লিখেছেন, ‘যুদ্ধবিরতি আলোচনার সঙ্গে জড়িত সূত্র বিবিসিকে বলেছেন, বৈঠকের পর যুদ্ধবিরতি নিয়ে নিজেদের অবস্থান মিসরকে জানাবে ইসরায়েল। এই যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনায় সক্রিয় ভূমিকা পালন করছে মিসর।’
তবে ইসরায়েল সরকারের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে এখনো যুদ্ধবিরতির সিদ্ধান্ত নেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়নি বলে জানিয়েছেন বিবিসির ওই প্রতিনিধি।
বৃহস্পতিবার হামাসের জ্যেষ্ঠ নেতা মুসা আবু মারজুকও বলেন, ‘আমার বিশ্বাস, উভয়পক্ষকে যুদ্ধবিরতিতে যাওয়ার পক্ষে যে আন্তর্জাতিক জনমত তৈরি হয়েছে, তা সফল হবে। আশা করছি, দু-একদিনের মধ্যেই যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছাতে পারব আমরা। পারস্পরিক সমঝোতার ভিত্তিতে এই যুদ্ধবিরতি হবে।’
চাপের মুখে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে ফোনালাপে সংঘাত বন্ধ করার আহ্বান জানানোর পরপরই বৃহস্পতিবার যুদ্ধবিরতির কথা জোরালো হয়। তারপরই মন্ত্রীদের নিয়ে বৈঠকে বসেন নেতানিয়াহু। সেখান থেকেই আনে যুদ্ধবিরতির সিদ্ধান্ত।
গাজায় মানবিক সংকট চরম আকার ধারণ করায় যুদ্ধবিরতি কার্যকরে বিভিন্ন দেশ ও সংস্থার কূটনৈতিক প্রচেষ্টা জোরদার হতে থাকে। বিশ্বের পরাশক্তিগুলো উভয়পক্ষকে যুদ্ধে বিরতি দেওয়ার আহ্বান জানায়। তবে নেতানিয়াহু বিগত কয়েকদিন ধরে আরও জোরালো হামলা চালানোর নির্দেশ দিয়ে যাচ্ছিলেন।
১৯৩ সদস্যের জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ বৃহস্পতিবার এক অধিবেশনে মিলিত হয়েছে। এই অধিবেশনে ইসরায়েল-ফিলিস্তিনের নতুন করে সংঘাতের বিষয়ে আলোচনা হলেও কোনও পদক্ষেপ নিতে পারেনি সংস্থাটি।
এদিকে বৃহস্পতিবারও গাজায় ইসরায়েলি বিমান হামলা অব্যাহত রয়েছে। গাজার স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের তথ্যমতে, ইসরায়েলি হামলায় এখন পর্যন্ত অন্তত ২৩০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে প্রায় ১০০ জন নারী ও শিশু।